কালো ঠোঁট গোলাপি করার উপায় ও ৭টি প্রাকৃতিক সমাধান
কালো ঠোঁট গোলাপি করার উপায় সম্পর্কে জানব। ঠোট হল আমাদের মুখের একটি অন্যতম অংশ। গোলাপি, নরম ও মসৃণ ঠোঁট সকলেই চাই। এতে করে তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে ঠোঁট কালো ও রুক্ষ হয়ে যায়। এতে করে অনেক মানুষ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে।
এজন্য মেয়েরা বেশি ভাব কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট এর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এ প্রোডাক্ট ব্যবহার করে সাময়িক সৌন্দর্য পায়। কিন্তু তার থেকে ক্ষতির পরিমাণটা বেশি হয়। কিভাবে প্রাকৃতিক ৭টি সমাধানের মাধ্যমে কালো ঠোঁট গোলাপি করা যায় আলোচনা করব বিস্তারিত।
পেজ সূচিপত্রঃ কালো ঠোঁট গোলাপি করার উপায় ও ৭টি প্রাকৃতিক সমাধান
- কালো ঠোঁট গোলাপি করার উপায় ৭টি প্রাকৃতিক সমাধান
- ঠোঁট কালো হওয়ার কারণ
- কেন ঠোঁট গোলাপি হওয়া দরকার
- ব্যবহার করার নিয়ম
- কি ভুলের ঠোঁট আরো কালো হয়
- ঠোটের যত্নে অতিরক্ত কিছু টিপস
- শীতকালে ঠোঁটের যত্ন
- গরম কালে ঠোঁটের যত্ন
- FAQ: প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
- শেষ কথা কালো ঠোঁট গোলাপি করার উপায় ও ৭টি প্রাকৃতিক সমাধান
কালো ঠোঁট গোলাপি করার উপায় ৭টি প্রাকৃতিক সমাধান
গোলাপি ও কোমল ঠোঁট কার না চায়। কিন্তু বর্তমানে আমরা কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করে ঠোঁটের বারোটা বাজালছি। ঠোঁটকে অনেক সুন্দর করতে আমরা বিষাক্ত সব কেমিক্যাল প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকে যা আমাদের স্কিন জন্য ক্ষতিকর। ঠোঁটকে চিরস্থায়ী সুন্দর করতে তার জন্য চাই কিছুটা যত্ন আর প্রাকৃতিক সমাধান।
এই আর্টিকেলে আলোচনা করব কালো ঠোঁট গোলাপি করার উপায় ও প্রাকৃতিক ৭টি উপায়। আপনি যদি নিয়মিতভাবে মেনে চলেন তাহলে খুব সহজে ঠোটের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরে পাবেন। তবে মনে রাখবেন প্রাকৃতিক উপায় সময় নিবে কিন্তু তা নিরাপদ ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান দিবে। চলুন তাহলে আমরা ৭ টি প্রাকৃতিক উপায় সমাধান গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
লেবু ও মধুর প্রাকৃতিক মিশ্রণঃ লেবু প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে
কাজ করে যা ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করতে সহায়তা করে। অন্যদিকে মধু ঠোঁটকে
ময়েশ্চারাইজ করে এবং নরম রাখে। এই দুই উপাদান একসাথে ব্যবহার করলে ঠোঁট হয়ে
উঠবে উজ্জ্বল ও গোলাপি।
- এক চা চামচ লেবুর রসের সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন।
- মিশ্রণটি ঠোঁটে লাগে বিশ মিনিট রাখুন।
- এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
- উপকারিতাঃ এতে করে আপনার কালচে দাগ হালকা হয়। ঠোট ময়েশ্চারাইজড থাকে। প্রাকৃতিকভাবে ঠোঁট গোলাপি হয়। এতে করে আপনার ঠোঁটের সৌন্দর্য ফিরে আসবে।
গোলাপ পাপরি প্রাকৃতিক ম্যাজিকঃ গোলাপ প্রাপ্তিতে থাকা প্রাকৃতিক তেল ও
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ঠোঁটের মৃত কোষ দূর করে। ঠোঁটকে নরম ও উজ্জ্বল করে তোলে।
- কিছু গোলাপী পাপড়ি দুধে ভিজিয়ে ২ ঘন্টা রাখুন।
- এরপর পেস্ট তৈরি করে ঠোঁটে লাগান।
- বিশ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন।
- প্রতিদিন ১-২ বার ব্যবহার করুন।
- উপকারিতাঃ ঠোট প্রাকৃতিক গোলাপি আভা আসে। ঠোঁটের কালচে ভাব দূর হয়। ঠোট হয় কমল ও মসৃণ।
বিটরুটের রসঃ বিটরুটে থাকা প্রাকৃতিক রঞ্জক পদার্থ ঠোঁটকে গোলাপি রং দিতে সাহায্য করে। এটি ঠোঁটের জন্য প্রাকৃতিক টিন্ট হিসাব ও কাজ করে
আরো পড়ুনঃ
কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন
- বিটরুট গ্রেট করে তার রস বের করে দিন।
- সরাসরি ঠোঁটে লাগান এবং সারারাত রেখে দিন।
- সকালে ধুয়ে ফেলুন।
- উপকারিতাঃ ঠোঁটকে স্বাভাবিক গোলাপী টোন আসে। ঠোট নরম হয়। এবং ঠোঁটের সুস্থতা কমে যায়। আপনি এভাবে ব্যবহার করলে আপনার ঠোঁটের সৌন্দর্য ধীরে ধীরে ফিরে আসবে আর আপনার ঠোট হবে উজ্জ্বল ময়।
চিনি ও মধুর মিশ্রণঃ ঠোঁটে মৃত কোষ জমে গেলে ঠোঁট কালচে দেখায়। চিনি ও
মধু মিশিয়ে দিলে এতে করে ঠোঁটের মৃত কোষ দূর হয় এবং ঠোট হয় মসৃণ ও
উজ্জ্বল।
- এক চা চামচ চিনি ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন।
- হালকা করে ঠোঁটে দুই মিনিট স্ক্রাব করুন।
- তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।
- উপকারিতাঃ এভাবে আপনি ব্যবহার করলে আপনার ঠোঁটের উপকারিতা হবে মৃত কোষ দূর হয়। ঠোট হয় কোমল ও তুলতুলে নরম। ঠোঁটের রং উজ্জ্বল হয়।
নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল ম্যাসাজঃ কালো ঠোঁট গোলাপি করার উপায় হচ্ছে নারকেল
তেল ও অলিভ অয়েল ঠোটের জন্য চমৎকার ময়েশ্চারাইজার। নিয়মিত ম্যাসাজ করলে ঠোঁটের
রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং প্রাকৃতিক গোলাপী রং ফিরে আসে।
- রাতে ঘুমানোর আগে কয়েকফোটা নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল ঠোঁটে লাগে হালকা ম্যাসাজ করুন।
- চাইলে দিনে ও রাতে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন।
- এভাবে আপনি প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারবেন।
- উপকারিতাঃ ঠোট হয় নরম ও মসৃণ। ঠোটের প্রাকৃতিক উজ্জলতা ফিরে আসে। চিরতরে ফাটার সমস্যা কমে।
শসার রসঃ শসা ঠান্ডা প্রকৃতির এবং এটি ত্বক উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে। শসার রস নিয়মিত ঠোঁটের ব্যবহার করলে ঠোঁটের কালচে ভাব দূর হয়।
- শসা গ্রেট করে রস বের করে নিন।
- তোলার সাহায্যে ঠোঁটে লাগান এবং ২০ মিনিট রাখুন।
- তারপর ধুয়ে ফেলুন ঠান্ডা ও পরিষ্কার পানি দেয়।
- উপকারিতাঃ ঠোর ঠাণ্ডা ও সতেজ থাকে। কালো দাগ হালকা হয়। ঠোঁট উজ্জ্বল ও হাইড্রেট থাকে।
দুধ ও হলুদের প্যাকঃ উজ্জ্বল করে এবং হলুদে আছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও স্ক্রিন
টোন উন্নতি করার গুণ। এই প্যাকেট ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করে গোলাপি করতে সাহায্য
করে।
- ১ চামচ কাঁচা দুধে এক চিমটি হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট বানান।
- তারপর সেটিকে সুন্দর করে দুই ঠোঁটে লাগিয়ে দিন।
- ঠোঁটে লাগানো হয়ে গেলে ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।
- তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে ৩-৪ দিন ব্যবহার করুন।
- উপকারিতাঃ ঠোঁট উজ্জ্বল হয়। সংক্রমন রোধ করে। ঠোঁটের রং স্বাভাবিক হয়। এভাবে ঠোঁটের যত্ন নিলে আপনার ঠোট হবে সৌন্দর্যময় এবং নরম, কোমলও মসৃণ।
ঠোঁট কালো হওয়ার কারণ
আমাদের শরীরে অন্যান্য ত্বকের তুলনায় ঠোঁট অনেক বেশি সংবেদনশীল। তাই সহজে এটি
প্রতি শিকার হয় এবং তার প্রাকৃতিক রং হারিয়ে ফেলে। এতে করে ঠোঁট ধীরে ধীরে
কালচে আকার ধারণ করে। এতে করে ঠোঁট দেখতে ভালো লাগে না। এসব সমস্যা হয়
আমাদের কিছু ভুলের কারণে। তাই নিচে ঠোঁট কালো হওয়ার প্রধান কারণ গুলো তুলে ধরা
হলো।
- ঠোঁট কালো হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি।
- ধূমপান ঠোঁটে রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটায় যার ফলে ঠোঁট কালচে আকার ধারণ করে।
- চা বা কফিতে থাকা ক্যাফেইন ঠোটের প্রাকৃতিক আদ্রতা কমিয়ে দেয় এবং ঠোঁট কালচে পড়ে তোলে।
- অনেকের অভ্যাস থাকে ফুট বারবার চাটায় এবং কামড়ানোর। ঠোট কালচে হওয়ার এটা একটা প্রধান কারণ।
- কম পানি পান করা কারণে ঠোঁট কালচে হয়।
- বাজারে অনেক লিপস্টিক ও ঠোঁটের প্রসাধুনিত ক্ষতিকর কেমিক্যাল থাকে। যার কারণে ঠোঁট কালচে হয়।
- বিশেষ করে ভিটামিন বি১২ এর আয়রনের অভাবে ঠোট কালচে হয়ে যেতে পারে।
- কিছু লিপবাম বা খাবারের থাকা উপাদানের ঠোঁট এলার্জি করতে পারে যার ফলে ঠোঁট কালো ও রুক্ষ হয়ে যায়।
- স্বাভাবিক ঘুম না হলে এবং অতিরক্ত মানসিক চাপ থাকলে শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয় এর প্রভাব ঠোঁটে পড়ে এবং ঠোঁট কালচে হয়।
- মেয়েদের ক্ষেত্রে হরমোনের তারতম্য যেমন পিরিয়ড বা প্রেগনেন্সির সময় ঠোট কালচে হয়ে যেতে পারে। এটি অস্থায়ী সমস্যা হলো নজরে রাখা জরুরী।
কেন ঠোঁট গোলাপি হওয়া দরকার
ঠোঁট শুধু আমাদের মুখের একটি অংশ নয়।এটি আমাদের সৌন্দর্য, স্বাস্থ্য এবং
আত্মবিশ্বাস প্রতীক ও বটে। এক জোড়া নরম, গোলাপী ঠোঁট শুধু সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে
না বরং আমাদের স্বাস্থ্যের অবস্থা প্রকাশ করে। নিচে কেন ঠোঁট গোলাপি হওয়া দরকার
তা দেওয়া হল।
- গোলাপের ঠোঁট স্বাভাবিকভাবে আকর্ষণীয় এবং চেহারাকে প্রাণবন্ত করে তোলে। যদি ঠোঁট কালচে রুক্ষ দেখায় তাহলে পুরো চেহারা সৌন্দর্য কমে যেতে পারে। তাই গোলাপি ঠোটের দরকার।
- গোলাপী ঠোঁট মানে রক্ত চলাচল ভালো শরীরে পুষ্টি সঠিক আছে এবং ড্রিহাইড্রাসন নেই।
- গোলাপী ঠোঁট থাকলে একজন ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস ও সামাজিক যোগাযোগ ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
- কোন মেকআপ ছাড়াই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একজন মানুষের আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। তাই একজন মানুষের ঠোঁট গোলাপি হওয়া দরকার।
- অনেক সময় মানুষ অসুস্থ হয়ে গেলে প্রথমে ঠোঁটের রং হঠাৎ বদলে যায় আর সেটা দেখে বোঝা যায় স্বাস্থ্যগত সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।
- অনেকে মনে করেন শুধু নারীদের গোলাপি ঠোঁট দরকার কিন্তু বাস্তব হল ঠোঁট সৌন্দর্য স্বাস্থ্য রক্ষা প্রয়োজন নারী-পুরুষ উভয়ই।
ঠোট ব্যবহার করার নিয়ম
ঠোঁট আমাদের দেহে সবচেয়ে সম্বোধনশীল ও নমনীয় অঙ্গ গুলোর একটি। তাই এটি রুক্ষ, খাতা বা কালচে হয়ে গেলে সৌন্দর্য এবং আরাম দুটোই নষ্ট হয়ে যায়। নিচে নিয়ম অনুযায়ী ঠোঁট ব্যবহারে সঠিক পদ্ধতি ও যত্নের নিয়মাবলী গুলো দেওয়া হল।
- ঠোঁটে বারবার চাটা বা কামড়ানো থেকে বিরত থাকুন।
- সকালে ও রাতে নিয়ম করে লিপবাম লাগান।
- প্রাকৃতিক উপাদানের তৈরি স্ক্রাব ব্যবহার করুন।
- ঠোট সবসময় পরিষ্কার রাখুন। অনেক সময় খাবার বা মেকআপ করে থেকে যায় যার ঠোঁটের রং নষ্ট করে এবং ইনফেকশন ঘটায়।
- প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করুন। প্রতিদিন একটু সময় নিয়ে ঘরোয়া উপাদান ঠোঁটের যত্নে নিতে পারেন।
- সানস্ক্রিনযুক্ত লিপ বাম ব্যবহার করুন। রোদের বাইরে যাওয়ার ১৫ মিনিট আগে হোটেল সানস্ক্রিন যুক্ত লিপবাম ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এতে করে আপনার রোদে পোড়া ঠোঁট থেকে রক্ষা পাবে।
কি ভুলে ঠোঁট আরো কালো হয়
অনেকে ঠোঁটে যত্ন নিল কিছু ভুল অভ্যাস বা ব্যবহারের কারণে ঠোঁট দিন দিন আরো বেশী কালো হয়ে যায় যা তারা নিজেরাও বুঝতে পারেন না। নিচে সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করে দিচ্ছি কোন ভুলগুলো করলে ঠোঁটে আরো কালো হয়ে যায় এবং কেন হয়।
- অনেকের ঠোটবো শুখা লাগলে বারবার জিভ দিয়ে ভেজাল তবে এতে ঠোঁট আর্দ্র থাকবে আসলে বিপরীত তাই ঘটে লালা থাকায় এনজাইম ঠোঁটের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে দেয়।
- অনেকে আছে ঠোট সূক্ষ্ম হলে অনেকে নিজেই চামড়া ছেড়ে ফেলেন বা কামড়ান বারবার। ক্ষত সৃষ্টি হয় কালো দাগ পড়ে এবং রং স্থায়ীভাবে কালচে হয়ে যেতে পারে।
- অনেকে আছে ভেজা ঠোঁটে লিপিস্টিক ব্যবহার করেন এতে ঠোঁটের রং ক্ষতিকর রাসায়নিক সরাসরি প্রভাব ফেলে।
- অনেকে আবার বাজার থেকে সস্তা বা নকল লিপস্টিক থাকে ক্ষতিকর কেমিকাল যেমন সিসা,পারাবেন যা ঠোঁটের রং নষ্ট করে। এতে করে ঠোঁট কালো হয়ে যায়। এলার্জি ও ইনফেকশন হতে পারে।
- ঠোঁটে যদি হাইড্রেট না থাকে তবে সেটি ফেটে যেতে পারে কেউ কেউ লিপবাম ব্যবহার করতে ভুলে যান। এতে করে ঠোঁট রুক্ষ হয়ে পড়ে। শুকানোর ঠোঁট দাগ পরে এবং রং কালচে হয়।
- দিনভর লিপিস্টিক বা খাবারে আবছা দাগ অনেকে রাতে না মুছে ঘুমিয়ে পড়েন। এতে করে ঠোঁটের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়। সেই সাথে ময়লা জমে কালচে রং ধারণ করে ঠোঁটের।
ঠোঁটের যত্নে অতিরক্ত কিছু টিপস
আমরা সকলে চাই ভালো ঠোঁট। এজন্য আমাদের কিছু ঠোটের যত্ন নেওয়া উচিত। সে সাথে
ক্ষতিকর কেমিক্যালযুক্ত প্রোডাক্ট থেকে সর্বদা সাবধানে থাকা ভালো। এমন কিছু
ঘরোয়া পদ্ধতির মাধ্যমে ঠোঁটে যত্ন নিতে হবে যাতে করে আমাদের ঠোঁট নরম, মসৃণ ও
কোমল হয়। যেমন
- পরিমাণ মতন পানি পান করতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা জরুরী।
- রোদে বের হলে ঠোঁটের সাইন স্ক্রিনযুক্ত লিভ বাম লাগে বের হন। এতে করে আপনার ঠোঁট ভালো।
- বাজারের কেমিক্যাল যুক্ত লিপিস্টিক এড়িয়ে চলুন।
শীত কালে ঠোটের যত্ন
শীতকাল এলে শরীরে ত্বকের পাশাপাশি ছোট হয়ে পড়ে রুক্ষ শুষ্ক ও ফাটা। ঠান্ডা
অসুস্থ বাতাসে ঠোটের আদ্রতা কেড়ে নেই আর যার ফলে ঠোটে চামড়া ছাড়াতে শুরু করে
ফেটে যায় এমন অনেক সময় ব্যথা অনুভূতি হয়। তাই শীতকালে ঠোঁটে যত্ন নেয়া শুধু
সৌন্দর্যের জন্য নয় স্বাস্থ্যগতভাবে অত্যন্ত জরুরী। শীতকালে ঠোঁটের যত্ন নিতে
প্রথমে যে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে তা হল ঠোঁটে যেন সারাদিন আদ্র থাকে।
এজন্য দিনে ৩-৪ বার এবং বিশেষ করে ঘুমানোর আগে একটি ভালো মানের লিপ বাম
ব্যবহার করা প্রয়োজন। জিতের ঠোঁট ফাটার প্রধান কারণগুলো একটি হলো মৃত চামড়া
স্তর জমে যাওয়া। এজন্য সপ্তাহে অত্যন্ত ২ বার ঠোঁটে হালকা স্ক্রাব করা
প্রয়োজন।
আরো পড়ুনঃ
চেহারা বা ত্বক উজ্জ্বল করার জন্য থানকুনি পাতা
শীতকালে রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে ভ্যাসলিন বা নারিকেল তেল ব্যবহার করা
বেশি উপকারী। এতে করে ঠোঁটকে রাতভর ভালো রাখে এবং ঠান্ডা বাতাস থেকে রক্ষা
করে। যারা লিপস্টিক ব্যবহার করেন তাদের জন্য অবশ্যই রাতের ঠোঁট পরিষ্কার করে নিতে
হবে। এছাড়াও ঠোঁটে SPF যুক্ত লিপ বাম ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি।
গরম কালের ঠোঁটের যত্ন
গরমকালে ত্বকের পাশাপাশি ফোটে ও নানা সমস্যা আক্রান্ত হয়। অতিরক্ত সূর্যের তাপ, ধুলাবালি, ঘাম, ডিহাইড্রেশন এবং ইউভি রশ্মি প্রভাব ভোটে স্বাভাবিক রং নষ্ট হয়ে যায় এতে করে ঠোঁট রুক্ষ ও কালচে হয়ে পরে। অনেকে মনে করে শুধু সি টপ ফাটে কিন্তু বাস্তবে গরম কালো ঠোঁট ফাটে এবং তা আরো বেশি ক্ষতিকর হতে পারে কারণ আপনার তখন ঠোঁটে যত্ন নেয়ার প্রয়োজন মনে করি না।তাই গরম কালো ঠোঁটের জন্য প্রয়োজন বিশেষ যত্ন এবং কিছু কার্যকর অভ্যাস।
- গরম কালে ঠোঁটকে রোদ থেকে সুরক্ষা দিতে হবে।
- গরমকালের ঠোঁট পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরী।
- প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁট পরিষ্কার করে মাইল ফেসওয়াস বা তুলা দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে এবং পরবর্তী হালকা মধু লাগানো যেতে পারে।
- গরমকালের ঠোঁটকে নরম রাখার জন্য সপ্তাহে ২ বার মধু লাগানো স্ক্রাব লাগাতে হবে।
- গরমকাল মানে শুধু শরীরের যত্ন নয় ছোট এর অংশ ঠোঁটের যত নেয়ামানে নিজের সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্য দুটো রক্ষা করা।
- নিয়মিত পানি পান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং ঘরোয়া উপাদানের যত্ন নিলে গরম কালো ঠোঁট থাকবে সতেজ আকর্ষণীয় ও ফাটা হীন।
FAQ: প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্নঃ কিভাবে ঠোঁট গোলাপি করে?
উত্তরঃ ঠোঁটকে স্থায়ীভাবে গোলাপি করতে হলে প্রাকৃতিক উপায় গুলো অবলম্বন করতে
হবে। এবং নিয়মিতভাবে ব্যবহার করতে হবে প্রাকৃতিক উপাদান গুলো।
প্রশ্নঃ ভেসলিন দিলে কি ঠোঁট গোলাপি হয়?
উত্তরঃ হ্যাঁ, ভ্যাসলিন একটি প্রাচীন পণ্য যা আপনারা ঠোঁটকে নরম ও আদ্র করার জন্য
ব্যবহৃত হয়েছে এটি আপনার ঠোঁটকে সুস্থ রাখে এবং ফলস্বরূপ তাদের গোলাপি
দেখায়।
প্রশ্নঃ মেয়েদের ঠোঁট কালো হয় কেন?
উত্তরঃ মেয়েদের ঠোঁট কালো হওয়ার প্রধান কারণ হলো অতিরক্ত সূর্যের আলো, ধূমপান,
কফি/চা খাওয়া এবং ঠোটের শুষ্কতা। এছাড়া হরমোনাল পরিবর্তন ও কোম্পানি পান
করা কালচে ঠোটের জন্য।
শেষ কথা কালো ঠোঁট গোলাপি করার উপায় ও ৭টি প্রাকৃতিক সমাধান
কালো ঠোঁট গোলাপি করা উপায় যা আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো। তাই এর
যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। প্রাকৃতিক উপায়ে ঠোঁটে যত্ন নিলে তা শুধু নরম কোমল
ওর গোলাপি হয় না বরং ঠোঁট ফাটার সমস্যা কালচে ভাব কমে। তাই আমাদের সকলের উচিত
প্রাকৃতিক উপায় এর মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে ঠোঁটকে স্বাস্থ্যকর ও সুন্দর
রাখা সম্ভব।
উপরে কালো ঠোট গোলাপি করার উপায় ও ৭টি প্রাকৃতিক সমাধান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
করেছি। আপনাদের যাদের সমস্যা ঠোঁটের তারা এ পথ গুলো অবলম্বন করতে পারেন। আজ থেকে
আপনি তা পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করুন। এতে যদি আপনার উপকার হয়ে থাকে তাহলে আপনার
মতামতি কমেন্ট বক্সে জানান ধন্যবাদ।
সামিজা৪২ কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url