সকালের স্বাস্থ্যকর খাবার ও ওজন বৃদ্ধির ১১টি টিপস
সকালের স্বাস্থ্যকর খাবার ও ওজন বৃদ্ধির ১১ টি টিপস আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।কথায় আছে, সুস্থ থাকি সুন্দর জীবন গড়ি। সুস্থ জীবন ধারণের জন্য সঠিক ওজন বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত ওজন যেমন বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুকি, তেমনি স্বাভাবিকের চেয়ে ওজন কম হলে সেটা শরীরের জন্য ভালো না
আপনার শরীরের ওজন বাড়ানোর জন্য উপায় খুঁজছেন। তাহলে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারবেন আপনি সকালে কি খাবার খেলে,কোন ব্যায়াম করলে বা কি কি নিয়ম পালন করলে ওজন বাড়ে এবং শরীর সুস্থ থাকে সে সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা হলো।
পেজ সূচিপত্রঃ সকালের স্বাস্থ্যকর খাবার ও ওজন বৃদ্ধির ১১টি উপায়
- সকালের স্বাস্থ্যকর খাবার
- ওজন বৃদ্ধির জন্য সঠিক পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা
- ওজন বাড়ানোর ডায়েট চার্ট
- ওজন বাড়ানোর জন্য খাবার গুলো কি পরিমান খাবেন
- ওজন বাড়ানোর মূল লক্ষ্য
- ওজন বৃদ্ধির জন্য যেসব খাবার খাওয়া উচিত নয়
- ওজন বৃদ্ধির ব্যায়ামর নিয়ম
- ব্যায়াম করবেন কতক্ষণ ওজন বাড়াতে
- কিছু সাবধানতা ওজন বাড়নোর আগে
- ওজন কমানোর উপায় অ্যাকশন পয়েন্ট
- খাদ্যাভাসের পরিবর্তনের কিছু অতিরক্ত টিপস ওজন বৃদ্ধিতে
- শেষ কথা সকালের স্বাস্থ্যকর খাবার ও ওজন বৃদ্ধি ১১টি টিপস
সকালের স্বাস্থ্যকর খাবার
ওজন বাড়ানোর মানে শুধু অতিরিক্ত খাবার খাওয়া নয়।আপনার শরীরকে সুস্থ ও ভালো
রাখতে হলে স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। সকালে স্বাস্থ্যকর খাবার
আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক খাবার এবং জীবনধারার মাধ্যমে
সুষম ওজন ব্যবহার সম্ভব। আমাদের শরীর সুস্থ রাখার ও ওজন বৃদ্ধির জন্য
উপযুক্ত খাবারগুলো উপকারিতা নিচে তুলে ধরা হলো।
ডিমঃ সকালের খাবার বা নাস্তা দিনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হচ্ছে ডিম। আমাদের শরীরের শক্তি যোগায় এবং শরীর ও মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে।ডিমে রয়েছে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার যা প্রোটিন, ভিটামিন মিনারেল ও ভালো চর্বিত পরিপূর্ণ। ডিম প্রোটিনের দারুন উৎস।একটি মাঝারে আকারে ডিমে প্রায় ৬- ৭ গ্রাম উচ্চমানের প্রোটিন থাকে যা পেশি গঠন ও মেরামতের সহায়তা করে। ডিমে থাকার ভিটামিন বি ১২, ভিটামিন ডি, ভিটামিন এ ও আয়রন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
শিশু কিশোর ও শিক্ষার্থীদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপকারে আসে।সকালে ডিম
খাওয়া সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এটি হজমসহ দ্রুত পুষ্টি সরবরাহ করে।এটি সহজে রান্না
হয়। ডিমে থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি ও এন্টিঅক্সিডেন্ট চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো
রাখতে সাহায্য করে।যারা ওজন বাড়াতে চান তাদের জন্য এটি সহায়ক কারণএতে প্রচুর
পরিমানে প্রোটিন ও ক্যালরি দুটোই থাকে। সকালে ডিম খাওয়া একটি স্বাস্থ্যকর
অভ্যাস এতে শুধু পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে না বরং কর্ম ক্ষমতা বাড়ায় এবং রোগ
প্রতিরোধ করে। ডিমের কুসুমে ভালো কলেস্টরল থাকে যা হৃদরোগে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য
করে।
ওটস মিলঃ ওটস মিল (Oats Meal) হল এক ধরনের স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার যা ওটস (Oats) বা জয় গম থেকে তৈরি হয়। এটি "Avena sativa" নামক উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায়। এটিতে ফাইবার ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ। প্রতিদিন অটমিল খেলে হৃদরোগ ডায়াবেটিস এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে থাকে। এছাড়া এটি হজম শক্তিকে উন্নত করে এমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্য কে ভালো রাখে।
কলাঃ সকালের স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কলা।আমাদের
স্বাস্থ্যের জন্য কলা একটু গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কলাই প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি
এবং কার্বোহাইড্রেট থাকে যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। কলা একটি পুষ্টিকর ফল এবং
এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।তাই কলা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কলা
শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে, হজম শক্ত, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং ভিটামিন ও খনিজ
পদার্থ থাকে।আমাদের ত্বক চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং ওজন বাড়াতে সাহায্য
করে।যাদের ডায়াবেটিস বা কিডনির সমস্যা আছে তাদের কলা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই
ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের কিছু সহজ উপায়
দুধ ও মধুঃ আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য সকালে স্বাস্থ্যকর খাবার হচ্ছে দুধ
ও মধু মিশ্রণ। এই মিশ্রণটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী হিসাবে কাজ করে এবং
ওজন বাড়াতে সহায়তা করে। এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বক
উজ্জ্বল করে, হজম শক্তি বাড়ায় ও শক্তি যোগায়। এ মিশ্রণটি আরেকটি উপকারী গুণ
হচ্ছেমানসিক চাপ কমায়, ভালো ঘুমহয় ও শ্বাস কষ্ট প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে। দুধে
প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে এবং মধু পার্কের শক্তিশালী করতে সহায়তা করে দুধ
ও মধুর মিশ্রণে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য
করে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগ জীবাণু থেকে রক্ষা করে।
আলুঃ আলু(Potato) বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ও প্রচলিত একটি সবজি।এটি একটি কন্দ জাতীয় খাদ্য যা মাটির নিচে জন্মায় এবং(Solanum tuberosum) নামক উদ্ভিদ মূল অংশ হিসাবে পরিচিতি।আলুতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাদ্য। এটি শরীলের জন্য দ্রুত শক্তি যোগায়। ১০০ গ্রাম আলুতে প্রায় ৭৭ ক্যালোরি থাকে যার বেশিভাগ এছাড়া আসে স্টার্চ থেকে।আলুতে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬,পটাশিয়াম, ম্যাগনোসিয়াম, আয়রন, ফাইবার।আলুতে চর্বি পরিমাণ খুব কম এবং এতে কোন কোলেস্টর নেই। আলু খেলে হজম শক্তি বাড়ে, রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বাড়ে এবং হৃদরোগে ঝুঁকি কমে এছাড়াও আলু মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং দাঁত ও মাড়ি সমস্যা দূর করে।
শুকানো ফল ও বীজঃ সকলে স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে আর একটা অন্যতম খাবার হচ্ছে শুকানো ফল ও বীজ। শুকনো ফল ও বীজে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ওমগা ৩-৬ আর অনেক পুষ্টি ও খনিজ পদার্থ রয়েছে। শুকানো ফল ও বীজ যেমন- কিসমিস বাদাম খেজুর ইত্যাদিতে প্রচুর ক্যালরি এবং পুষ্টি উপাদান থাকে যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে এবং আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
অ্যাভোকাডোঃ আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অন্যতম হলো অ্যাভোকাডো ফল।আভোকাডোতে প্রচুর পরিমানে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, পটাশিয়াম এবং ফাইবার রয়েছে যা হৃদরোগে ঝুঁকি কমায়, কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করে। আরও রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই বিটা-ক্যারোটিন ইত্যাদি।অ্যাভোকাডো আপনার শরীরকে প্রয়োজনে পুষ্টি দেবে, এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে এবং আপনার শরীরে ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।
পিনাট বাটারঃ সকালে স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে আরেকটি অন্যতম খাবার হচ্ছে পিনাট বাটার। পিনাট বাটার হচ্ছে চিনা বাদামের মাখন যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার।পিনাট বাটারে রয়েছে প্রোটিন, ফ্যাট, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ। পিনার বাটারআমাদের শরীরের হৃদরোগে ঝুঁকি কমাতে, ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে, পেশি গঠনের সহায়তা করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য বা স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য পিনার বাটার খেতে পারেন।
স্মুদি ও শেকঃ সকালে স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে হচ্ছে স্মুদি ও শেক। আমাদের শরীরের ওজন বাড়ানোর জন্য প্রাকৃতিক এবং স্বাস্থ্যকর সমাধান।দুধ,বাদাম এবং প্রোটিন পাউডার মিশ্রণে একটি পুষ্টিকর খাবারতৈরি হয়। সকালের নাস্তায় আপনি এই স্মুদি রাখুন তাহলে আপনার শরীর ঘাটতি পূরণ হবে এবং ওজন বাড়াতে সহায়তা করবে।
তিলের বীজ এবং গুড়ঃ সকালে স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তিলের বীজ এবং
গুড়। তিলের বীজ এবং গুড় একসঙ্গে একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং শক্তি দায়ক
খাবার।এতে ক্যালরি বাড়ায় এবং শরীরকে শক্তি দেয়। এই দুটি উপাদান মিশিয়ে
তৈরি করুন লাড্ডু। সকালে খালি পেটে খেয়ে খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।
চিয়া সিডঃ আপনি সকালে খালি পেটে চিয়া সিড খেতে পারেন। চিয়া সিড হচ্ছে সুপার ফুড বা স্বাস্থ্যেকর খাবার। এতে রয়েছে ফাইবার, ওমেগা-৩, ফ্যাট অ্যাসিড, প্রোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভরপুর।চিয়া সিড আমাদের শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়া, এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
ওজন বৃদ্ধির জন্য সঠিক পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা
ওজন বাড়ানোর মানে এই না যে আপনার মন যা চাইবে আপনি তা খেতে পারবেন। ওজন বাড়ার জন্য আপনাকে এমন সব খাবার খেতে হবে।যা আপনার শরীরে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং ঝুঁকিপূর্ণ ময়। আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে পারে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টি কর খাবার। আপনি স্বাস্থ্যকর ও সুষম জাতীয় খাবার খান তাহলে শরীর ও স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে আপনাকে পুষ্টিকর খাবার ও প্রতিনিয়ত সঠিক পদ্ধতিতে ব্যায়াম করা অভ্যাস চালু করতে হবে। পাশাপাশি ঘুম ও বিশ্রাম গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম না হলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়।
সকালের স্বাস্থ্যকর খাবার আপনার শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। শরীর
বাড়ানো আগে আপনাকে জানতে হবে সঠিক পদ্ধতিতে ছাড়া ওজন বাড়ানো হলো।আপনার শরীরে কি
কি ক্ষতি হতে পারে।যেমন- শরীরে অতিরক্ত চর্বি জমিয়ে দিতে পারে, ডায়াবেটিস,উচ্চ
রক্তচাপ, ফ্যাট লিভার ও হৃদরোগে ঝুঁকি বাড়ায়। আপনার শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য
স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, পুষ্টিযুক্ত খাবার ও সঠিক পদ্ধতিতে ব্যায়াম করতে হবে।
এছাড়া মানসিক চাপ হতাশা ও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ওজন বাড়াতে দেয় না। একজন মানুষকে
তার মানসিক অবস্থা দিকে সচেতন থাকতে হবে।
আরো পড়ুনঃ কোন ভিটামিন খেলে শরীরের ওজন বাড়ে
আপনার শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য আপনাকে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। যেমন ধরেন একজন পাতলা মানুষ প্রতিদিন শুধু তেলেভাজা,ফাস্টফুড, সফট ড্রিংক ও চিনি যুক্ত খাবার বেশি খেতে থাকে। হয়তো তার শরীর ওজন বাড়বে, ফ্যাট হবে ও মেদ ভুড়ি বাড়বে। এতে তার শরীরের গঠন ও শক্তি আসবেনা সব সময় ক্লান্ত ও অসুস্থ থাকবে তার শরীর। আপনার শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য সঠিকভাবে খাবার খেতে হবে, খাবারগুলো যেন প্রোটিন যুক্ত হয়। আপনি যদি সঠিকভাবে পুষ্টিকর খাবার, ব্যায়াম-ঘুম ও মানসিক সুস্থতা থাকেন তাহলে আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবো এবং ওজন সঠিকভাবে বাড়বে।
ওজন বাড়ানোর ডায়েট চার্ট
সকালের খাবারের সাথে সাথে রাতে ও দুপুরে খাবারের প্রতি আমাদের বিশেষ
সতর্কতা থাকতে হবে। শরীরের ওজন বাড়ানোর জন্য আমাদের সকাল, দুপুর এবং রাতের
খাবারের একটি ডায়েট চার্ট করতে হবে। সকালে রাতে ও দুপুরে খাবার গুলোর কেন,
কিভাবে, কি পরিমান, খেতে হবে তা সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে দেওয়া হল-
সকালের খাবারঃ ওজন বাড়ানোর জন্য সকালে নাস্তায় যে খাবারগুলো যুক্ত করতে পারেন
তার মধ্যে রয়েছে দুধ, কলা, ডিম,ও খেজুর। আপনার শরীর সুস্থ রাখার জন্য বা শরীরের
ওজন বাড়ার জন্য আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেতে হবে। পানি আপনার শরীরে
ওজন বাড়াতে অনেক সহযোগিতা করে এবং শরীরকে সুস্থ রাখে।
দুপুরের খাবারঃ দুপুরে খাবারের তালিকা যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক
গুরুত্বপূর্ণ। নিচে দুপুরের খাবারের একটি চার্ট দেওয়া হল-
ডালঃ ডাল খুব পুষ্টিকর একটি খাবার। এতে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন বা আমিষ আছে।
মুরগি, গরু ও খাসির মাংস থেকে যে প্রোটিন পাওয়া যায় ডাল থেকে তেমনি প্রোটিন
পাওয়া যায়। কিন্তু গরুর খাসির মাংসের কিছু ক্ষতিকর চর্বি থাকে ডালের ক্ষেত্রে
সেই ঝুঁকি নেই।এছাড়া আইরন ,পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গনিজ সহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি
উপাদান রয়েছে। ডালে এই সবগুলো শরীর সুস্থ জন্য প্রয়োজন। পাতলা ডালের
তুলনায় ঘন ডাল খাওয়া ভালো।
আমাদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন। আমাদের পেটের ভিতরে কোটি
কোটি জীবাণু আছে। যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এগুলো রোগ প্রতিরোধ
করা ভিটামিন তৈরি থেকে শুরু করে শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে করে থাকে ।উপকারী
জীবাণুগুলোকে সুস্থ ভাবে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বিশেষ কিছু খাবারের আছে।
খাবারগুলোকে বলা হয় প্রিবায়োটিক খাবার। ডাল এক ধরনের প্রিবায়োটিক খাবার। ডাল
পেটের ভেতরে উপকারী জীবাণু গুলোকে সুস্থ রাখে। তাই ওজন বাড়ানোর ডায়েট চার্টে ডাল
রাখা ভালো
টক দইঃ দুপুরের খাবার শেষে এক বাটি টক দই খেতে পারেন। টক দই দুধ দিয়ে বানানো তাই
এতে দুধের পুষ্টি গুলো যোগ হয়ে যায়। শুধু তাই নয় টক দই উপকারী জীবাণু থাকে। টক
দই খাওয়ার মাধ্যমে পেটের ভিতরে উপকারী জীবাণুগুলো নতুন নতুন আরো অনেকগুলো উপকারী
জীবাণু যোগ করতে পারে। এই উপকারী জীবাণুগুলো আপনার শরীরের ক্ষতি করে জীবাণু
থেকে আপনাকে সুরক্ষা দিবে।
তবে মিষ্টি দই না খাওয়াই ভালো। মিষ্টি দইতে উপকারী জীবাণু আছে কিন্তু এতে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে চিনি যোগ করা হয়। চিনি অস্বাস্থ্যকর তেল বা চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। এগুলো বেশি খেলে শরীরের মাংসপেশি না বেড়ে চর্বি বেড়ে যায়।এভাবে ওজন বাড়লে তা স্বাস্থ্যকর হবে না বরণ উল্টা বিভিন্ন রোগের শরীরে ঝুকি বাড়বে। তবে মিষ্টি জাতীয় খাবার কখনো খাওয়া ঠিক না তবে মাঝে মাঝে খাওয়া যেতে পারে তবে নিয়মিত না খাওয়াই ভালো।
মুরগির মাংসঃ দুপুরের খাবারে মুরগির মাংস রাখা যায়। সাধারণত যদি ১
টুকরো মুরগির মাংস খাবার অভ্যাস থাকে। তাহলে আপনি ভাতের সাথে ২ টুকরো করে
মুরগির মাংস খেতে পারেন।অনেকে গরুর খাসির মাংস বেশি করে খাওয়ার পরামর্শ দিতে
পারে তবে অবশ্য এই ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করবেন। গরুর খাসির মাংস খেয়ে ওজন
বাড়ানোর সম্ভব হল এগুলো অস্বাস্থ্যকর চর্বির রয়েছে এবং নানা ধরনের ক্ষতিকর
জীবাণু রয়েছে। যা আপনার শরীরের জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। গরু খাসির মাংস থেকে
যে প্রোটিনাআসতো মুরগির মাংস ডিম ও ডাল থেকে আপনি তা অনায়াসে পেয়ে যাবেন।
রাতের খাবারঃ দুপুরের জন্য যেসব খাবারগুলো উল্লেখ করা হয়েছে ওজন বৃদ্ধির জন্য।
সেগুলো রাতে খাবার ও খেতে পারেন।দুপুরের ব্যস্ততা বা বাসার বাইরে থাকার কারণে যদি
বাদ পড়ে যায় তাহলে রাতে খাবারে আপনি যোগ করে নিতে পারেন।
হালকা নাস্তা বা স্ন্যাকসঃ ওজন বাড়াতে আপনি বিকেলে হালকা নাস্তা রাখতে পারেন।আপনি নাস্তাতে কি কি খাবেন তা নিচে দেওয়া হল।
বাদামঃ ওজন বাড়ানোর জন্য একটি খুব ভালো নাস্তা হচ্ছে বাদাম। চিনা বাদাম,
কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তা বাদাম আপনার সুবিধামতো যেকোনো ধরনের বাদাম খাওয়া
যাবে। বাদামের স্বাস্থ্যকর ফ্যাট আছে এবং অনেক ধরনের মিনারেল, ভিটামিন,ফাইবার আছে
।এটাও একটি প্রিবায়োটিক খাবার। আমাদের শরীরের পেটের ভিতরে থাকা উপকারের জীবনে
সুস্থ রাখে তাই ওজন বাড়ানোর জন্য নাস্তা কয়েকটা বাদাম খেয়ে নিতে পারেন
ওজন বৃদ্ধিতে রাত দুপুরে খাবারের পর বাদাম খাওয়া যায়। আপনাদের স্বাস্থ্য
সুরক্ষার জন্য এটা মনে রাখবেন বাদামে কোন উপাদান মিশানো না থাকেযেমন চিনি
লবণ ইত্যাদি। যারা দেশের বাইরে থাকেন তারা বিষয়টা খেয়াল রাখবেন কারণ
বাজারে অনেক ধরনের চিনি লবণ মেশানো বাদাম প্যাকেট কিনতে পাওয়া যায়।
কিসমিসঃ নাস্তার জন্য বাদামের সাথে কিসমিস মিশিয়ে খেতে পারেন। কিসমিস যেহেতু
আঙ্গুর ফল শুকিয়ে বানানো হয় অল্প পরিমাণ কিসমিস অনেক ভিটামিন আর মিনারেল থাকে।
তবে কিসমিস খেলে কারো কারো দাঁতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেটা ঠেকাতে শুধু
কিসমিস না খেয়ে বাদাম এবং টক দইয়ের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। কিসমিস খাবারের
যোগ করলে করতে পারলে ওজন বাড়াতে সেটা অনেক সহায়তা করবে।
বিভিন্ন ধরনের বীজঃ ওজন বাড়ানোর আরেকটি উপায় হল খাবারের সাথে বিভিন্ন ধরনের
বীজ যুক্ত করা । যেমন মিষ্টি কুমড়ার বীজ, সূর্যমুখীর বীজ, টিসির বীজ,
তিলের বীজ এগুলো ভাত বা তরকারির উপর হালকা করে ছিটিয়ে খেতে পারেন।একেকটা বীজ এক
ধরনের পুষ্টি বহন করে। বিভিন্ন ধরনের বীজ আপনার শরীরকে সুস্থ রাখে ও ওজন বাড়তে
অনেক সহায়তা করে।
ওজন বৃদ্ধির জন্য খাবারগুলো কি পরিমাণ খাবেন
আপনি প্রতিদিন যা খান তাই খাবেন। ওপরে উল্লেখ করা খাবারগুলো তার সাথে শুধু যোগ
করবেন। নিয়মিত খাবার বাদ দিয়ে শুধু এসব খাবার খেলে ওজন বাড়বে তা কিন্তু না।
ওপরে অনেকগুলো খাবারে কথা বলা হয়েছে এর মধ্যে সবার সবকিছু ভালো নাও লাগতে পারে।
আবার বাড়িতে বা হাতের কাছে সবসময় এগুলো খাবার না থাকতে পারে। তাই নিচে কোন
খাবার কতটুকু পরিমাণ কত ক্যালরি থাকে তা উল্লেখ করা হলো-
সকালের নাস্তায় যা যোগ করতে পারেন
- ১কাপ দুধ(২৪৪গ্রাম)-১৪৬ ক্যালোরি
- ১টা মাঝারি কলা(১১৮ গ্রাম)-১০৫ ক্যালোরি
- ১টা ডিম (৫০ গ্রাম)-৭১.৫ক্যালোরি
- ১০০ গ্রাম খেজুর-২৭৭ক্যালোরি
দুপুরের খাবারে যা যোগ করতে পারেন
- ১ কাপ রান্না করা ডাল (১৯৮ গ্রাম)-২৩০ ক্যালোরি
- ১ কাপ টক দই (২৪৫ গ্রাম)-১৪৯ ক্যালোরি
- ১০০ গ্রাম মুরগির মাংস-১৭৯ ক্যালোরি
ওজন বাড়ানোর জন্য আরো কিছু হালকা খাবার যোগ করতে পারেন
বাদাম ও কিসমিস
- ১ আউন্স কাজুবাদাম (২৮.৩৫ গ্রাম)-১৫৭ ক্যালোরি
- ১ আউন্স কাঠবাদাম (২৮.৩৫)-১৪৬ ক্যালোরি
- ১ আউন্স পেস্তাবাদাম (২৮.৩৫)-১৫৯ ক্যালোরি
- ১ আউন্স চিনাবাদাম (২৮.৩৫)-১৬১ ক্যালোরি
- ১ আউন্স কিসমিস (২৮.৩৫)-৮৪.৮ক্যালোরি
বীজ
- ১ আউন্স মিষ্টিকুমড়ার বিচি (২৮.৩৫গ্রাম)- ১৬৩ ক্যালোরি
- ১ আউন্স সূর্যমুখীর বিচি (২৮.৩৫ গ্রাম)- ১৭৫ ক্যালোরি
- ১ আউন্স তিলের বিচি (২৮.৩৫ গ্রাম)-১৬১ ক্যালোরি
আপনি নিজের পছন্দ অনুযায়ী খাবার খেতে পারবেন।শুধু দৈনিক যেন অতিরিক্ত ৩০০ থেকে
৫০০ ক্যালোরি খাওয়া হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।এর চেয়ে বেশি ক্যালোরি খাবার খেলে
দ্রুত ওজন বাড়বে। তবে শরীর সুস্থ রাখার জন্য ধীর গতিতে ওজন বাড়ানো উত্তম। দ্রুত
ওজন বাড়লে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমা সম্ভব না থাকে।
ওজন বাড়ানোর মূল লক্ষ্য
আমাদের শরীরের ওজন বাড়ানোর মূল লক্ষ হচ্ছে শরীরের পেশী ও স্বাস্থ্যকর শরীর তৈরি
করা। শুধু চর্বি জমানো নয় বরং এমন খাবার গ্রহণ করতে হবে যা শরীরের শক্তি
যোগাবে শক্তি এবং রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াবে।যেমন-
- অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ
- পুষ্টিকর খাবার
- সুষম খাদ্য তালিকা
- নিয়মিত শরীর চর্চা
- পুষ্টি শোষণ
- হরমোনের ভারসাম্য
ওজন বৃদ্ধির জন্য যেসব খাবার খাওয়া উচিত নয়
সাগুঃ সাগু প্রায় পুরোটাই শর্করা। শুধুমাত্র এক ধরনের পুষ্টি উপাদান বেশি পরিমাণ থাকে। ১০০ গ্রাম সাগুদানায় প্রোটিন আর ফ্যাটের পরিমাণ ১ গ্রাম এর চেয়েও কম। আর ভিটামিন ও মিনারেল পরিমাণ নগণ্য। তাই এটি খুব পুষ্টিকর একটা খাবার নয়।সাগুদানা নিয়মত খেলে ওজন বাড়তে পারে তবে পুষ্টির ঘাটতি থেকে যাওয়া সম্ভব বেশি।
কাস্টারড-পুডিংঃ এগুলো বানাতে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে চিনি দেওয়া থাকে। অতিরিক্ত চিনি বা তেল চর্বিযুক্ত খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর যেটা ওজন বাড়ানোর সময় এড়িয়ে চলা ভালো না হলে শরীরে চর্বি জমে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে।
আরো পড়ুনঃ চিয়া সিড খেলে শরীরের যে পরিবর্তনগুলো হয়
ওজন বৃদ্ধির ব্যায়ামের নিয়ম
ওজন বাড়াতে খুব ভালো ব্যায়াম হচ্ছে স্ট্রেংথ ট্রেনিং। এ ধরনের ব্যায়াম শরীরের
মাংসপেশি বাড়াতে সাহায্য করে। তবে এর জন্য আপনাকে জিমে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।ঘরে
বসে কোন যন্ত্র বা ব্যায়ামের উপকরণ সাহায্য ছাড়াই ব্যায়াম শুরু করতে
পারেন।ইউটিউব বা গুগলে নিচের শব্দ গুলো লিখে সার্চ করলে ব্যায়ামের নিয়ম সহকারে
ভিডিও পেয়ে যাবেন। আপনি ঘরে বসে ব্যায়াম করতে পারবেন শব্দগুলো হল-
- Plank
- Squat
- Pushup
- Pullup
এসব ব্যায়ামগুলো যদি আপনি প্রতিনিয়ত করেন তাহলে আপনার শরীরে থাকবে
স্বাস্থ্যপূর্ণ ও চর্বি জমা সম্ভাবনা থাকবে না।
ব্যায়াম করবেন কতক্ষন ওজন বাড়াতে
আপনার শরীরের স্বাস্থ্য বৃদ্ধির জন্য সকালের স্বাস্থ্যকর খাবার ও ওজন বৃদ্ধির ১১ টি টিপস।ওজন বাড়ানোর ডায়েটের পাশাপাশি অবশ্যই
প্রতিনিয়ত ওজন বৃদ্ধির ব্যায়াম করতে হবে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের সুস্থ
থাকার জন্য সপ্তাহে অত্যন্ত ২.৩০ ঘণ্টা ব্যায়াম করা প্রয়োজন। ব্যায়াম করা
অভ্যাস একদম না থাকলে অল্প অল্প করে শুরু করবেন তবে শারীরিক সুস্থতার জন্য
ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কিছু সাবধানতা ওজন বাড়ানোর আগে
১. প্রথমে আপনাকে বুঝতে হবে আপনার শরীরে ওজন বৃদ্ধির দরকার আছে কিনা। আপনার শরীরে স্বাভাবিক চেয়ে যদি কম থাকে তাহলে আপনাকে ওজন স্বাভাবিকের নিয়ে আসতে হবে। স্বাভাবিকের চেয়ে শরীরের অল্প ওজন নানাবিধি স্বাস্থ্যের সমস্যা হতে পারে যেমন- রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা দুর্বল হওয়া, অপুষ্টিতে ভোগা, সারাক্ষণ ক্লান্ত লাগা,মেয়েদের মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
২. কিছু রোগের কারণ ওজন কমে হতে পারে।যেমন- থাইরয়েডের সমস্যা ও ডায়াবেটিস আবার মানসিক রোগের কারণে ওজন কমে যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে যথাযথ চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। তাই ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করার আগে প্রথমে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডাক্তার শারীরিক ওমানসিক অসুস্থতার কারণে আপনার ওজন কমে কিনা সেটা তিনি বলে দিতে পারবেন।
৩. যদি আপনার মনে হয় আপনি ঠিক মতন খেতে পারছেন না তাহলে আপনার কোন কিছু সমস্যা হয়েছে। আগে যে পরিমাণ খাবার খেতে সে তুলনায় এখন অনেক খাবার খেতে পারেন না। তাহলে দ্রুত আপনি একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এগুলো গুরুতর কোন রোগের লক্ষণ কিনা সেটা তিনি যাচাই করবেন। এ ধরনের লক্ষণ এর মধ্যে রয়েছে-
- খাবারে অরুচি হওয়া
- মুখে ঘা হওয়া
- খাবার খাওয়ার পরে পেটে অস্বস্তি হওয়া
- পেট ফাঁপা লাগা
- ব্যথা করা
- খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া
- খাবার গলায় আটকে থাকে এমন মনে হওয়া
- অল্প খাবার খেয়ে পেট ভরে গেছে এমন মনে হওয়া
- খুব ক্লান্ত লাগা
- কিছুদিন পর পর অসুস্থ হয়ে যাওয়া
যদি আপনার মনে হয় কোন চেষ্টায় ছাড়া ওজন কমে যাচ্ছে, তাহলে তাড়াতাড়ি বা যত
দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এটা ক্যান্সারে একটু অন্যতম লক্ষণ তাই এ
ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্কতা থাকতে হবে।
৪. অনেকেই আছে যারা শরীরের ওজন বাড়ার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই নিজে নিজে ওষুধ খেয়ে থাকে। কেউ কেউ আবার টাকার বিনিময়ে মোটা হওয়ার ওষুধ বিক্রির চেষ্টা করে থাকে। এগুলোকে আপনি এড়িয়ে চলেন। সম্ভব হলে একজন রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ানের সাথে পরামর্শ করে নিবেন।
৫. অনেক সময় খাবারের পরিমাণ বা খাবারের পরিবর্তন আনলে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন ফলমূল, ডাল, বাদাম ও শাকসবজি এগুলো খাওয়ার পরিমাণ বাড়ানোর সাথে সাথে পানি এবং পানি জাতীয় খাবার খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। এরপর যেসব খাবার খাওয়ার পর গ্যাসের সমস্যা বেশি দেখা দেয়, খাবার না খাওয়াই ভালো।
ওজন কমানোর উপায় অ্যাকশন পয়েন্ট
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে সকালে ওজন মাপার পর সেই দিনের
জন্য একটি নির্দিষ্ট অ্যাকশন পয়েন্ট ঠিক করে নিলে দ্রুত ওজন কমে।কি কি অ্যাকশন
পয়েন্ট প্রথমে চিন্তা করে নেবেন আজ সারাদিনে কি কি করবেন তার একটি তালিকা তৈরি
করবেন। যেমন খাবারের তালিকা ব্যায়ামের তালিকা আপনি সারাদিন কি করবেন তার একটা তালিকা। খাবারের একটা সুন্দর করে তালিকা তৈরি করবেন আপনার শরীর সুস্থ রাখার জন্য। আপনাকে নিয়ম করে খেতে হবে, চলতে হবে আপনাকে সময় মতন সময়ের কাজ করতে হবে তাহলে আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও দীর্ঘস্থায়ী ওজন বাড়তে আপনাকে সাহায্য করবে।
খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনে কিছু অতিরক্ত টিপ ওজন বৃদ্ধিতে
খাদ্যাভাসের পরিবর্তনের বিশেষ করে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহন ওজন বৃদ্ধির একটি প্রধান কারণ। ওজন বৃদ্ধির জন্য খাদ্যাভ্যাসের কিছু পরিবর্তনের টিপস নিচে দেওয়া হল
- সকালে প্রতিদিন ১ ঘন্টা করে হাঁটবোআজকে কোন ভাজাপোড়া খাব না
- সকালে অস্বাস্থ্যকর নাস্তার বদলে ছয় ৮-১০টা বাদাম খাব
- একটা লিস্ট তৈরি করব আজ সারাদিন কখন কি কি খাব
- তিন বেলার বেশি খাবার খাব না
- রাতে যা খাবার খাব ৮টার মধ্যে খাব। ৮টার পর কিছু খাব না।
- বিছানায় বসে খাবার খাব না যা খাব টেবিলে বসে খাব।
- পানি এবং চা- কফি খাবো চিনি ছাড়া। সারাদিনে আর কিছু খাব না।
- আজকে প্রতি বেলার খাবারের আগে আধা লিটার করে পানি খাব।
- আজকে সকালের নাস্তায় ফল বা সব
- সকালে প্রতিদিন ব্যায়াম করবো।
- দৈনন্দিন জীবনের অংশ হিসেবে আরো সচল ও সাবধানতা অবলম্বন করব।
- আজকে সাঁতার কাটবো, যতক্ষণ পারি।
- বাসে, রিসকাই, গাড়িতে না চড়ে হেঁটে বা সাইকেলে চালিয়ে যাওয়া আসা করব।
- শরীরের বেশি ক্যালোরি খরচ করব।
- আজকের জিমে গিয়ে স্ট্রেংথ ট্রেনিং এবং কারডিও এক্সারসাইজ করব।
শেষ কথা সকালে স্বাস্থ্যকর খাবার ও ওজন বৃদ্ধি ১১টি টিপস
সকালের স্বাস্থ্যকর খাবার শুধু শরীরকে সক্রিয় রাখে না বরং ওজন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমাদের শরীরের জন্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় পুষ্টিকর
নাস্তা গ্রহণ করলে শরীরের হজম শক্তি সক্রিয় থাকে এবং শরীরের পেশি তৈরি জন্য
প্রয়োজনীয় শক্তি মিলে।তবে ওজন বাড়াতে গিয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়া
উচিত নয়। সঠিক খাদ্য পর্যাপ্ত ঘুম এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ধৈর্য ধরে ওজন
বাড়ানোর স্বাস্থ্যকর ফলাফল ও প্রাকৃতিক উপায়।
এ আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হন তাহলে আপনার মতামত কমেন্ট বক্সে এসে
জানান। আর আপনার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের কাছে শেয়ার করেন। স্বাস্থ্য
সচেতনের সম্পর্কে জানতে পারবে। নতুন নতুন স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য পেতে আমাদের
সাইটে এসে ভিজিট করুন, ধন্যবাদ।
সামিজা৪২ কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url