নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা
নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা জানবো। কলা একটি প্রচলিত ফল। কলা আমরা সকলেই খেয়ে থাকে। কলা খেলে আমার আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্যের যে উপকার গুলো হয় সে বিষয়ে আমরা অতটা জানিনা। কলা মানবদেহের জন্য কতটা উপকারী।
কলাতে রয়েছে প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এজন্য কলা কে বলা হয় প্রাথমিক চিকিৎসা। আমরা এই আর্টিকেলের মধ্যে জানব কলা খেলে শরীরের কি কি উপকার হয় এবং কলাতে কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পেজ সূচিপত্রঃ নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা
- নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা
- কলা খাওয়ার অপকারিতা
- কলার পুষ্টিগুণ ও খাদ্য উপাদান
- কোন সময়ও কতটুকু কলা খাওয়া উচিত
- মোট কলা খাওয়ার পরিমাণ
- কারা বিরত থাকবে কলা খাওয়া থেকে
- কোন কলা সবচেয়ে উপকারী স্বাস্থ্যের জন্য
- স্বাস্থ্যের জন্য কলা খাওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ
- FAQ: নিয়মিত কলা খাওয়ার সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর
- উপসংহার নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা
নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা
নিয়মিত কলা খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার বয়ে আনে. এটি শুধু একটু
সুস্বাদু ফল নয়। বরং একটি পুষ্টিগুণ ভরপুর খাদ্য বটে। কলা আমাদের দৈনন্দিন
খাদ্যের তালিকায় বহুল ব্যবহৃত একটি ফল। অনেকে কলা কে সস্তা ফল বলে গুরুত্ব দেয়
না কিন্তু আপনি কি জানেন প্রতিদিন কলা খেলে শরীরের ভিতরে কি পরিবর্তন আসে। চলুন
তাহলে নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো বিস্তারিতভাবে
আলোচনা করি।
হজম শক্তি বাড়াতে কলার ভূমিকাঃ কলা একটি প্রাকৃতিক এন্টাসিড হিসেবে কাজ করে। কলায় থাকা ডায়েটারি ফাইবার ও প্রোবায়োটিক উপাদান হজমে সহায়তা করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সাহায্য করে। কাঁচা কলা এবং কম পাকা কলা হজমের জন্য অত্যন্ত উপকারী, যার ফলে পাচনতন্ত্র সুস্থ থাকে।
হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কলাঃ কলার পটাশিয়াম উপাদানের রক্তের
সোডিয়ামের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ রাখে। হলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। এটি
হৃৎপিণ্ড সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি
কমায়।
মানসিক চাপ ও অবসাদ দূর করেঃ কোলাহলপূর্ণ জীবনের মানসিক চাপ বেড়েই চলছে।
কলায় থাকা ট্রিপটোফ্যান নামক উপাদান শরীরে সেরোটোনিন উৎপন্ন
সাহায্য করে। যা মস্তিকের আনন্দ ও প্রশান্তির অনুভূতি জাগায়। তাই বিষন্নতা বা
হতাশা কাটাতে কলা হতে পারে একটা চমৎকার প্রাকৃতিক সমাধান।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়কঃ অনেকে ভাবেন কলা খেলে মোটা হওয়া যায়। কিন্তু এটা
পুরোপুরি সত্য নয়। গলায় থাকা ফাইবার ও প্রাকৃতিক চিনি দেহে তাড়াতাড়ি শক্তি
যোগায় এবং দীর্ঘসময় খোদা লাগাতে দেয় না। তাই যারা ওজন কমাতে চান তারা
স্ন্যাকস হিসাবে কলা খেতে পারেন। এটি অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ কমায়
শরীরের।
রক্তশূন্যতা দূর করে কলাঃ কলা রয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আইরন ও ভিটামিন বি৬। যা
রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন
বা গর্ববতী নারী তাদের জন্য কলা অত্যন্ত উপকারী।
আরো পড়ুনঃ
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা-কালোজিরা খাওয়া নিয়ম হাদিস
ত্বক ও চুলের যত্নের সহায়ক কলাঃ কলায় রয়েছে ভিটামিন সি,
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রাকৃতিক তেল যা ত্বককে উজ্জ্বল ও কোমল করে। কলার
মাস্ক ব্যবহার করলে শুষ্ক ত্বক ময়েশ্চারাইজার হয় এবং বলিরেখা কমে। চুলে
কলার প্যাক ব্যবহার করলে তা হয় নরম ও উজ্জ্বল। এতে চুল ভালো থাকে।
নিয়মিত কলা খেলে হাড় শক্ত করেঃ কলায় থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম হাড়ের
গঠন মজবুত করে এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমায়। শিশু থেকে বয়স্ক সবার জন্য
হাড় গঠনে রক্ষায় কলা খাওয়া জরুরী।
গর্ভবতী নারীর জন্য কলা খাওয়া জরুরিঃ গর্ভ অবস্থায় পেট ফাঁপা, কোষটিকাঠিন্য,
বমি ভাব ইত্যাদির সাধারণ সংস্থা থাকে। কলা এগুলোর প্রতিকার করতে সহায়ক। এ ছাড়া
এতে থাকা ফোলেট শিশু সঠিক গঠন ও স্নায়ু বিকাশে সহায়তা করে।
কলা খেলোয়ার ও ক্রীড়াবিদের জন্য শক্তির উৎসঃ দীর্ঘ সময় খেলাধুলার পর ক্লান্ত
শরীরের দ্রুত শক্তি ফিরে পেতে কলা অতুলনীয়। প্রাকৃতিক শর্করা, গ্লুকোজ ও
পটাশিয়াম খেলোয়ারদের দ্রুত এনার্জি দেই এবং পেশির কর্মক্ষমতা ঠিক রাখে।
আলসার ও গ্যাস্ট্রিক প্রতিরোধ করে কলাঃ কলা অন্ত্রে প্রাকৃতিক
প্রোটেকটিভ লেয়ার এর মত কাজ করে। যারা গ্যাস্ট্রিক বা আলসারে ভুগছেন তাদের
জন্য কলা দারুন উপকারি ফল। কলা মানুষের শরীরের পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড
উৎপাদন কমায়। এতে শরীর ও স্বাস্থ্য দুটোই ভালো থাকে কলা খেলে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযোগী কলাঃ যদিও কলাতে প্রাকৃতিক চিনি রয়েছে তবুও
এটি লো গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স ফল। পরিমিতি ভাবে খাওয়া হলে এটি ডায়াবেটিস
রোগীদের জন্য নিরাপদ। বিশেষ করে কম ফাঁকা কলা রক্তে শর্করা মাত্রা হঠাৎ করে
বাড়ায় না।
প্রাকৃতিক মুড বুস্টারঃ আপনার মন খারাপ তাহলে আপনি একটা কলা খেয়ে দেখুন।
কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন বি৬ ও ট্রিপটোফ্যান মস্তিষ্কে ডোপামিন ও সেরোটোনিন
নিঃসরণে সাহায্য করে। যা আপনাকে আনন্দ দেয়।
হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণঃ উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার একটি সাধারণ
সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন একটা কলা খেলে শক্তি সোডিয়ামের প্রভাব কমে
এবং পটাশিয়াম সোডিয়াম এর ভারসাম্য বজায় রাখে।
শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে কলাঃ কলা শিশুদের জন্য অত্যন্ত
পুষ্টিকর একটি ফল। কলায় থাকা ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও প্রোটিন ও
মানসিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে করে তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠা ক্ষমতা রাখে। অনেক
পেডিয়াট্রিক ডাক্তার শিশুকে প্রথম সলিড ডাক্তার খাবার হিসেবে কলা
খাওয়াতে বলেন।
কলা খাওয়ার অপকারিতা
আমরা এতক্ষণ জানলাম নিয়মিত কলা খেলে আমাদের শরীরে কি কি উপকার আসে।
সবকিছুই যেমন উপকার আছে তেমন অতিরক্ত কোন কিছু করলে অপকারও আছে। যদিও কলা
একটি পুষ্টিকর ও উপকারী ফল তবে অতিরিক্ত খাওয়া বা নির্দিষ্ট শারীরিক অবস্থায় এটি
কিছু সমস্যা তৈরি করতে পারে। অনেকের ধারণা করেন কলা সম্পন্ন নিরাপদফল। কিন্তু
কিছু সতর্কতা না মানলে কলা খাওয়া হতে পারে হজম সমস্যা কিডনি জটিলতা বা রক্তের
শর্করা বৃদ্ধির আশঙ্কা। তাই অতিরিক্ত কলা খেলে আমাদের শরীরের ও স্বাস্থ্যের কি
ক্ষতি হবে এখন সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
অতিরক্ত পটাশিয়াম শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারেঃ কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম
থাকে যা সাধারণত আমাদের জন্য উপকার। কিন্তু অতিরক্ত কলা খেলে শরীরের পটাশিয়ামের
মাত্রা বেড়ে যেতে পারে যা সৃষ্টি করে একটা অবস্থা হাইপার কালেমিয়া। যেমন শরীর
দুর্বলতা, বমি ভাব এবং মাথা ঘোরা।
বিশেষ করে যাদেরকে সমস্যা আছে তাদের শরীরে অতিরিক্ত পটাশিয়াম বের করে দিতে
পারেনা। হলে সমস্যা আরো গুরুতর হতে পারে। তাই যাদেরকে নিয়ে সমস্যা আছে তারা
অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন। তবে অতিরক্ত কোন কিছু খাওয়া ঠিক
না।
রক্তের শর্করা মাত্রা বাড়াতে পারেঃ গলায় থাকা প্রাকৃতিক যিনি যদিও এটি লো
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ফল কিন্তু যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের জন্য অতিরক্ত
কলা রক্তের গ্লুকোজ বাড়াতে পারে। এতে করে ডায়াবেটিস রোগীদের সমস্যা হতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীরা কলা খাবেন এভাবে দিনের ১টির বেশি কলা না খাওয়া, কম
পাকা কলা বেছে নেওয়া ভালো এবং খাদ্যের তালুকায় অন্যান্য শর্করাযুক্ত খাবার
কমিয়ে রাখা ভাল শরীরের জন্য।
রাতে খাওয়ার সমস্যাঃ অনেক রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কলা খান যা সবার জন্য
উপকারী নয়। রাতে কলা খেলে কারো কারো পাকস্থলীতে অ্যাসিড বা গ্যাস তৈরি হতে
পারে। তাই খাওয়ার সময় মনে রাখবেন রাত ৯টার পর কলা না খাওয়াই ভালো। যারা ঘুমের
সময় পেট ভার বা বদহজমে ভোগেন তারা রাতের বেলায় কলা এড়িয়ে চলুন।
অতিরিক্ত কলা খেলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারেঃ যদিও কলা ওজন কমাতে সাহায্য করে কিন্তু
যদি অতিরক্ত পরিমাণ খাওয়া হয় তবে উল্টা ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে। এতে
প্রাকৃতিক চিনি রয়েছে।১ টি কলায় প্রায় ৯০ ক্যালরি থাকে। তাই যারা ওজন কমাতে
চান তাদের উচিত পরিমাণ বুঝে খাওয়া।
অতিরিক্ত কলা খেলে দাঁতের সমস্য হয়ঃ প্রাকৃতিক হলো কলা থাকার চিনি দাঁতের ক্ষতি
করতে পারে। যদিও খাওয়ার পর ভালোভাবে মুখ ধোয়া না হয়। তাই কলা খাওয়ার পরে
পানি পান করুন বা কুলি করে ফেলুন এতে দাঁত ভালো থাকব।
যাদের এলার্জি সমস্যা আসেঃ কিছু মানুষের শরীরে গলায় থাকা প্রোটিন বা ল্যাটেক্স
এর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। এতে দেখা দিতে পারে শরীরে যেমন চুলকানি, ফুসকুড়ি,
চোখের ফোলা ভাব এবং শ্বাসকষ্ট। যদি এরকম সমস্যা হয় সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের
পরামর্শ নিন। এবং অতিরিক্ত কলা খাইয়া থাকে বিরত থাকুন।
কলার পুষ্টিগুণ ও খাদ্য উপাদান
কলা আমাদের পরিচিতি সহজলভ্য এবং প্রতিদিনের ফল হল এর ভেতরে লুকিয়ে আছে অসাধারন
সব পুষ্টিগুণ। কলা শুধু যে ছাদে ভালো তাও নয় বরন এটি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়
অনেক উপাদান সরবরাহ করে যা যা অনেক দামি ফলও সব সময় পাওয়া যায় না। চলুন
জেনে নিই একটি কলা আমাদের শরীরকে ঠিক কি কি দিচ্ছে।
উপাদান | পরিমাণ |
---|---|
ক্যালরি | ৮৯ ক্যালরি |
কার্বোহাইড্রেট | ২২.৮ গ্রাম |
ফাইবার | ২.৬ গ্রাম |
পটাশিয়াম | ৩৫৮ মি.গ্রা. |
ভিটামিন বি৬ | ০.৪মি.গ্রা. |
ভিটামিন সি | ৮.৭মি.গ্রা. |
ম্যাগনেশিয়াম | ২৭ মি.গ্রা. |
প্রোটিন | ১.১ গ্রাম |
ফ্যাট (চর্বি) | ০.৩গ্রা |
কোন সময়ে কতটুকু কলা খাওয়া উচিত
একজন সুস্থ ব্যক্তি দিনে দুইটা মাঝারি আকারে কলা খাওয়া উচিত। তবে একটি ব্যক্তির
বয়স শারীরিক কার্যকলাপ এবং স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে
যথাসময়ে অপরিমিতি পরিমাণ কলা খাওয়া সবচেয়ে বেশি উপকারী। সময় বা অতিরক্ত
খাওয়ার হজম ওজন বা রক্তে শর্করা সমস্যা হতে পারে। চলুন তাহলে কোন সময়
কতটুকু কলা খাওয়া উচিত তা জেনে নিন।
- সকালের নাস্তা একটি কলা খাওয়া যায়। এতে কলা সত্যি সরবরাহ করে শুরুটা ভালো করতে সহায়ক হয়।
- দিনের বেলা ক্লান্ত দূর করতে এবং শক্তি পেতে কলা একটা ভালো বিকল্প তাই বিকেলে একটা কলা খাওয়া যায়।
- হজম সাহেব যে করার জন্য খাবারের পর কলা খাওয়া যেতে পারে।
- ব্যায়ামের আগে বা পরে কলা খেলে শরীরের শক্তি জোগাতে পারে।
- যাদের হজমে সমস্যা আছে তাদের অতিরিক্ত কলা খাওয়া উচিত নয়।
- যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কলা খাওয়া উচিত।
- কলা খাওয়ার সঠিক পরিমাণ ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে।
- যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা আছে তাদের পাকা কলা খাওয়া উচিত।
মোট কলা খাওয়ার পরিমাণ
নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা আমাদের শরীরের জন্য কতটুকু প্রয়োজন বা কতটুকু খেতে
হবে তা জানতে হবে।কলা একটু সুস্বাদু ফল এবং পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। কিন্তু কলা
খাওয়ারও একটি পরিমাণ রয়েছে। অতিরক্ত খেলে আমাদের শরীরে ও স্বাস্থ্যের সমস্যা
দেখা দিতে পারে। তাই মানুষ ও বয়সের উপর ভিত্তি করে কে কতটুকু বা কি পরিমান
কলা খেতে পারবে তা নিজে আলোচনা করা হলো।
- সাধারণ মানুষঃ ১-২ টি কলা নিরাপদ এবং উপকারী দিনে খাওয়ার জন্য।
- গর্ভবতী নারীর জন্যঃ দিনে খাওয়ার জন্য ১-২ টি কলা, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে পারবেন।
- শিশুদের খাওয়ার জন্যঃ দিনে অর্ধেক থেকে ১ টি কলা, বয়স ও ওজন অনুযায়ী খেতে পারবে।
- বয়স্ক বা কিডনি রোগীর খাওয়ার জন্যঃ দিনে ১ টি কলা যথেষ্ট, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন কলা খাওয়ার জন্য।
কারা বিরত থাকবে কলা খাওয়া থেকে
যদিও কলা পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কিন্তু কিছু নির্দিষ্ট মানুষের
জন্য এটি খাওয়া সতর্কতা সঙ্গে করা উচিত। বা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া
ভালো। কারণ কিছু শারীরিক অবস্থায় কলা খেলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বা
স্বাস্থ্যের অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। তাই যাদের এই সমস্যা গুলো আছে অবশ্যই
কলা খাওয়ার সময় ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ কলা খাবেন। চলুন
তাহলে যাদের সমস্যা আছে সেগুলো জেনে নিন।
- যাদের কিডনির সমস্যা আছে তারা কলা খাবেন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।
- ডায়াবেটিস রোগীরা অতিরিক্ত কলা খাবেন না। খেলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।
- যাদের অতিরক্ত গ্যাস পেট ফাঁপা বদহজমের সমস্যা আছে বা পাকস্থলীর থাকা মানুষগুলো কলা খাইয়া থেকে বিরত থাকবেন।
- যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকা বা ওভার ওয়েট ব্যক্তিরা কলা খাইয়া থেকে বিরত থাকবেন। যদিও কলা খান তবে পরিমাণ ঠিক রাখুন দিনে ১-২ যথেষ্ট।
- যাদের এলার্জি সমস্যা থাকে তারা কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। যদিও খেতে চান তাহলে প্রথমবার খেলে ছোট অংশ নিয়ে পরীক্ষা করুন। যদি সমস্যা হয় তাহলে ডাক্তার পরামর্শ নিন।
কোন কলার সবচেয়ে উপকারী স্বাস্থ্যের জন্য
কলা বিভিন্ন প্রজাতির রয়েছে যেমন পাকা কলা, কাঁচা কলা, লাল কলা , ছোট কলা
এবং খোসা মোটা কলা। সব কলার পুষ্টিগুণ প্রায় একরকম হলো কিছু প্রজাতির বিশেষ
পরিস্থিতিতে বিশেষ উপকার রয়েছে। চলুন জেনে নেই কোন কলা সবচেয়ে উপকারী
স্বাস্থ্যের জন্য।
পাকা কলাঃ পাকা কলা তে রয়েছে সহজে হজম হওয়ার শক্তি। পাখা খোলা খেলে দ্রুত শক্তি
যোগায় শরীরের। গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক এনার্জি দেই পাকা
কলা খেলে। পাকা কলা হজমে সহায়ক এবং সুপার ফাইবার ও ভিটামিন বৃদ্ধি করে এবং
উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে শরীরের। কাদের জন্য বেশি উপকারী এ পাকা কলা
খাওয়া। যেমন খেলার আগে, সকালের শক্তি বাড়ানোর জন্য এবং ক্লান্তি কমানোর
জন্য।
কাঁচা কলাঃ কাঁচা কলা খেলে শরীরের এ রেসিস্ট্যান্ট স্টাচে ভরপুর যা খাবার হজমে
ধীরে গ্লুকোজ ছাড়েন। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশি নিরাপদ কাঁচা কলা খাওয়া।
লিভার ও কোলেস্টরে নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। তাদের জন্য কাঁচা খাওয়া বেশি উপকারী যেমন
ডায়াবেটিস রোগী, হজম সমস্যা থাকা মানুষ এবং যারা ওজন কমাতে চান।
লালকলাঃ লাল কলা শেষ সব ব্যক্তিরা খাবে যাদের বয়স্ক বা হাড়ের সমস্ত থাকা মানুষ,
তখন চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে চাইলে তারা লাল কলা খাবে।
ছোট কলাঃ ছোট গলায় ভিটামিন ও মিনারেল ঘনত্ব বেশি থাকে। তাই সেসব ব্যক্তিদের জন্য
ছোটকলা খাওয়া বেশি উপকারী যেমন শিশু, গর্ভবতী নারী ও হজমে সংবেদনশীল
মানুষ।
খোসা মোটা কলাঃ রান্না পছন্দ কারি, উচ্চ ফাইবার চাহিদা
বা পাকস্থলী সুস্থ রাখতে চাইলে তাদের জন্য খোচা মোটা কলা খাওয়া অনেক
উপকারী।
স্বাস্থ্যের জন্য কলা খাওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ
কলা স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী ফল এবং গুরুত্বপূর্ণ। এতে প্রচুর পরিমাণে
ভিটামিন খনি যেমন ফাইবার রয়েছে যা আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়
বিভিন্ন পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে। পরিমাণ মতো কলা খেলে শরীরে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ
যেমন হৃদরোগ হজমের সমস্যা দুর্বলতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নত করে থাকে
কলা। কলা খাওয়া মানব দেহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
আরো পড়ুনঃ
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম-উপকারিতা এবং অপকারিতা
স্বাস্থ্যের জন্য কলা খাওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা উপরের আলোচনা থেকে বোঝা
যায়। কলা হচ্ছে একটা পুষ্টিকর প্রাকৃতিক সমৃদ্ধ। কলা হচ্ছে একটা প্রাকৃতিক
উপাদান। যা আল্লাহ মানুষের শরীর ও স্বাস্থ্য উন্নতির জন্য খাদ্য হিসেবে তৈরি
করেছে। তবে যাদের সমস্যা আছে তারা অবশ্যই স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ডাক্তারের
পরামর্শ অনুযায়ী কলা খাবে। তবে অতিরিক্ত খাবেন না যা আপনার শরীর ও স্বাস্থ্যের
ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
FAQ: নিয়মিত কলা খাওয়ার সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্নঃ কলা কি কিডনির জন্য ক্ষতিকর?
উত্তরঃ সাধারণভাবে কলা কিডনির জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে সতর্কতা
অবলম্বন করা প্রয়োজন।
প্রশ্নঃ কলা খেলে কি রক্তচাপ কমে?
উত্তরঃ হ্যাঁ কলা খেলে রক্তচাপ কমা সম্ভব না থাকে।
প্রশ্নঃ কলা কখন খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ সকালে এবং দিনের বেলাতে কলা খাওয়া উচিত।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের কলা কত প্রকার?
উত্তরঃ সাগর কলা, সবরি কলা, কাঠালি কলা, চিনি কলা, আনাজ কলা, বিচি কলা এবং
অগ্নিশ্বর এরকম নানাজাতের কলা ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
উপসংহার নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা
নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত করে তে
জেনেছি। কলায় এমন একটা ফল যা পৃথিবীর প্রায় সব জায়গায় পাওয়া যায়। কলা সহজে
পাওয়া গেল কড়া গুনাগুন এতটাই বেশি যে একে বলা হয় স্বাস্থ্য রক্ষার প্রাকৃতিক
ট্যাবলেট। নিয়মিত কলা খাওয়াই স্বাস্থ্য রক্ষা অসাধারণ ভূমিকা পালন করে।
এটা শুধু একটা ফল নয় বরং একটি প্রাকৃতিক চিকিৎসা। কলার মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান
আমাদের দেহের নানা সমস্যা সমাধান কাজ করে এবং এটি একটি সস্তা ও সহজলভ্য ফল হয়
প্রত্যেকের প্রতিদিন খাদ্যের তালিকায় থাকা উচিত। যে কোন খাবারের মতো পরিমাণ
মাত্রায় খাওয়া উত্তম। প্রতিদিন এক বা দুটো কলা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এতে
করে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং মন থাকবে সতেজ। এই আর্টিকেলটা পড়ে আপনার যদি কোন
মতামত থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে জানান। এরক সুস্বাস্থ্য তথ্য পণ্য সম্পর্ক জানতে
আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
সামিজা৪২ কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url