খালি পেটে শসা খাওয়ার ১৪টি উপকারিতা এবং অপকারিতা
খালি পেটে শসা খাওয়ার ১৪টি উপকারিতা গুলো জানব।শসা তো সকলেই খাই কিন্তু শসা যে পুষ্টিগুণ গুলো রয়েছে সে সম্পর্কে আমরা কয়জনে জানি।শসা খেলে স্বাস্থ্যের পরিবর্তন এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ থেকে নিজেকে রক্ষা করা যাবে।তবে মানুষ আগের থেকে এখন অনেক সচেতন।
স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের পাশাপাশি পুষ্টিকর ফলও খায়।তার মধ্যে শসা হচ্ছে একটি সবজি ফল।আর্টিকেলে জানবো খালি পেটে শসা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা।অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কি ক্ষতি হতে পারে। আর জানব শসা খাওয়ার নিয়ম এবং শসার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে চলুন তাহলে জেনে নিন।
পেজ সূচিপত্রঃ খালি পেটে শসা খাওয়ার ১৪টি উপকারিতা এবং অপকারিতা
- খালি পেটে শসা খাওয়ার ১৪টি উপকারিতা সম্পর্কে
- শসা খাওয়ার ৪টি অপকারিতা
- শসার পুষ্টিগুণ ও উপাদান
- খালি পেটে শসা খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- প্রতিদিন শসা খেলে কত দিনে ফল পাওয়া যায়
- খালি পেটে শসা কেন খাওয়া উচিত
- FAQ: প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
- লেখকের মন্তব্য খালি পেটে শসা খাওয়ার ১৪টি উপকারিতা এবং অপকারিতা
খালি পেটে শসা খাওয়ার ১৪টি উপকারিতা সম্পর্কে
বর্তমানে কমবেশি প্রায় মানুষ শসা খেয়ে থাকে। আমরা যখন ছোট ছিলাম শশাকে দেখতে খুব সুন্দর মনে হতো কিন্তু খেতে কেমন জানতাম না। আমাদের গ্রামে শসা খুব সাধারণ ছিল না বরং এক ধরনের অচেনা সবজি মনে হতো। অনেকে বলতো এটা কাঁচা খাওয়া যায় কিনা, এটা খেতে ভালো। আমরা তখন ভাবতাম এমন সবজির কি উপকার হতে পারে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ধীরে ধীরে শসা কে চিনতে শিখেছে। শুরুতে শসা শুধু বাগানে বা বাড়ির পাশে হঠাৎ জন্মানো সবজি হিসেবে দেখা যেত।
তখনকার মানুষ শসার কেউ খেত কেউ খেত না। কেউ এটাকে আগাছা বলে গাছটাকে উঠিয়ে ফেলে দিত। কিন্তু বর্তমানে মানুষ ধীরে ধীরে শিখেছে যে শসা কাঁচা খাওয়া যায়, রান্না করা যায় এবং খাওয়ার পর শরীর ভালো থাকে। বেশ কয়েক প্রজন্ম ধরে মানুষের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে শসা একটি জনপ্রিয় সবজি হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। শসা খেতে সুস্বাদু নয় বরং শরীরের জন্য উপকারী। আজ আমরা বুঝতে পেরেছি কিভাবে খালি পেটে শসা খেলে শরীরকে হাইড্রেট করে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে স্বাস্থ্যকে রক্ষা করে। এক কথায় বলা যায় শসা আজকের দিনে শুধু একটি সবজি নয় বরং মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতায় এক অমূল্য উপাদান।
আরো পড়ুনঃ
শীতকালে দুধ খাওয়ার ৭টি উপকারিতা এবং ত্বকের যত্ন
বর্তমানে সময়ে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের খাদ্য তালিকায় শসা একটি জনপ্রিয় সবজি। বিশেষ করে খালি পেটে শসা খাওয়ার অভ্যাস দিন দিন অনেকের মাঝে বেড়েছে। শসা শুধু দেহকে শীতল রাখে না বরং শরীরের ভেতরে বিষাক্ত পদার্থ দূর করা থেকে শুরু করে ওজন কমানো পর্যন্ত অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা করে থাকে। আমরা নিচে এখন জানব খালি পেটে শসা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা এবং নিচে ৪টি উপকারিতা, নিয়ম,পরিমাপ এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। আসুন তাহলে জেনে নিন।
- শরীর হাইড্রেটেড রাখেঃ আমরা যখন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠি তখন আমাদের দেহে পানি শূন্য থাকে। তখন আমাদের দেহের জন্য পানির প্রয়োজন হয়। পানি অথবা পানি জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। শসার ৯৫% পানি থাকে যা শরীরকে আদ্র রাখতে সাহায্য করে এবং পানি শূন্যতা রোধ করে। খালি পেটে শসা খেলে শরীরের দ্রুত হাইড্রেট হয় এবং সারাদিন এনার্জি বজায় থাকে।
- ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ বর্তমানে মানুষ এখন ওজনে অনেক চিন্তিত। কারণ ওজন একবার বেড়ে গেলে তাও সহজে কমানো যায় না। তবে কিছু নিয়ম বা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেলে ওজন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে সবজি ফল শসা। শসাতে কম ক্যালোরি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। খালি পেটে খেলে খুদা কমে এবং অতিরক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
- হজম শক্তি উন্নতি করেঃ অনেক মানুষ আছে যাদের হজমের সমস্যা হয়। হজমের সমস্যার কারণে অনেক সময় বমি, পেট ফাঁপা এবং বদ হজম হয়। যার কারণে পেটে অনেক সময় ব্যথা করে। আপনার হজম শক্তিকে উন্নত আপনি খালি পেটে শসা খেতে পারেন। কারণ শসা তে থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়া সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়।
- ত্বকের উন্নতি করেঃ বর্তমানে মেয়েদের এখন একটা সমস্যা ত্বকের। ফর্সা হওয়ার জন্য মেয়েরা কেমিক্যাল যুক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করে। যার ফলে স্কিনের ক্ষতি হয় এমনকি স্কিন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই স্থায়ীভাবে ত্বককে উজ্জ্বল করতে শসা হতে পারে আপনার রূপচর্চার সামগ্রী। শসায় থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং পানি ত্বকে ভেতর থেকে আদ্র রাখে এবং ডাক সার্কেল হালকা করে। ত্বকের আদ্রতা রক্ষা করে এবং পুষ্টি যোগায়।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ বর্তমানে মানুষের রক্তচাপ এটা একটা কমন ব্যাপার হয়ে গেছে। এই রক্তচাপের কারণে হাজার হাজার মানুষ স্ট্রোক করছে। বা অনেক সময় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যায় যার কারণে মানুষ হার্ট অ্যাটাক করছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আপনি খালি পেটে শসা খেতে পারেন। কারণ শসাতে আছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার যুক্ত। যার ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে অনেকটা সাহায্য করে শসা।
- কিডনির সমস্যাঃ খালি পেটে শসা খাওয়ার ১৪টি উপকারিতা এর মধ্যে আরেকটি হচ্ছে কিডনি সমস্যা। অনেক মানুষ আছে যারা কিডনি নিয়ে অনেক সমস্যায় ভুগছে। যেমন কিডনিতে পাথর, কিডনিতে পানি এবং কিডনি নষ্ট হওয়ার মত সমস্যা। এসব সমস্যার জন্য প্রতিদিন রুটিন করে শসা খাওয়া ভালো। কিডনি, লিভার এবং প্যানক্রিয়াসের সমস্যার শসা সাহায্য করতে পারে।
- কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণঃ কোলেস্টেরল হলো শরীরের প্রয়োজনীয় একটি মনজাতীয় পদার্থ। যা কোষ গঠনে, হরমোন উৎপাদন এবং পিত্ত থলিতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হলো একটি রক্তনালীতে জমে ধমনী সংকোচন, হার্টের অসুখ, স্ট্রোক বা উচ্চ রক্তচাপের মত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই আপনি খাদ্যের তালিকা প্রতিদিন শসা রাখতে পারেন স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য। শসার স্টেরল নামক উপাদান কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ সাহায্য করতে পারে।
- রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ রক্তে শর্করা হল শরীরের প্রধান শক্তির উৎস। কিন্তু বেশি শর্করা থাকলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিডনির সমস্যা এবং অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই রক্তের শর্করার নিয়ন্ত্রণ রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য আপনি প্রতিদিন শসা খেতে পারেন। তবে বিশেষ করে শসা ডায়বেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এটি ইনসুলিন সেক্রিসন নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে।
- ক্ষুদা নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করেঃ আপনি যদি খালি পেটে শসা খান তাহলে আপনার খাওয়ার প্রবণতা কমে যাবে। কারণ শসা খেলে তার যে পানি আছে এতে আপনার ভরা থাকে। যাতে করে আপনার খুদা কম লাগে। এতে করে আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ আপনি যদি প্রতিদিন নিয়ম করে শসা খান খেতে আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। স্বাস্থ্যের পাশাপাশি আমাদের শরীরে যে হাড় আছে সেটাও ভালো থাকবে। থাকা ভিটামিন কে হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই হাড়কে সুস্থ রাখতে হলে আমাদের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পাশাপাশি পুষ্টিকর ফল এবং শসা খাওয়া ভালো।
শসা খাওয়ার ৪টি অপকারিতা
উপরে আমরা খালি পেটে শসা খাওয়ার ১৪টি উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম।শসা আমাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি। এটি হাইড্রেশন, হজম উন্নত করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে। কিন্তু মনে রাখতে হবে প্রাকৃতিক খাবার হল অতিরিক্ত খাওয়া যাবেনা। অতিরক্ত বা ভুল ভাবে খেলে শরীরের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। অনেক সময় আমরা উপকারের দিকে বেশি মনোযোগ দিন আর ক্ষতির কথা একদম ভুলে যায়।
যার কারণে আমাদের স্বাস্থ্যের অনেক সময় বড় ধরনের ক্ষতি সমূহ হতে হয় বা বড় কোন রোগের।শসা খাওয়ার ক্ষেত্রে ঠিক তেমনি সত্য। যদিও এটি স্বাস্থ্যকর তবে কিছু মানুষের জন্য বা অতিরিক্ত খেলে কিছু প্রতিক্রিয়া বা সমস্যা দেখা দিতে পারে। আসুন দেখি শসা খাওয়ার ৪টি প্রধান অপকারিতা এবং সেগুলো কিভাবে আমাদের প্রভাবিত করে জীবনে।
- অতিরিক্ত গ্যাস ও পেট ফোলা ভাবঃ যারা গ্যাস জনিত সমস্যা বা এসিডিটি নিয়ে ভোগেন তাদের জন্য খালি পেটে বেশি ছসা খাওয়া অসুবিধা জনক হতে পারে। কারণ শচায় থাকা ফাইবার এবং সিলিকা উপাদান অনেকের জন্য গ্যাস বা খোলা ভাব সৃষ্টি করতে পারে। তাই পেট হালকা ফোলা বা ফাঁপা অনুভুতি হতে পারে যা দিনের কাজে ব্যাঘাত আনতে পারে।
- অতিরিক্ত প্রসাব বা ডিহাইড্রেশনঃ শসার প্রায় ৯৫% পানি থাকে। খালি পেটে খেলে এটি মূত্রত্যাগে বৃদ্ধি করতে পারে। তাই যাদের ঘন ঘন প্রসাবে সমস্যা আছে তারা অতিরিক্ত শসা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। যারা কিডনির সমস্যায় ভুবন বা ঘন ঘন বাথরুম যেতে অসুবিধা হয় তাদের জন্য এটি সমস্যার কারণ হতে পারে।
- অ্যালার্জি সমস্যাঃ কিছু মানুষের শসা খাওয়ার পরে এলার্জি সমস্যা হতে পারে। যেমন ঠোঁট বা গলা চুলকানি, গলায় ফোলা ভাব, ত্বকের চুলকানি বা লালচে দাগ। এসব যাদের সমস্যা আছে তাদের অতিরিক্ত শসা না খাওয়াই ভালো। তবে বিশেষ করে খালি পেটে এদের জন্য শসা উপযুক্ত নয়। কম সাধারণ তবে যারা এলার্জির দিকে ঝুঁকিপূর্ণ তাদের সতর্ক হওয়া দরকার।
- নিম্ন রক্তচাপঃ যাদের শরীরে রক্তচাপ কম। তাদের জন্য খালি পেটে শসা খাওয়ার হয় একদম উচিত নয়। কারণ শসায় থাকা পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ আরো কমিয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে সকালবেলায় যারা ব্যায়াম বা কাজের জন্য অনেক এনার্জি প্রয়োজন তাদের জন্য এটি সিমিত ব্যবহার করা ভালো।
শসার পুষ্টিগুণ ও উপাদান
শসা হলো একটি প্রাকৃতিক সবজি ফল। কম ক্যালরিযুক্ত সবজি যা প্রায় ৯৫% পানি দিয়ে গঠিত। তাই এটি শরীরকে হাইড্রেট রাখতে অত্যন্ত কার্যকরী। শসাতে রয়েছে পুষ্টিগুণ ও উপাদান। যেমন ভিটামিন সি, কে, এ, বি যা শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এবং ত্বক চুল ও চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। এছাড়া শসা রয়েছে প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ যেমন পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম যা হাটের স্বাস্থ্য, পেশির কার্যক্ষমতা, এবং হারের শক্তি বাড়াতে সয়হোক।
শসায় থাকা ফাইবার হজম রোগের সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠানো কমাতে সাহায্য করে।
এছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহ থেকে টক্সিন দূর করতে সহায়ক এবং ব্যথা
কমাতে ভূমিকা রাখে। কম ক্যালোরি এবং বেশি পানি থাকার কারণে শসা ওযুর নিয়ন্ত্রণের
সাহায্য করে এবং ডায়েটিং ফ্রেন্ডলি খাবার হিসেবে পরিচিত। সামগ্রীক ভাবে শশা একটি
পূর্ণাঙ্গ, স্বাস্থ্যকর সবজি যা নিয়মিত খাদ্যভাসযুক্ত করলে শরীরকে সতেজ,
হাইড্রেটেড এবং রোগমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
খালি পেটে শসা খাওয়ার সঠিক নিয়ম
শসা খালি পেটে খাওয়া স্বাস্থ্যকর হতে পারে।কিন্তু সঠিক নিয়ম অনুসরণ না করলে পেটের সমস্যা বা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। প্রথমে শসা ভালোভাবে ধুয়ে নিন যাতে এতে থাকা মাটি, রাসায়নিক বা জীবাণু সম্পন্নভাবে মুছে যায়। খাওয়ার পরিমাণ শুরুতে ছোট রাখা ভালো একটি ছোট শশা বা আর্থিক শসা দিয়ে শুরু করলে শরীরকে অভ্যস্ত হতে সুবিধা হয়। খালি পেটে খাওয়ার সময় শসা কাঁচা খাওয়া সবচেয়ে কার্যকরী। কারণ এতে সব পুষ্টি উপাদান সংরক্ষিত থাকে। তবে কেউ চাইলে সামান্য লেবুর রস বা খুব হালকা লবণ ব্যবহার করতে পারে।
আরো পড়ুনঃ
খেজুর খাওয়ার স্বাস্থ্যের ১৪টি উপকারিতা এবং অপকারিতা
তবে অতিরক্ত মসলা বা তেল দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন। শসা খাওয়ার ২০-৩০ মিনিট পর
নাস্তা বা কঠিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। যাতে রক্তের শর্করা এবার হজম
নিয়ন্ত্রণ থাকে। যাদের পেটে খুব ব্যথা তারা শসা ছোট ছোট টুকরা করে খেতে পারেন বা
আগে কিছু সময় ভিজিয়ে রাখতে পারেন। নিয়মিতভাবে খালি পেটে শসা খাওয়ার অভ্যাস
ধীরে ধীরে হজম, হাইড্রেশন এবং শরীরের টক্সিন কমাতে সাহায্য করে। তবে সর্বদা
পরিমাণ মতো শরীরে প্রতিক্রিয়া অনুসরণ করা জরুরী।
প্রতিদিন শসা খেলে কত দিনে ফল পাওয়া যায়
শসা খাওয়া শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কিন্তু অনেকের প্রশ্ন করেন, প্রতিদিন শসা খাওয়া শুরু করলে কত দিনে ফল পাওয়া যায়। আসলে এটা কিছুটা ব্যক্তিভেদের পরিবর্তিত হতে পারে। কারণ শরীরে ধরন, ডায়েট, জীবনধারা এবং হজম ক্ষমতার উপর নির্ভর করে ফলাফলে সময়। সাধারণত নিয়মিত ভাবে খালি পেটে শসা খেলে ১-২ সপ্তাহের মধ্যে হজম শক্তি বৃদ্ধি, পেটের ভারসাম্য এবং হাইড্রেসন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
২-৪ সপ্তাহে শরীরের ফ্ল্যাটনেস, অতিরক্ত পানি কমে যাওয়া এবং ওজন
নিয়ন্ত্রণের সহায়তা লক্ষ্য করা যেতে পারে। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ বা
কোলেস্টরেল কমানোর মতো দীর্ঘমেয়াদি উপকার দেখতে হলে কমপক্ষে ১-২ মাসের নিয়মিত
অভ্যাস প্রয়োজন। গুরুত্বপূর্ণ হলো শসা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত
পানি এবং নিয়মিত ব্যায়াম বজায় রাখা যাতে শরীর সব পুষ্টি উপাদান ব্যবহার করতে
পারে এবং দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায়।
খালি পেটে শসা কেন খাওয়া উচিত
আমি ছোটবেলার খেতে খুব একটা পছন্দ করতাম না। আমাদের বাড়ি বাগানের শসা গাছ হত। কিন্তু আমি কখনো বুঝতে পারতাম না এটা খাওয়া যায় কিনা। তারপর একদিন বন্ধু হল সকালে খালি পেটে শশা খাও অনেক উপকার হবে। শুরুতে আমি ভেবেছিলাম এটা কি কার্যকর হবে কিন্তু না আমার ধারণা একদম ভুল। ধীরে ধীরে আমি বুঝতে পারলাম না এটা একটি উপকারী সবজি ফল। সকালে যখন আমি এক টুকরার ছাতা খাওয়ার পর আমার পেট হালকা মনে হয় দিন শুরু করতে শরীর সতেজ লাগে।
শসা খেলে পেটের মধ্যে কেমন একটা ঠান্ডা অনুভূতি লাগে। আমি লক্ষ্য
করেছি এটা খাওয়ার পর হজম সহজ হয়ে যায়, দুপুর পর্যন্ত খুব বেশি ক্ষুধা লাগে না।
আর শরীরও হালকা থাকে। প্রতিদিন খাওয়ার অভ্যাসে ধীরে ধীরে রক্তের এনার্জি সমান
থাকে। এমনকি সকালে কফি না খাওয়া হল দিন টা শক্তি নিয়ে শুরু হয়। তবে
সবাইকে একই ভাবে হবে না কখনো কখনো বেশি খেলে আমার পেট ফোলা অনুভূতি হয় বা বারবার
বাথরুম যেতে হয় তাই এখন আমি শিখেছি ছোট ছোট টুকরা করে খাওয়া সবচেয়ে ভালো।
আরো পড়ুনঃ
১০টি শীতকালীন সবজির নাম ও পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা
শসা খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে খেলে ছাদও ভালো লাগে এবং কোন অস্বস্তি হয় না।
আমার জন্য সবচেয়ে বড় বিষয় হলো এটা শুধু খাওয়ার অভ্যাস নয় বরং শরীরকে সতেজ
রাখার একটি প্রাকৃতিক উপায়। খাওয়া মানে মনে হয় নিজের শরীরের এক ধরনের
প্রাকৃতিক ডিটক্স দিচ্ছে। আরে অভ্যাস ধরে রাখলে একসময় মনে হয় শরীর লাইট,
হজম ঠিকঠাক, আর মনও ভালো থাকে। সত্যি বলতে এখন আমি কেউ কাউকে বললে শসা খাওয়া
শুরু করা তবে সঠিকভাবে তারা খালি পেটে খাওয়ার সহজ আনন্দটা বুঝতে পারবে।
FAQ: প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্নঃ খালি পেটে শসা খেলে কি ক্ষতি হয়?
উত্তরঃ খালি পেটে শসা খেলে ক্ষতি হয় না। তবে কিছু ক্ষেত্রে শসায়ে থাকা
ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম খালি পেটে শসা খেলে লো ব্লাড প্রেসার বা নিম্ন
রক্তচাপের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রশ্নঃ ১টি শসা তে কত ক্যালরি থাকে?
উত্তরঃ একটি মাঝারে আকারে শসা প্রায় ১৫-২০ ক্যালোরি থাকে। এটি খুব কম
ক্যালরিযুক্ত হওয়ায় ডায়েটিং ও ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযোগী।
প্রশ্নঃ শশা কখন খাওয়া উচিত নয়?
উত্তরঃ শসা খালি পেটে খুব বেশি ঠান্ডা বা বড় জাত পানির সঙ্গে মিলিয়ে খাওয়া
উচিত নয়। কারণ এটি পেটে হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে। শসা অতিরিক্ত রাতে খেলে
বিশেষ করে ঘুমিয়ে আগে তখন শরীল পুরোপুরি হজম করতে পারে না এবং ঘুমের সময় পেট
ভারী মনে হতে পারে।
লেখকের মন্তব্য খালি পেটে শসা খাওয়ার ১৪টি উপকারিতা এবং অপকারিতা
খালি পেটে শসা খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার। সহ সাহায্যের
পুষ্টিগুণগুলো রয়েছে তা মানব দেহের জন্য অনেক উপকারী। তবে বিশেষ করে আগে মানুষ
বিয়ের অনুষ্ঠানে শসা খেত। কিন্তু আস্তে আস্তে মানুষ শসা খাওয়ার গুরুত্বটা বুঝতে
পেরেছে। মানুষ এখন সব খাবারের সাথে শসা রাখার চেষ্টা করে এমনকি ওজন
নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেকের খালি পেটে শসা খেয়ে থাকে। তাই আসুন সকলে স্বাস্থ্যকর
খাবার এবং পুষ্টিকর ফল এর পাশাপাশি খাদ্যের তালিকায় শসা রাখার চেষ্টা করি
প্রতিদিন।
এই আর্টিকেলে উপরে খালি পেটে শসা খাওয়ার ১৪টি উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে
জানলাম। শসা খেলে আমাদের স্বাস্থ্যের উপকারিতা হবে তা আমাদের জন্য
স্বাস্থ্যসম্মত। তাই আসুন সকলে স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ফল
খেয়ে সুস্থ জীবন গড়ি। স্বাস্থ্য ভালো তাহলে জীবন সুন্দর হবে। আপনার যদি উপকার
হয় তাহলে মতামতি কমেন্ট বক্সে জানান। আর এরকম নতুন তথ্য পেতে ওয়েবসাইটটি ভিজিট
করুন।

সামিজা৪২ কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url