পা ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায় ৭টি ও কার্যকর সমাধান

পা ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায় ৭টি ও কার্যকর সমাধান গুলো সম্পর্কে জানব। পা ফাটা প্রায় সকলের এই সমস্যা হয়ে থাকে। বিশেষ করে শীতকালে বেশি। তাই  পা ফাটা থেকে কিভাবে আমরা রক্ষা পাবো।পা ফাটা বন্ধ করার জন্য আমরা কেমিক্যাল যুক্ত প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার করি।

পা-ফাটা-দূর-করার -ঘরোয়া-উপায়

এতে করে আমাদের সাময়িক পা ফাটা বন্ধ হয়। এই আর্টিকেলে আলোচনা করব কিভাবে ঘরে থাকা উপকরণ আপনি খুব সহজে আপনার পা ফাটা বন্ধ করতে পারবেন। চলুন তাহলে জেনে নিই পা  ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায় এবং ৭টি  কার্যকর সমাধান গুলো জেনে নিন।

পেজ সূচিপত্রঃ পা ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায় ৭টি ও কার্যকর সমাধান

পা ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায় ৭টি সমাধান

শীতকাল এলেই অনেকের পায়ে দেখা যায় এর পরিচিত সমস্যা তা হলো পা ফাটা। যদিও এটি সাধারণ একটি ত্বকের সমস্যা, তবুও এটি শুধু সৌন্দর্য নষ্ট করে না বরং ব্যথা, চুলকানি এবং কখনো কখনো রক্তপাতের কারণ হতে পারে। বিশেষ করে যারা প্রতিদিন দীর্ঘ সময় খালি পায়ে হাঁটেন বা পায়ের যত্ন নেন না তাদের মধ্যে এর সমস্যা বেশি দেখা যায়।

তবে চিন্তার কিছু নেই প্রাকৃতিক এমন অনেক উপাদান আছে যা ঘরে ব্যবহার করে খুব সহজে পা ফাটা ছাড়ানো যায়। আজকেই আর্টিকেলে আমরা জানবো পা ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায় ৭টি কার্যকর উপায় এর পাশাপাশি পা ফাটা কারণ, রোধের উপায় এবং প্রয়োজনীয় যত্ন বা কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব নিচে।

নারকেল তেল ব্যবহার

নারকেল তেল আমরা চুলের জন্য ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু নারিকেল তেল চুলের পাশাপাশি আমাদের ত্বকের  কাজে লাগে। নারকেল তেলের যে পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। নারকেল তেল ত্বক নরম রাখা সবচেয়ে কার্যকর প্রাকৃতিক উপাদান। এতে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল উপাদান রয়েছে। যা পায়ের ক্ষত সারায় এবং সংক্রমন প্রতিরোধ করে। নারকেল তেল কিভাবে ব্যবহার করবেন পায়ে ফাটা রোধ করার জন্য চলুন তা জেনে নিন।

  • রাতে ঘুমানোর আগে পা ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিন।
  • পায়ের ফাটা অংশে নারকেল তেল লাগিয়ে হালকা ম্যাসাজ করুন।
  • এরপর মোজা পড়ে ঘুমান।
  • প্রতিদিন এভাবে করে কয়েক দিনের মধ্যে ফাটল কমে যাবে।

দুধ ও মধুর মিশ্রণ

দুধে আছে ল্যাকটিক অ্যাসিড যা মৃত কোষ দূর করে। আর মধু ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে। এ দুটি উপাদান একসাথে ব্যবহার করলে পায়ের ত্বক হবে মসৃণ ও কোমল। দুধ ও মধু সচরাচর বাড়িতেই থাকে। তাই আপনি খুব সহজে ঘরোয়া উপায়ে দুধ ও মধুর মিশ্রণ দিয়ে পায়ের যত্ন নিতে পারবেন। চলুন জেনে নিন দুধ ও মধুর মিশ্রণ একসাথে কিভাবে ব্যবহার করবেন পায়ে।

  • আধা কাপ কুসুম গরম দুধ ২ চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। ভালোভাবে দুইটি উপকরণকে মিশাবেন।
  • এতে পা ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন।
  • এরপর হালকা ব্রাশ বা পামিস স্টোন দিয়ে ঘষে ধুয়ে ফেলুন।
  • আপনার পা যখন শুকিয়ে যাবে তখন আপনি ক্রিম লাগান পায়ে ফাটার জন্য।
  • আপনি এটি প্রতিদিন করতে পারবেন তাহলে আপনার পা থাকবে নরম। এবং পা ফাটা রোধ থেকে রক্ষা পাবেন।

লেবুর রস ও গ্লিসারিন প্যাক

লেবু হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক উপাদান। বর্তমানে লেবুর চাষ মানুষ এখন ছাদের উপরের টবে করছে। বা বাড়ির আঙিনায় গাছ লাগাই লেবুর। এখন বারোমাস লেবু পাওয়া যায়। কিন্তু লেবুর রস আমাদের পায়ের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। লেবুর রস প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েন্ট হিসাবে কাজ করে। আর গ্লিসারিন ত্বক মশ্চারাইজার করে। দুটি সংমিশ্রণে ফাটা গোড়ালি ছাড়াতে খুব দ্রুত কাজ করে। চলুন এ দুটির মিশ্রণ কিভাবে পায়ে ব্যবহার করতে হবে তা জেনে নিন।

আরো পড়ুনঃ শীতকালে চিরতরে খুশকি দূর করার ১০টি ঘরোয়া উপায়

  • ১ টেবিল চামচ লেবুর রস ও ১ টেবিল চামচ গ্লিসারিন ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
  • এ মিশ্রণটির পায়ের ফাটা অংশে লাগিয়ে ত্রিশ মিনিট রেখে দিবেন।
  • ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • প্রতিদিন রাতে এটি ব্যবহার করলে ত্বক মসৃণ হয়ে যাবে।
  • এটা ব্যবহার করলে আপনার পা ফাটা  অনেকটাই কমে যাবে।

লবণ পানি ও পামিস স্টোন 

লবণ পানি প্রায় আমরা ব্যথার কাজের জন্য ব্যবহার করে থাকি। যেকোনো ব্যাথাতে লবণ পানির ব্যবহার করলে অনেকটাই ব্যথা কমে আসে এবং আরাম পাওয়া যায়। তেমনি লবণ পানি পায়ের ফাটা বন্ধের জন্য অনেকটা উপকারী। লবণ পানি পায়ের ক্লান্তি দূর করে ও ত্বকের ব্যাকটেরিয়া নাশ করে।পামিস স্টোনের সাহায্যে মৃত চামড়া সরিয়ে ছেলের ত্বকে নরম করে। চলুন এ দুটোর মিশ্রণ ব্যবহারের বিধিগুলো জেনে নিন।

  • গরম পানিতে ২ টেবিল চামচ লবণ মিশিয়ে নিন।
  • পা ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন পানিতে।
  • এরপর পামিস স্টোন দিয়ে পায়ের ফাটা অংশ ঘষে নিন। দিয়ে পা টাকে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন।
  • তারপরে শুকিয়ে আসলে ক্রিম লাগান।
  • সপ্তাহে ২-৩ বার এভাবে করলে চমৎকার ফল পাবেন।

ভ্যাসলিন ও লেবুর রসের মিশ্রণ

পা ফাটার সমস্যা যখন একটু বেশি হয়ে যায় তখন সাধারণত ক্রিম অনেক সময় কাজ হয় না। এমন পরিস্থিতিতে ভ্যাসলিন ওলেবুর রসের মিশ্রণ হতে পারে এক অসাধারন ঘরোয়া প্রতিকার। এই দুটি উপাদান একসাথে ত্বকের গভীরে কাজ করে পায়ের শুষ্কতা, ফাটল ও কালচে ভাব দূর করে দেয়।ভ্যাসলিন একটি শক্তিশালী মশ্চারাইজার। এটি ত্বকের ওপরে এক ধরনের প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে যা ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে এবং নতুন ত্বক গঠনের সাহায্য করে।

লেবুর রসের রয়েছে প্রাকৃতিক সাইট্রিক অ্যাসিড যা মৃত চামড়া তুলে ত্বককে উজ্জ্বল ও মসৃণ করে তুলে। প্রাকৃতিক হিল রিপেয়ার থেরাপি যা কয়েকদিনের ব্যবহারে ভালো ফলাফল দেয়। চলুন এ দুটি মিশ্রণ কিভাবে আপনার পায়ে ব্যবহার করবেন তা আমরা জেনে নিই।

  • প্রথমে পা ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। পায়ের ফাটা অংশে যেন কোন ধুলা ময়লা না থাকে।
  • একটা ছোট বাটিতে ১ চা চামচ ভ্যাসলিন নিন।
  • এতে ২-৩ ফোটা তাজা লেবুর রস যোগ করুন এবং ভালভাবে মিশিয়ে নিন।
  • এই মিশ্রণটি পায়ের ফাটা অংশে আলতো ভাবে ম্যাসাজ করে লাগান।
  • এরপর পরিষ্কার সুতির মোজা পরে ঘুমান।
  • সকালে উঠে কুসুম গরম পানি দিয়ে পা ধুয়ে ফেলুন।
  • নিয়মিত ৫-৭ দিন এভাবে ব্যবহার করলে ফাটল নরম হয়ে যাবে এবং ব্যথা অনেক কমে যাবে।

অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরা আমরা প্রায় ত্বক বা চুলের যত্নের জন্য ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু অ্যালোভেরা জেল আমাদের পায়ে ফাটা রোধের কাজও করে। অ্যালোভেরা যে পুষ্টিগুণ রয়েছে তা আমাদের পায়ের যত্নের জন্য অনেক উপকারী। অ্যালোভেরা ত্বক ঠান্ডা রাখে, জ্বালাপোড়া কমায় এবং ত্বকের ক্ষত সারায়।এটি একটি প্রাকৃতিক হিলার। আসুন জেনে নিই কিভাবে অ্যালোভেরা জেল পায়ে ব্যবহার করতে হবে।

  • তাজা অ্যালোভেরা জেল বের করে পায়ে লাগান।
  • হালকা ম্যাসাজ করে ২০ মিনিট রেখে দিন।
  • শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
  • প্রতিদিন রাতে ব্যবহারে করলে পাওয়া হবে কোমল ও মসৃণ।
  • এতে আপনার পা থাকবে নরম ও উজ্জ্বল।

ঘি এবং দুধের ক্রিম

পা ফাটা সাধারণত তখনই হয় যখন ত্বক তার প্রাকৃতিক আদ্রতা হারায়। শীতকালে বাধ ধুলাবালিযুক্ত পরিবেশে আমাদের পায়ের তলা শুকিয়ে শক্ত হয়ে যায় ফলে ফাটল দেখা দেয়। এ অবস্থায় সবচেয়ে প্রাকৃতিক, পুষ্টিকর ও কার্যকর প্রতিকার হল ভি ও দুধের ক্রিম। ঘি প্রাকৃতিক ফ্যাট ও ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে সমৃদ্ধ। এটি ত্বকের গভীরে স্তরে প্রবেশ করে আদ্রতা ফিরিয়ে আনে। ঘি ত্বককে নরম করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষ পূর্ণ গঠন করতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যার ত্বককে সুস্থ রাখে।

অন্যদিকে দুধের ক্রিমের থাকে ল্যাকটিক অ্যাসিড যা মৃত চামড়া দূর করে ত্বক উজ্জ্বল করে পাশাপাশি এতে থাকা প্রাকৃতিক ফ্যাট পায়েল শুষ্কতা দূর করে ত্বককে কোমল করে তোলে। নিয়মিত ব্যবহারে এটি পায়ের ত্বকে শিশুর মত নরম রাখে। চলুন এ দুটি উপাদান একসাথে ব্যবহার করার উপায় গুলো জেনে নিন।

  • প্রথমে কুসুম গরম পানিতে পা ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন।
  • এরপরে হালকা করে তোয়ালে দিয়ে পা শুকিয়ে নিন।
  • ১ চা চামচ ঘি এবং ১ চা চামচ দুধের ক্রিম একটি ছোট বাটিতে মিশিয়ে নিন।
  • পায়ের ফাটা বা শুষ্ক অংশ এই মিশ্রণটি লাগিয়ে ৫-১০ মিনিট হালকা ম্যাসাজ করুন।
  • এরপর পা ঢেকে রাখার জন্য মোজা পড়ে নিন। এবং সারারাত রেখে দিন।
  • সকালে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • নিয়মিত ৫-৭ দিন ব্যবহার করলে পা ফাটা একবারে চলে যাবে এবং তক হবে মসৃণ ও উজ্জ্বল।

পা ফাটার কারণ

কি কারনে আমাদের পা ফাটে এটা আমরা কখনো ধরার চেষ্টা করি না বা বুঝতে চায় না। যখন আমাদের পায়ে ফেটে রক্ত পরে বা ব্যথা করে তখন আমরা এর সমাধান খুঁজি বা পা ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায় গুলোর সম্পর্কে জানতে চাই। পা ফাটা আসলে আমাদের ত্বকের একটি ডিহাইড্রেশন সমস্যা। আসুন নিচে জেনে নেই বিস্তারিতভাবে পা ফাটার প্রধান কারণগুলো।

  • ত্বকের আদ্রতা কমে যাওয়া কারণে পা ফাটা দেখা দেয়। শীতকালে বাতাস শুষ্ক হয়ে যায়। এতে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয় ফলে পায়ের ত্বক শক্ত হয়ে ফেটে যায়।
  • খালি পায়ে হাঁটার কারণে পায়ের গোড়ালি বা পা ফাটা দেখা যায়। দীর্ঘ সময় খালি পায়ে হাঁটলে পায়ের তলার চাপ ও সংঘর্ষের ত্বক মোটা করে ফেলে। যার কারণে পায়ে ফাটা বেশি হয়।
  • আমরা শীতের সময় অতিরক্ত গরম পানি ব্যবহার করি। অতিরক্ত গরম পানির পায়ের ফাটার প্রধান কারণ হতে পারে। গরম পানি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে ফলে পা দ্রুত ফাটে।
  • ডায়াবেটিস ও স্থুলতা এসব রোগের রক্ত চলাচল কমে যায় যা ত্বকের স্বাস্থ্য নষ্ট করে। এ কারণে পায়ের গোড়ালিও দ্রুত ফেটে যায়।
  • ভিটামিন এর ঘাটতি থাকলে পা ফাটে। বিশেষ করে ভিটামিন ই, এ ওমেগা-৩ ফ্যাট এসিডের অভাবে ত্বক শুষ্ক করে তোলে।
  • পায়ের যত্নের অভাবে আমাদের পা ফাটে। কারণ আমরা ঠিকভাবে আমাদের পায়ের যত্ন নি না। পায়ের যত না নেওয়া নিয়মিত পরিষ্কার না রাখা এবং ক্রিম ব্যবহার না করারও বড় কারণ হতে পারে পা ফাটার। 

পা ফাটা রোধে নিয়মিত যত্ন

পা ফাটা রোধ করার জন্য আমাদের সকলের উচিত নিয়মিত পায়ের যত্ন নেওয়া। যেভাবে আমরা ত্বকের যত্ন নিই কিন্তু পায়ের সেভাবে যত্ন নেওয়া হয় না। যার কারণে আমাদের পা ফাটার মতো সমস্যা ভুগতে হয়। ত্বকের পাশাপাশি পায়েরও যত্ন নেওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের সকলের উচিত নিয়মিত পায়ের যত্ন নেওয়া। আসুন নিচে পায়ের যত্ন নেওয়া টিপস গুলো সম্পর্কে জেনে নিন।

আরো পড়ুনঃ শীতকালে ত্বকের যত্নে ৮টি প্রাকৃতিক উপায়

  • প্রতিদিন পা পরিষ্কার রাখাঃ ধুলা-ময়লা ত্বকের শত্রু। রাতে পা ধুয়ে শুকিয়ে ক্রিম লাগান। এতে আপনার পা ফাটা মত সমস্যা ভুগতে হবে না আপনার পা থাকবে নরম ও মসৃণ।
  • মশ্চারাইজার ব্যবহার করুনঃ সকালেও রাতে তেল বা ক্রিম লাগান ত্বক নরম থাকবে। কিন্তু আমাদের নিয়ম করে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ঘরোয়া পদ্ধতি বা বাজারে থেকে ভালো মানের ব্যান্ডের ক্রিম নিয়েছে পায়ের যত্নের জন্য ব্যবহার করতে হবে। এতে পা থাকবে ভালো।
  • খালি পায়ে হাঁটায় এড়িয়ে চলুনঃ অনেকে আছে যারা খালি পায়ে রাস্তাতে হাটে। এমনকি শীতের সময়ও খালি পায়ে হাটে বা যারা গ্রামে তারা জমিতে যেয়ে কাজ করে। এই ধুলাবালীর কারণে পায়ে ফাটা মতন সমস্যা দেখা দেয়। তাই ঘরে বা বাইরে সবসময় নরম স্লিপার ব্যবহার করুন।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুনঃ পর্যাপ্ত পানি পান করা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার। কারণ একজন বয়স্ক মানুষের কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি সারাদিনে খাওয়া উচিত। শরীরের পানি কমে গেলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। এতে করে আমাদের শরীরের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • শীতকালে অতিরিক্ত গরম পানি এড়িয়ে চলুনঃ শীতকাল আসলে আমরা প্রায় সকলে গরম পানিতে গোসল করি। এমন কি গরম পানি ও খায়, গরম পানিতে অজু করি এবং দৈনন্দিন কাজগুলো গরম পানি দিয়ে করার চেষ্টা করি। এতে করে ত্বক আরো বেশি শুষ্ক হয় যার কারণে পা ফাটা সমস্যা দেখা দেয়।
  • সঠিক খাবার খানঃ আমাদের ত্বক ও স্বাস্থ্য কে ভালো রাখতে হলে অবশ্যই আমাদের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গুলো খাওয়া উচিত। যে খাবার খেলে আমাদের স্বাস্থ্যের উপকার হবে। যেমন ভিটামিন ই, সি, ওমেগা-৩ ফ্যাট অ্যাসিড যুক্ত খাবার ত্বকের জন্য ভালো।

 কখন ডাক্তার দেখাবেন

সব ধরনের পা ফাটা ঘরোয়া উপায় সরানো সম্ভব নয়। তাই আপনাদের এমন কিছু পরিস্থিতিতে পড়লে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। পায়ের ফাটলে রক্তপাত বা পুঁজ বের হলে, খাটল গভীর হয়ে ব্যথা বা জ্বালাপোড়া বাড়লে, পায়ে সংক্রমণ, খোলা ভাব বা ত্বক লাল হয়ে গেলে ইত্যাদি এ সমস্যা হলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কারণ এসব সমস্যা থেকে আপনার বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই বড় ধরনের বিপদ হওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস রোগী আছেন এসব সমস্যা হলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

FAQ: প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ কি করলে পা ফাটবে না?

উত্তরঃ প্রতিদিন পা পরিষ্কার করে মশ্চারাইজার বা তেল লাগান এবং খালি পায়ে হাটা এড়ালে পা ফাটবে না। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান ও ভিটামিনযুক্ত খাবার খেলে ত্বক নরম থাকবে ও ফাটার ঝুঁকি কমবে।

প্রশ্নঃ কোন ভিটামিনের অভাবে পা ফাটে?

উত্তরঃ ভিটামিন ই, এ এবং ওমেগা-৩ ফ্যাট অ্যাসিডের অভাবে পা ফাটা সমস্যা দেখা দেয়। এসব ভিটামিন ত্বকের আর্দ্রতা ও কোষ পূর্ণ গঠন সাহায্য করে যা না থাকলে ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়।

প্রশ্নঃ পায়ের গোড়ালি ফাটা হলে কি লবণ পানি খাওয়া যাবে?

উত্তরঃ পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়া সাধারণত ত্বকের সমস্যা, তাই লবণ পানি খাওয়া প্রয়োজন নেই। সঠিক যত্ন হলে পা পরিষ্কার রাখা মাস্টারাইজার বা তেল ব্যবহার করা এবং সংক্রমন এড়িয়ে চলা উচিত।

উপসংহার পা ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায় ৭টি ও কার্যকর সমাধান

পা ফাটা কোন বড় রোগ নয় তবে এটি উপেক্ষা করলে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মিত যত্ন নেয়া এবং প্রাকৃতিক উপায় পায়ের আদ্রতা বজায় রাখা খুবই জরুরী। নারকেল তেল, এলোভেরা, মধু ঘি কিংবা গ্লিসারিনের মতন উপাদানগুলো ত্বকের ভেতর থেকে পুষ্টি যোগায় এবং দ্রুত ফাটল সারিয়ে তোলে। তাই আমাদের ত্বকের পাশাপাশি পায়ের ও বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত।

এ আর্টিকেলে উপরে পা ফাটা দূর করার ঘরোয়া উপায় ও ৭টি কার্যকর সমাধান গুলো আলোচনা করেছি। যদি প্রতিদিন রাতে পা পরিষ্কার করে মশ্চারাইজার লাগিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করেন তাহলে আর কখনো পা ফাটা চিন্তা থাকবে না। আপনার পা হবে সুন্দর, মসৃণ ও স্বাস্থ্যকর। এতে করে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে আর আপনি নিজে বুঝতে পারবেন প্রাকৃতিক যত্নের পার্থক্য। এ আর্টিকেলটা পড়ে আপনার যদি উপকার হয় তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে মতামতি জানাবেন ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সামিজা৪২ কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url