কলার মোচা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
কলার মোচা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানুন। কলা একটু সুস্বাদু ও জনপ্রিয় ফল। আমরা সকলেই কলা খেয়ে থাকি। আপনি কি জানেন কলার একটি ফুল পাওয়া যায় যেটাকে বলা হয় কলার মোচা।
কলা যেমন পুষ্টিকর ফল তেমনি কলার মোচা বা কলার ফুল অত্যন্ত পুষ্টিকর। আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কলার মোচা খাওয়া কতটা উপকার আমরা তা সঠিক জানিনা। এ আর্টিকেলে জানব কলা মোচা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে। চলুন নিচের বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জেনে নিন।
পেজ সূচিপত্রঃ কলার মোচা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে
- কলার মোচা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা
- কলার মোচা খাওয়ার অপকারিতা
- কলার মোচা কি
- কলার মোচার পুষ্টিগুণ
- কিভাবে নিরাপদে কলার মোচা খাওয়ার উপায়
- গর্ভবতী নারী ও শিশুদের জন্য মোচা উপযোগী খাবার
- কলার মোচা সংরক্ষণের পদ্ধতি
- কলার মোচা রান্নার রেসিপি
- FAQ: প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
- শেষ কথা কলার মোচা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
কলার মোচা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা
আমাদের দৈনিন্দন জীবনে কলা একটি পরিচিত এবং পুষ্টিকর ফল হিসেবে স্থান করে
নিয়েছে। কলা তো সবাই খায় কিন্তু কলার ফুল কয়জন খায়। কলার মোচা খাওয়া
সম্পর্কে এখনো অনেক মানুষ ভালোভাবে জানে না। তবে গ্রামের মানুষ কলার মোচা খেয়ে
থাকে। কলা গাছের কলা এবং মোচা বিভিন্ন সবজির সাথে খেয়ে থাকি। কলার মোচায়
যে পুষ্টিগুনগুলো রয়েছে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার। কলা মোচা খাওয়ার
উপকারিতা গুলো সম্পর্কে আলোচনা করি।
রক্তের কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণঃ কলার মোচায় থাকা ফাইবার ও
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে আমাদের রক্তের যে খারাপ কোলেস্টেরল
গুলো আছে যেগুলো কমাতে সাহায্য।
হজম শক্তি বাড়ায়ঃ কলার মোচাতে উচ্চমাত্রায় ফাইবার থাকে যা হজম শক্তি উন্নত
করে। এর কারনে শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ কমাতে সাহায্য করে। আমাদের পেটে অনেক সময়
দেখা যায় পেটের সমস্যার কারণে পায়খানা ঠিক মতন হয় না। আবার যাদের পেট পরিষ্কার
হয় না অথবা গ্যাসের সমস্যা থাকে তাদের জন্য কলার মোচা খাওয়া অনেক উপকার।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ কলার মোচা একটি লো গ্লাইসেমিক সূচক যুক্ত খাবার। আবার
কলার মোচায় থাকা প্রাকৃতিক আঁশ রক্তের শর্করার মাত্রা ধীরে বাড়াতে সাহায্য
করে। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কলার
মোচা অত্যন্ত উপকারী খাবার।
রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ এখনো অনেক মানুষ আছে যাদের শরীরের ঠিকভাবে রক্ত উৎপাদন হয়
না। যার কারণে শরীরে শক্তি আসে না। এতে করে বিভিন্ন রোগের সম্মুখ হতে হয়।
আবার অনেক সময় শরীরের রক্ত না থাকার কারণে রক্তশূন্য হয়ে মানুষ মারা যায়।
এ রক্তস্বল্পতা দূর করার জন্য কলার মোচা অত্যন্ত উপকারী খাবার। কলার মোচাতে
রয়েছে আয়রন যার রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। তাই যাদের
রক্তসল্পতা আছে তারা নিয়মিত কলার মোচা খেতে পারে।
মাসিক অনিয়ম ও ব্যথা কমায়ঃ অনেক মেয়ে আছে যাদের মাসিকে অনিয়ম ও প্রচুর ব্যথা
হয় পিরিয়ডের সময়। আবার অনেক সময় মেয়েদের প্রচুর রক্তপাত হয়। এসব
সমস্যা সমাধানের জন্য কলার মোচা একটি উপকারী খাবার। যাদের অনিয়মিত মাসিক
এবং পিরিয়ডের সময় প্রচুর ব্যথা হয় তাদের জন্য এটি একটি উপযুক্ত খাবার। এবং সেই
সাথে মেয়েদের পিরিয়ডের পরে মেনোপজের হাড় গঠনের মজবুত
করতে সহায়তা করে।
আরো পড়ুনঃ
কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার ১০টি উপকারিতা এবং অপকারিতা
হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখেঃ বর্তমানে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কারণ
ভেজালযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে। কিন্তু কলার মোচা এটি একটি
প্রাকৃতিক সবজি। কলার মোচায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পটাশিয়াম প্রচুর
পরিমাণে থাকে। যা খেলে মানুষ উচ্চ রক্তচাপ থেকে রেহাই পাবে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি
থেকে অনেকটাই সাহায্য পাবে।
শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহায়তা করেঃ আমাদের শরীরে ভেতরে একটা বিষাক্ত
পদার্থ থাকে। যার কারণে স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। শরীরে বিভিন্ন রোগের বাসা
বাঁধে। সে বিষাক্ত পদার্থের কারণে শরীর ও স্বাস্থ্য কোনটাই ভালো থাকে না। কলার
মোচাতে মেনহলের মতো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যার কারণে শরীর থেকে
যে বিষাক্ত পদার্থ থাকে তা দূর করতে সাহায্য করে।
ত্বক ও চুলের উন্নতিঃ কলার মোচা তে রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। কলার মোচাতে
থাকা পুষ্টি উপাদান ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে এবং চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে।
হরমোনের ব্যালেন্সে সহায়তা করেঃ কলার মোচায় বিশেষ করে নারীদের
ক্ষেত্রে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম
ও ভিটামিন B6 নারীদেরPCOS বা মাসিক অনিয়মের ক্ষেত্রে হরমোনকে স্থিতিশীল
রাখতে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধঃ বর্তমানে ক্যান্সার রোগ এখন প্রায় মানুষের। হচ্ছে এটা এমন
একটা মরণব্যাধি রোগ যা ওষুধ খেয়েও নিরাময় করা যায় না। যার ফলে যে
ক্যান্সার আক্রান্ত হচ্ছে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে আগিয়ে যাচ্ছে। কলার মোচায়
ফ্ল্যাভোনয়েড,পলিফেনল ইত্যাদি বিভিন্ন পুষ্টিগণ রয়েছে। যা কেন ক্যান্সার কোষ
গঠনের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে। বিশেষ করে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সম্ভাবনা
দেখাচ্ছে।
কলার মোচা খাওয়ার অপকারিতা
কলার মোচা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম। এখন জানবো অপকারিতা গুলো।কলার
মোচা খাওয়া শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কলার মোচায় যে পুষ্টিগুণগুলো রয়েছে
তা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। যদিও গবেষণায় দেখা গেছে কলার মোচা
খাওয়ার কোন অপকারিতা নাই। কিন্তু অতিরিক্ত খেলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে।
কলার মোচায় নয় যে কোন খাবার অতিরিক্ত খেলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। তাই খাবার
খাওয়ার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে অতিরিক্ত খাবার না খাওয়া।
অতিরিক্ত কলার মোচা খেলে স্বাস্থ্যের কি কি ক্ষতি হয় তা এখন জানবো।
- কলার মোচায় অতিরিক্ত আয়রন থাকে। যদি আপনার শরীরে আয়রনের মাত্রা বেশি থাকে, তবে এটি ক্ষতিকর হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
- যাদের পেট ব্যথা, পেট ফাঁপা, গ্যাস বা হজমের সমস্যা আছে তাদের অতিরিক্ত খাবার খাওয়া ঠিক না। তেমনি কলার মোচায় আঁশ রয়েশ। তাদের জন্য অতিরিক্ত কলার মোচা খাওয়া সমস্যার কারণ হতে পারে।
- কলার মোচা যখন রান্না করবেন ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে রান্না করতে হবে। না হলে মোচায় থাকা রাসায়নিক পদার্থ ও কীটনাশক শরীল ও স্বাস্থ্য দুটোই খারাপ করে দেবে।
- মানুষের শরীরে কলার মোচা খাওয়ার পরে এলার্জি সমস্যা হতে পারে। যেমন চুলকানি, গ্যাস, গলা ফুলে যাওয়া,র্যাশ, শরীর লাল লাল হয়ে যাওয়া বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই যাদের এসব সমস্যা আছে কলার মোচা নির্দিষ্ট পরিমাণে খাবেন।
কলার মোচা কি
কলার মোচা হল কলা গাছের একটি ফুল। কলা বের হওয়ার আগে এই ফুলের মোচাটা বের হয়।
এটা দেখতে অনেকটা বাইরের দিক থেকে খোসা পাকানো লম্বা একটি অংশ। যেটা কাটলে ওর
ভিতরে ছোট ছোট ফুল দেখতে পাওয়া যায়। এ ফুলের রংটা অনেক সুন্দর। যা দেখতে
আকর্ষণীয় মনে হয়। কলার ফুলটা রান্না করার আগে আলাদা করে ছাড়িয়ে নিতে হয়।
তারপর ভালোভাবে পরিষ্কার করে রান্না করলে একটি সুস্বাদু খাবার হয়।
কলার মোচার পুষ্টিগুণ
কলার মোচা তো খায় কিন্তু কলার মোচায় যে পুষ্টিগুন বা উপাদান গুলো রয়েছে আমরা তা জানি না। কলার মোচায় রয়েছে ভিটামিন বি৬, সি, ই, প্রোটিন, ফাইবার এবং আয়রন সহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা শরীরকে সুস্থ রাখে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং শরীরে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে।কলা মোচাতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান কলার মোচাকে একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের পরিণত করেছে।
কিভাবে নিরাপদে কলার মোচা খাওয়ার উপায়
কলার মোচা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কিন্তু সঠিকভাবে যদি কলার মোচা রান্না
করা না হয় তাহলে এটা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। তাই রান্না করার সময়
অবশ্যই সঠিক পদ্ধতি উপায় জানতে হবে। আপনি যদি সঠিকভাবে প্রস্তুত করেন
তাহ কলার মজা নিরাপদে ও উপায়ে একটি খাবারে পরিণত হয়।
- প্রথমে কলার মোচাটা গাছ থেকে পেড়ে নিতে হবে। তারপরে কলার ফুলগুলো ছোট করে আলাদা করে নিতে হবে।
- কলার মোচা কাটা হয়ে গেলে সেগুলো আপনি একটা পাত্রে রাখবেন। রাখার পরে লবণ ও হলুদ পানিতে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন।
- তারপরে কালারফুল গুলোকে ৪-৫ বার ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন।
- আপনি রান্না করার সময় অন্যান্য মসলার সাথে আদা, রসুন, পেঁয়াজ কুচি এবং নারকেলের গুড়ো দিয়ে রান্না করলে খাবারের স্বাদ আরো বেড়ে যায়।
- ছোট বাচ্চাকে খাওয়ানোর আগে বা যারা গর্ভবতী আছে তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াবেন কলার মোচা।
গর্ভবতী নারী ও শিশুদের জন্য মোচা উপযোগী খাবার
কলার মোচা হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক সবজি। কলাতে যেমন প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে
তেমনি কলার মোচায় বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ও উপাদান রয়েছে। কলার মোচার দামে
সস্তা। কিন্তু একটি পুষ্টিকর খাবার। যা গর্ভবতী ও শিশুদের জন্য উপযুক্ত খাবার।
কলার মোচাতে প্রচুর পরিমাণ আয়রন রয়েছে। গ্রামবাংলায় কলার মোচা প্রায় দেখা
যায়। কিন্তু শহরে খুব একটা পাওয়া যায় না।
গর্ভবতী মহিলারা নিয়মিত কলার মোচা খেলে কলায় যে পরিমাণ আয়রন আছে তা তাদের
স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে সেই সাথে শিশুর
মস্তিষ্কে গঠনের কাজে সহায়তা করে। মায়ের পেটে সন্তান যখন থাকে
সন্তানের শরীরের পুষ্টি বৃদ্ধির জন্য পুষ্টিকর জাতীয় খাবার খাওয়া
উপযোগী।
কলার মোচা সংরক্ষণের পদ্ধতি
বর্তমানে মানুষ এখন সবজি বা খাবার সবকিছু ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখে। এতে করে মানুষের অনেক সুবিধা হয়েছে। বিভিন্ন খাবার বিভিন্নভাবে ফ্রিজের সংরক্ষণ করে রাখছেন। তেমনি কলার মোচা খুব দ্রুত কালচে হয়ে যায় কেবল নষ্ট হতে শুরু করে। তাই এটি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করার জরুরী। আপনি যদি কলার মোচা বেশি দিন সংরক্ষণ করে রাখতে চান তাহলে নিচের কয়েকটি সংরক্ষণের পদ্ধতি দেওয়া হলো।
কলার মোচা কাটার পরে সেটি কি ভালোভাবে ধুয়ে লবণ হলুদ মেশানো পানিতে ১৫-২০ মিনিট
ভিজিয়ে রাখুন। এতে করে কলার মোচা যে কালকে ভাবটা সেটা চলে যাবে। যখন এটি পানি
ঝরে শুকিয়ে যাবে তখন একটি বাটিতে ভরে রেখে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। এভাবে
রাখলে আপনি ২-৩ দিন পর্যন্ত ভালো থাকবে।
আবার কলার মোচার বাইরের খোলস ফেলে দিয়ে ফুলটা ছোট ছোট করে কেটে আলাদা করে নিন।
ছোট ছোট করে কাটা হয়ে গেলে পলাথিন ব্যাগে ভরে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন। এভাবে
রাখলে আপনি ২০ দিনের মতন সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন।
প্রথমে মোচা গুলোকে সিদ্ধ করে ঠান্ডা করে নিন। তারপরে একটি এয়ার টাইট কন্টেইনারে
ভরে মুখ লাগিয়ে সুন্দর করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। এতে করে ৪-৫ দিন ভালো থাকবে।
আপনি যদি মনে করেন রান্না করার মোচা সংরক্ষণ করতে চান তাহলে প্রথমে ঠান্ডা
করে নিন তারপরে একটি বাটিতে সুন্দর করে ভরে ডিপ ফ্রিজে রেখে দেন। আপনি অন্তত এক
সপ্তাহ সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন রান্না করার মোচা।
কলার মোচার রান্নার রেসিপি
কলার মোচা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। এখন জানবো কলার মোচা রান্নার
রেসিপি সম্পর্কে।অনেকেই কলার মোচা রান্না করে। এক একজনের রান্নার একাদ রকম স্বাদ।
আমি আপনাদের কলার মোচা রান্নার রেসিপি আলোচনার মাধ্যমে জানাবো।
কিভাবে সুস্বাদু কলার মোচা রান্না করা যায় যা আমাদের শরীরের জন্য পুষ্টিকর
খাবার। চলুন তাহলে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করি।
কলার মোচা রান্না করতে যা যা উপকরণ লাগবে তা হল কলার মোচা ১টি, পেঁয়াজ কুচি ১/২
কাপ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, শুকনো লঙ্কা,কাঁচা মরিচ স্বাদমতো,
হলুদ গুঁড় ১/২ চা চামচ, লাল মরিচের গুঁড়ো ১/২ চা চামচ, ধনে গুঁড়ো১ চা চামচ,
জিরা গুঁড় আপনার ইচ্ছা মত, নারিকেল কোরা আপনার ইচ্ছা মত, বেসন ২ চা চামচ, তেল
পরিমাণ মতো, লবণ স্বাদমতো এবং ঘি ১ চা চামচ আপনি চাইলে আপনার পছন্দ অনুযায়ী
দিতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ
সকালে খালি পেটে কাঠবাদাম খাওয়ার ১০টি উপকারিতা
প্রস্তুত প্রণালী রান্নার পদ্ধতি। প্রথমে কলার মোচার খোসা গুলো ফেলে দিন। কলার
ফুল গুলোকে ছোট ছোট অংশে কেটে ফেলুন। আপনি যখন কলার ফুল গুলো কেটে পরিষ্কার
পানিতে লবণ দিয়ে রাখবেন তখন আপনার কলার ফুলের যে একটা কালো কস সেটা বের হয়ে
যাবে।
তারপরে পানি থেকে তুলে পানি শুকানোর জন্য একটি পাত্রে রাখুন। এরপর
চুলাই দিয়ে হালকা সিদ্ধ করে নিন। সিদ্ধ করা পানিটা ফেলে দিয়ে কলার ফুল গুলো
ঠান্ডা করে নিন।
একটি কড়াইতে তেল গরম করে পিয়াজ কুচি দিন। হালকা ভাজা হলো রসুন ও আদা বাটা যোগ
করুন। এরপর হলুদ, মরিচ, ধোনে, জিরা গুঁড়ো দিয়ে ভালোভাবে কষান। নারিকেল কোড়া
দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে মসলা মিশিয়ে নিন। এর পরে নারকেল কোড়া দিয়ে ভালোভাবে কষে
নিন। প্রয়োজনে আপনি ১-২ চামচ বেসুন দিয়ে দিনে এতে শুকনো ঘন্ট তৈরি করুন।
তারপরে ঢেকে দিয়ে এবং মাঝারি আগে ১০-১৫ মিনিট রান্না করুন। পানি শুকিয়ে গেলে
উপরে একটু ঘি ছিটিয়ে দিন।
রান্না হয়ে গেলে গরম ভাত, রুটি বা পরোটার সাথে পরিবেশন করুন। এটা খেলে আপনার
স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার হবে। এ রান্নাটা আপনি কম সময়েও কম উপকরণ করতে
পারবেন।
FAQ: প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্নঃ প্রতিদিন একটি কলার মোচা খাওয়া যাবে কি?
উত্তরঃ হ্যাঁ, প্রতিদিন একটি কলার মোচা খাওয়া যেতে পারে। তবে সঠিকভাবে পরিষ্কার ও রান্না করা হলে। তবে যাদের গ্যাস আছে তাদের নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী খাওয়া ভালো।
প্রশ্নঃ মোচা কতটা স্বাস্থ্যকর খাবার?
উত্তরঃ কলার মোচা অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার। মোচায় যে পুষ্টিগুণ
উপাদান রয়েছে সেগুলো আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী।
প্রশ্নঃ মোচা কে হার্টের জন্য ক্ষতিকর?
উত্তরঃ না, মোচা হাটের জন্য ক্ষতিকর নয় বড় হার্টের জন্য উপকারী খাবার।
মোচায় থাকা পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগের
ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। তবে পরিমাণ মতন খাওয়া ভালো।
শেষ কথা কলার মোচা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
কলার মোচা এমন একটি খাবার যা সাশ্রয় সহজে পাওয়া যায় এবং পুষ্টিতে ভরপুর। কলার
মোচা খেলে শরীরের বিভিন্ন চাহিদা মেটাতে সক্ষম এবং নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস গড়ে
তুলুন। তাহলে আপনার শরীরকে সহজে রোগ মুক্ত করে রাখবে। তাই আমাদের খাদ্যের
তালিকায় প্রতিদিন না হলেও দুই থেকে তিন দিন স্বাস্থ্যের উপকারিতা জন্য কলার
মোচা খাওয়া ভালো।
আর্টিকেলে উপরে কলার মোচা খাওয়ার ১০টি উপকারিতা এবং অপকারিতা ও বিভিন্ন
পুষ্টিগুণ ও উপাদান সম্পর্কে আলোচনা করেছে। আপনি যদি শরীর ও স্বাস্থ্য ভালো রাখতে
চান তাহলে আজ থেকে আপনার খাবারের তালিকায় কলার মোচা রাখার চেষ্টা করুন। এতক্ষণ
মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

সামিজা৪২ কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url