শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য এবং শবে কদরের আমল ও দোয়া
শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য এবং শবে কদরের আমল ও দোয়া সম্পর্কে জানব। সামনে রমজান মাস আসছে। রমজান মাসে শেষ দশকের রমজান এর বেজোড়া তারিখে হল শবে কদরের রাত।যেখানে সকল মুসলমানেরা আল্লাহর কাছে তাদের পাপের ক্ষমা চেয়ে থাকে।
শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য আমাদের মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তায়ালা এত মহান আমাদের পাপের ক্ষমার জন্য এই শবে কদরের আমল ও দোয়া করার তৌফিক দান করেছে।এখন নিচে জানবো শবে কদরের রাতে কি করতে হবে তার বিস্তারিত আলোচনা মাধ্যমে।
পেজ সূচিপত্রঃ শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য এবং শবে কদরের আমল ও দোয়া
- শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য সম্পর্কে
- শবে কদরের পরিচয়
- শবে কদরের বিশেষ মাহাত্ম্য
- শবে কদরের আমল
- শবে কদরের বিশেষ দোয়া
- শবে কদরের অন্যান্য দোয়া ও মোনাজাত
- শবে কদরের সময় নির্ধারণ
- শবে কদর থেকে শিক্ষা
- FAQ: প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন উত্তর
- শেষ কথা শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য এবং শবে কদরের আমল ও দোয়া
শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য সম্পর্কে
শবে কদরের ফজিলত ও মর্যাদা অনেক। আমরা যদি মুসলমানেরা সঠিকভাবে শবে কদরের রাত পালন করতে পারি তাহলে আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল গুনাহ মাফ করে দেবেন। শবে কদরের পালন করার ফজিলত বা সওয়াব সব থেকে বেশি। শবে কদরের ফজিলত কোরআন ও হাদিস আলোকে অত্যন্ত বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে।
কোরআনে আলোকে ফজিলত অনেক। আল্লাহ তাআলা বলেন," নিশ্চয়ই আমি এ কুরআনকে অবতীর্ণ করেছি সবে কদরে। আর আপনি কি জানেন শবে কদর কি? শবে কদর হচ্ছে সেই রাত, যা এক হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।" (সূরা আল কদর ১-৩) এ আয়াত দ্বারা বোঝা যায় যে, এক রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের সমান। হাজার মাস মানে প্রায় ৮৩ বছর চার মাস যায় একজন মানুষ পুরো জীবনের সমান বা তারও বেশি।
আরো পড়ুনঃ
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফজিলত
- শবে কদরের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসের আলোকে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন," যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় সবে কদরের ইবাদত করে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।" (বুখারী, মুসলিম)
- অন্য এক হাদীসে নবী (সাঃ) বলেছেন," শবে কদরকে রমজানের শেষ দশকের বিজো রাতগুলোকে খুজে নাও।"(বুখারী) অর্থাৎ এই রাত একটি নির্দিষ্ট রাত নয়, বরং আল্লাহর রহমতে লাভের আশায় শেষ দশকে বিজয়ের রাতগুলোতে ইবাদতের মাধ্যমে একটি খোজার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
- এতক্ষণ জানলাম আমরা শবে কদরের ফজিলত সম্পর্কে এখন আমরা নিচে জানব তার তাৎপর্য সম্পর্কে। শবে কদরের তাৎপর্য সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
- কুরআন নাযিলের রাতঃ শবে কদর হল সেই পবিত্র রাত, যেদিন আল্লাহুতালা মানব জাতির জন্য চূড়ান্ত দিক নির্দেশনা আল কোরআনের নাযিল করেন। এটি ছিল মানবতার জন্য সবচেয়ে বড় রহমত ও আলো।
- তাকদির নির্ধারিত রাতঃ এ রাতে আল্লাহু তায়ালা এক বছরের জন্য সব বিষয়ে নিয়তি নির্ধারণ করেন। যেমন কে বাঁচবে, কে মরবে, কার রিজিক কত হবে, কার সুখ দুখ কেমন হবে ইত্যাদি।
- ফেরেস্তাদের অবতরণঃ আল্লাহ বলেন, " এ রাতে ফেরেশতাগন ও রুহুল আমিন (জিব্রাইল আঃ) অবতীর্ণ হয় তাদের প্রতিপালকের আদেশে, সকল বিষয়ে।"(সূরা আল কদরঃ৪) অর্থাৎ এই রাতে দুনিয়ার আসমানে ফেরেশতারা নেমে আসে এবং মুমিনদের জন্য দোয়া ও রহমত প্রার্থনা করে।
- শান্তি ও প্রশান্তির রাতঃ" এ রাতটি পূর্ণ শান্তি, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত স্থায়ীও।"(সূরা আল কদরঃ৫) এ রাতে আল্লাহর রহমত, শান্তি ও ক্ষমা বর্ষিত হয় এটি মুমিনদের আত্মাকে পরিশুদ্ধি করে।
শবে কদরের পরিচয়
শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের শবে কদরের পরিচয় সম্পর্কে
জানা লাগবে।ইসলাম ধর্মের কিছু বিশেষ রাত ও দিন রয়েছে, যেগুলোর ফজিলত অসীম। যার
মধ্যে সবচেয়ে মর্যাদা পুনরাত হলক হবে কদর বা লাইলাতুল কদর। লাইলাতুল কদর আরবি
শব্দ যার অর্থ মর্যাদার রাত বা নিয়তি নির্ধারণের রাত। এ রাতে গুরুত্ব এত
বেশি যে, আল্লাহ তায়ালা কুরআনের পুরো একটি সূরা নাযিল করেছেন এর মহিমা
বর্ণনা করতে সূরা আল কদর।
শবে কদরের বিশেষ মাহাত্ম্য
শবে কদরের বিশেষ মাহাত্ম্য বর্ণনা অনেক। এর ফজিলত বা আমল যদি সঠিকভাবে করতে
পারি তাহলে আমরা আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারব। এ রাত যদি আমরা সঠিকভাবে
আল্লাহর দেওয়া কোরআনের আলোকে বা হাদিসের সম্পর্কে পালন করতে পারি তাহলে
আমরা আল্লাহর মর্যাদা ও রহমত দুটোই লাভ করতে পারব। চলুন নিচের জেনে নিই শবে
কদরের বিশেষ মাহাত্ম্য গুলো কি কি।
- এই রাত মুমিনদের জন্য এক বিশাল সুযোগ। সারা বছরের গুনাহ মাফের দরজা উন্মুক্ত থাকে।
- ইবাদতের মাধ্যমে একজন মানুষ তার জীবনের অগণিত ভুলত্রুটি ক্ষমা পাওয়ার সুযোগ পাই।
- এটি আত্মার নবজন্মের মতো। যেখানে মুমিন বান্দা নতুন উদ্যমে আল্লাহর পথে ফিরে আসে।
- এই রাতে ইবাদত আমাদের জীবনের গুনাহ গুলোকে ক্ষমা করার রাত। যার সুযোগ আমাদের আল্লাহুতালা দিয়েছেন।
- এ রাত যদি আমরা সঠিকভাবে পালন করতে পারি তাহলে আল্লাহু আমাদের ওপর খুশি হবেন এবং তার রহমত লাভ করতে পারবো।
শবে কদরের আমল
আমরাও উপরে এতক্ষণ শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য এবং শবে কদর পরিচয় সম্পর্কে
জানলাম। এখন আমরা জানবো শবে কদরের আমল সম্পর্কে। শবে কদরের রাতে কি আমল করলে আমরা
আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারব সেটা আমাদের জানাও জরুরী। শবে কদরাত ইবাদতে
কাটানোর এর মূল তাৎপর্য। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল বর্ণনা করা হলো শবে
কদরের রাতের।
- নামাজ ও নফল সালাতঃ যতটা সম্ভব বেশি নফল নামাজ আদায় করা উচিত। দুই রাকাত করে ইচ্ছামত নামাজ পড়া যায়। প্রতিটি নামাজে কোরআন আয়াত তেলাওয়াত করা ও দোয়া করা বিশেষ ফজিলত পূর্ণ।
- কোরআন তিলাওয়াইঃ যেহেতু এই রাতে কোরআন নাযিলের রাত, তাই কুরআন পাঠ ও অর্থসহ চিন্তা ভাবনা কর সবচেয়ে উত্তম আমল।
- জিকির ও তাসবিহঃ আল্লাহ স্মরণে মুখে ব্যস্ত রাখা, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এসব তাসবিহ যত বেশি সম্ভব পাঠ করা উচিত।
- দুরুদ শরীফ পাঠঃ রাসুল (সাঃ) এর প্রতি দুরুদ পাঠ করলে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ হয়।
- তওবা ও ইস্তেগফারঃ এ রাত ক্ষমা লাভের রাত। তাই আন্তরিকভাবে নিজের গুনাহর জন্য কেঁদে কেঁদে তওবা করা সর্ব উত্তম কাজ। জায়নামাজে বসে শবে কদর রাতে আল্লাহর কাছে নিজের গুনাহ ক্ষমা চেয়ে চোখের পানি ফেলে আল্লাহর কাছে চাইতে হবে। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে পারলে আল্লাহর রহমত লাভ করা যাবে।
- দান সদকাঃ যাদের সামর্থ্য আছে। তারা গরীব-দুঃখীদের সহায়তা করতে পারেন। এ রাতে দান করলে তার সওয়াব বহুগুণ বেড়ে যায়।
শবে কদরের বিশেষ দোয়া
হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন আমি নবী করিম (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম," হে আল্লাহ রাসূল,
যদি আমি জানতে পারি যে এটি লাইলাতুল কদর তাহলে আমি কি দোয়া করব।" রাসূল (সাঃ)
বলেন,
" আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফুওয়া,ফা'ফু 'আন্নি।"অর্থঃ " হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, অতএব আমাকে ক্ষমা করুন।
এই সংক্ষিপ্ত কিন্তু গভীর অর্থবহ দোয়া শবে কদর রাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
আমল।
শবে কদরের অন্যান্য দোয়া ও মোনাজাত
শবে কদরে এমন একটি রাত যেদিন আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের জন্য ক্ষমা, রহমত
ও মুক্তির দরজা খুলে দেন। এ রাতে যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে দোয়া করে আল্লাহ তার
দোয়া কবুল করেন। এ রাতে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সর্বাধিক
নিকটে ঘনিষ্ঠ হতে পারে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও সহজ দোয়া ও মোনাজাত দেওয়া হলো
যেগুলো শবে কদর রাতে গভীর মনোযোগ ও কান্নাকাটি সহকারে করা যায় আল্লাহর কাছে
গুনাহ মাফের জন্য।
- এ রাতে মূল বিষয় হলো ক্ষমা চাওয়া। । যে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় আল্লাহ তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন। দোয়াটি হলো, আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন করীমুন,তুহিব্বুল আফওয়া,ফা'ফু'আন্নী।অর্থঃ " হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল, আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন তাই আমাকে ক্ষমা করুন।ব্যাখ্যাঃ এ দোয়াটি হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এটি শবে কদরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বেশি পাঠ্যযোগ্য দোয়া। যত বেশি সম্ভব এ দোয়াটি কাদো কন্ঠে বারবার পড়া উচিত।
- গুনাহ মাফের জন্য দোয়া, আস্তাগফিরুল্লাহা রব্বি মিন কুল্লি জাম্বিন ওয়া আতুবু ইলাইলিঅর্থঃ " আমি আমার প্রতিপালকের নিকটে সকল গুনাহ থেকে ক্ষমা চাই এবং তার দিকে ফিরে আসি।"ব্যাখ্যাঃ এ দোয়াটি আত্মা শুদ্ধির দোয়া। এটি পাঠ করলে বান্দার অন্তর নম্র হয় এবং গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়ার তাওফীক আসে।
- দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের দোয়া,রব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাওঁ, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাওঁ, ওয়াকিনা আযাবান্নার।"অর্থঃ " হে আমার প্রতিপালক, আমাকে দুনিয়াতে ভালো দান করুন, আখিরাতও ভালো দান করুন এবং আমাদের আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন।ব্যাখ্যাঃ এ দোয়াটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু অত্যন্ত অর্থবহ। এতে দুনিয়া সুখ, আখেরাতে সাফল্য ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির তিনটির চাওয়া রয়েছে।
- রিজিক ও হেদায়েতের দোয়া, "আল্লাহুম্মা রযুকনী রিযকান হালালান তইয়্যিবান ওয়াসিআ'ন"। অর্থঃ হে আল্লাহ আমাকে হালাল, পবিত্র ও পর্যাপ্ত রিজিক দান করুন।ব্যাখ্যাঃ শবে কদর রাতে রিজিকের ভাগ্য নির্ধারিত হয় তাই হালাল রিজিক ও বরকতের জন্য দোয়া করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- দিন ও ঈমানের দৃঢ়তার দোয়া, " আল্লাহুম্মা সাব্বিত কালবী ' আলা দীনিক"। অর্থঃ " হে আল্লাহ আমার হৃদয়কে আপনার দিনের উপর স্থির রাখুন।ব্যাখ্যাঃ এই দোয়াটি নবী করিম (সাঃ) নিজে প্রায় পাঠ করতেন। কারন ঈমানকে দৃঢ় রাখা আল্লাহর সবচেয়ে বড় অনুগ্রহ।
- রোগ ও বিপদ থেকে রক্ষার দোয়া, "আল্লাহুম্মা ইশফিনী শিফা'আন লা ইউগাদিরু সাকামা।" অর্থঃ " হে আল্লাহ আমাকে এমন আরোগ্য দিন যা কোন রোগের অবশিষ্ট রাখবে না।ব্যাখ্যাঃ এ দোয়াটি নিজের ও পরিবারের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত উপকারী।
- পিতা মাতা ও পরিবারের জন্য দোয়া, " রব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানী সাগীরা।" অর্থঃ " হে আমার প্রতিপালক যেভাবে তারা শেষ হবে আমাকে লালন পালন করেছেন তেমনি তাদের প্রতি দয়া করুন ।ব্যাখ্যাঃ এ দোয়াটি আল্লাহতালা কোরআনে নিজের শিক্ষা দিয়েছেন। শবে কদরের রাতে পিতা-মাতার জন্য দোয়া করলে তা বিশেষভাবে কবুল হয়।
- উম্মাহর শান্তি ও ঐক্যের দোয়া, " আল্লাহুম্মা আসলিহ হালা আল-মুসলিমীন, ওয়াহহিদ সুফূফাহুম।" অর্থঃ " হে আল্লাহ মুসলমানদের অবস্থা উত্তম করে দিন এবং তাদের হৃদয়গুলো ঐক্যবদ্ধ করে দিন।ব্যাখ্যাঃ এ দোয়াটি মুসলিম সমাজের কল্যাণ ও ঐক্যের জন্য। শবে কদর রাতে উম্মাহর জন্য দোয়া করে নবী সুন্নাহের অংশ।
- মৃত্যুর পর ক্ষমা ও জান্নাতের জন্য দোয়া, " আল্লাহুম্মাজ'আল কবরি রওজাতাম মিন রিয়াদিল জান্নাহ,ওয়া লা তাজ'আলহু হুফরাতাম মিন হুফারিন নার।" অর্থঃ" হে আল্লাহ আমার কবরকে জান্নাতের একটি বাগান দিন,জাহান্নামের গর্ত বানাবেন না।"ব্যাখ্যাঃ শবে কদর রাতে আখেরাতের মুক্তিচার সর্ব উত্তম সময়। মৃত্যুর পর শান্তির জন্য এ দোয়াটি বিশেষভাবে পাঠ করা উচিত।।
- শবে কদরের মোনাজাতঃ নিচের মোনাজাতটি নিজের ভাষায় আল্লাহ সামনে কান্নাকাটি করে পড়া যেতে পারে" হে আল্লাহ, আপনি আমার প্রতিপালক আমি আপনার অক্ষম বান্দা। আমি ভুল করেছি, গুনাহ করেছি তবু আপনার দরজায় এসেছি। হে আল্লাহ আমার অতীতে সব গুনাহ ক্ষমা করুন, আমার হৃদয়ে আপনার পথে স্থির রাখুন। আমার বাবা-মা, পরিবার ও প্রিয়জনদের ক্ষমা করুন। আমাদের রিজিকের বরকত দিন, রোগ শোক দূর করুন। এই সবে কদরের রাতে আমাদের সবাইকে আপনার রহমত ও জান্নাতের যোগ্য করে দিন। হে আল্লাহ আমাদের জীবনের শেষ যেন ঈমানের সাথে হয় এবং আখেরাতে যেন নবী করিম (সাঃ) এর সান্নিধ্য লাভ করি।" আমিন হে রুহুল আলামিন।
শবে কদরের সময় নির্ধারণ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, " শবে কদরকে রমজানের শেষ দশকের বিজয়ের রাতগুলোকে
খুঁজে নাও।" (বুখারী) অর্থাৎ ২১,২৩,২৫,২৭,২৯ তম রাতগুলোকে শবে কদর হতে পারে।
যদিও অনেকে আলমের মতে ২৭ শে রমজান সবচেয়ে সম্ভবত রাত কিন্তু নিশ্চিতভাবে কোন
নির্দিষ্ট রাত নির্ধারিত নয়। তাই মুমিনদের উচিত শেষ দশকের প্রতিটি রাত
ইবাদতের কাটানো।
আরো পড়ুনঃ
নবজাতক ইসলামিক মেয়েদের সুন্দর নাম অর্থসহ
শবে কদর থেকে শিক্ষা
জীবনের লক্ষ্য যেন শুধুমাত্র দুনিয়ারই না হয় বরং আখিরাতে যেন প্রস্তুত নেয়া
জরুরি। ইবাদতের মাধ্যমে আত্মাকে পবিত্র কর অহংকার ও গুনাহ থেকে মুক্ত হওয়া।
সমাজে দয়া, নাই ও সেবা ছড়িয়ে দেওয়া। শবে কদরের শিক্ষা হলো এক রাতের আন্তরিক
এবাদত সারা জীবনের রূপান্তর ঘটাতে পারে। তাই আমাদের শবে কদর রাতগুলোতে বেশি বেশি
করে দোয়া করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে কান্না করে জীবনের ক্ষমা চাইতে হবে।
FAQ: প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্নঃ কদরের রাতে নামাজের নিয়ম কি?
উত্তরঃ লাইলাতুল কদর রাতে সেরকম কোন নামাজের নিয়ম নাই। তবে দুই রাকাত করে নফল
নামাজ মনোযোগ সহকারে পড়তে হয়।
প্রশ্নঃ সূরা কদরের ফজিলত কি?
উত্তরঃ সূরা কদরের ফজিলত হল এটি হাজার মাসের ইবাদত চেয়ে উত্তম এবং এ রাতে
ফেরেস্তারা পৃথিবীতে নেমে আসেন।
প্রশ্নঃ কদর শব্দের অর্থ কি?
উত্তরঃ কদর শব্দের একাধিক অর্থ রয়েছে যার মধ্যে প্রধান হল সম্মান, মর্যাদা ও
মূল্য। এ ছাড়া এর অন্যান্য অর্থ হলো সমাদর আদর যত্ন এবং পরিমাপ। ইসলামিক
পরিভাষায় কদর হল তাৎপর্যপূর্ণ।
শেষ কথা শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য এবং শবে কদরের আমল ও দোয়া
শবে কদর আল্লাহর এক অমূল্য উপহার। মর্যাদা এক হাজার মাসের সমান। এ রাতে আল্লাহু
দরবারে ফিরে যাওয়ার গুনাহ থেকে মুক্তির ও নতুন জীবনের সূচনা করার সুযোগ মিলে।
সুতরাং আসুন আমরা এই মহান রাত্তির ইবাদত দুয়ার তওবা ও কোরআন তেলাওয়াতে কাটায়
আল্লাহতালা যেন আমাদের সবাইকে শবে কদরের রহমত ও মাগফিরাত দান করেন।
এ আর্টিকেলে উপরে শবে কদরের ফজিলত ও তাৎপর্য এবং শবে কদরের আমল ও দোয়া সম্পর্কে
আলোচনা করেছে। সামনে রমজান মাসে আমরাও সকল মুসলমানেরা যেন সবে কদর রাতগুলো
সঠিকভাবে পালন করতে পারি এবং আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারে। আপনার যদি উপকার হয়
তাহলে মতামতে কমেন্ট বক্সে জানান। আর এরকম নতুন নতুন তথ্য পেতে ওয়েবসাইটটি ভিজিট
করুন ধন্যবাদ।

সামিজা৪২ কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url