কেশরদাম গাছের পাতা খাওয়ার ৭টি উপকারিতা ও সতর্কতা
কেশরদাম গাছের পাতা খাওয়ার ৭টি উপকারিতা গুলো জানব।অনেক মানুষ আছে এই কেশরদাম গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জানেনা।কেশরদাম গাছ হচ্ছে উভচর উদ্ভিদ যেটা পানি বা মাটিতে হয়।কেশরদাম গাছ সাধারণত গ্রামের বা পুকুরে বেশি দেখা যায়।এটা একটা ভেষজ উদ্ভিদ।
এই আর্টিকেলে জানব কেশরদাম গাছের সম্পর্কে।যা খেলে মানুষের স্বাস্থ্যের উপকার হয়। আর সেই সাথে গাছের পুষ্টিগুণ, কোথায় হয়, কোথায় গেলে গাছ বা পাতা পাওয়া যায়, স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকার এবং সতর্কতা সম্পর্কে।কেশরদাম গাছের পাতা এবং গাছের ডালপালা কতটা উপকারী মানুষের জন্য। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নিন।
পেজ সূচিপত্রঃ কেশরদাম গাছের পাতা খাওয়ার ৭টি উপকারিতা ও সতর্কতা
- কেশরদাম গাছের পাতা খাওয়ার ৭টি উপকারিতা সম্পর্কে
- কেশরদাম পাতা খাওয়ার সতর্কতা
- কেশরদাম গাছের পরিচয়
- কেশরদাম গাছের পাতার পুষ্টিগুন
- কোথায় পাওয়া যায় কেশরদাম গাছের পাতা
- কেশরদাম পাতা কতটা কার্যকর
- কেশরদাম পাতা খাওয়ার ঘরোয়া উপায়
- কেশরদাম গাছ নিয়ে গবেষণা ও সত্যতা
- FAQ: প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
- উপসংহার কেশরদাম গাছের পাতা খাওয়ার ৭টি উপকারিতা ও সতর্ক
কেশরদাম গাছের পাতা খাওয়ার ৭টি উপকারিতা সম্পর্কে
আমরা আজ আলোচনা করব জলজ ও আগাছা বা জলজ উদ্ভিদ নিয়ে। এটাই এমন একটা উদ্ভিদ যা মাটি, নদী বা পুকুরে দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষে প্রায় সকলেই ওদের সাথে পরিচিতি। যেমন খুচুরিপনা, পদ্ম, শ্যাওলা ও শাপলা দেখা যায়। এছাড়াও থাকে কলমি শাক, হেলেঞ্চা, হিঙ্গাজা এর মত পরিচিত উদ্ভিদ। তবে আমরা আজকে জানব একটি প্রাকৃতিক জলীয় উদ্ভিদ যেটার নাম হচ্ছে কেশরদাম গাছ। তবে এটি শহরের খুব একটা দেখা যায় না তবে গ্রামে প্রচুর হয়।প্রাকৃতিক যে উদ্ভিদের মধ্যে কেশরদাম একটি পরিচিত ও উপকারী গাছ।
আরো পড়ুনঃ
শরীরের জন্য পানির ১০টি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা
যুগ যুগ ধরে গ্রামীণ মানুষকে গাছের পাতা,ফল, ফুল,ছাল ও শিকড় বিভিন্ন রোগে চিকিৎসায় ব্যবহার করে আসছে। বৈজ্ঞানিকভাবে এ গাছের নাম Ficus Racemose। এবং আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী চিকিৎসায় এটি একটি শক্তিশালী ঔষধি উদ্ভিদ হিসাবে মান্য। অনেকে জানেন না, কেশরদাম গাছের পাতায় সবচেয়ে বেশি উপকারী অংশ। কারণ এতে রয়েছে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ যা শরীরের ভেতর ও বাহিরে স্বাস্থ্য রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কেশরদাম গাছের পাতা খেলে স্বাস্থ্যের যে উপকার হবে তা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করব। আসুন তাহলে জেনে নিন কেশরদাম গাছের পাতা খাওয়ার ৭টি উপকারিতা সম্পর্কে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়কঃ কেশরদাম পাতার ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে একটি প্রাকৃতিক কার্যকর ভেষজ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। পাতায় রয়েছে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণকারী এবং ইনসুলিন এর মত কাজ করা। যা শরীরের ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। যখন আমরা মিষ্টি বা অতিরক্ত কার্বোহাইড্রেট খায় তখন রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়।
- এ সময় কেশরদাম পাতা শরীরকে শর্করা শক্তিতে রূপান্তর করতে সাহায্য করে এবং অতিরক্ত চিনিকে রক্তের জমতে দেয় না। অনেক ভেষজ চিকিৎসক মনে করেন, সকালে খালি পেটে পাতার চা বা রস পান করলে প্রায় ২০-৩০ দিনের মধ্যে রক্তের শর্করা মাত্রা স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এছাড়া এটি অগ্ন্যাশয়ের B-cells সক্রিয় করে যার ইনসুলিন উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে।
- হজম শক্তি বৃদ্ধি ও গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করেঃ যাদের হজম হজম শক্তিতে সমস্যা আছে তারা এ কেশরদামের পাতা খেতে পারে। যেমন বদহজম, এসিডিটি, গ্যাস, পেটে ব্যথা এসব সমস্যা এখন খুব সাধারণ। কেশরদাম পাতায় থাকা ফাইবার এবং অ্যান্টইনফ্লামেটরি যৌগ হজম প্রক্রিয়া উন্নতি করে এবং পেটের ব্যথা কমায়। যারা নিয়মিত বদহজম, বুক জ্বালা বা পেটে ভারী ভাব অনুভব করেন তাদের জন্য এই পাতায় এক দারুন প্রাকৃতিক সমাধান।
- এটি অন্ত্র ও লিভারে জমে থাকা টক্সিন দূর করে এবং খাদ্য হজমে প্রয়োজনে এনজাইম সক্রিয় করে। কেশর দাম পাতা খাওয়ার বিশেষভাবে উপকার হচ্ছে যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, অম্বল, পেটে কৃমি এবং ইরিটেবল বাউয়ের সিনড্রোম রোগীদের জন্য। তবে কেশর দাম পাতার চা, রস বা কাঁচা পাতার সালাদ হিসাবে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
- রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ শরীরের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হলে আমরা সহজে সর্দি, কাশি,ফ্লু, ভাইরাল জ্বর এবং অন্যান্য সংকক্রনে আক্রান্ত হই। কেশরদাম পাতায় থাকা ফ্লাভোনয়েড,ফেনলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করে। এটির শরীরের ভেতরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এমন ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে।ফলে অসুস্থতার কমে এবং সর্দি কাশির মতো সমস্যা বারবার ফিরে আসে না। শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল শারীরিক অবস্থার লোকেদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপকারী।
- লিভার পরিষ্কার করে ও ফ্যাট লিভার কমায়ঃ লিভার হচ্ছে আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ গুলোর মধ্যে একটি। যেখানে খাবার থেকে পুষ্টি শোষণ হয় এবং বিষাক্ত গ্যাস বা টক্সিন বের হয়। কেশর দাম পাতা লিভার ডিটক্সিফিকেশন চমৎকার ভূমিকা রাখি। যারা অ্যালকোহল, ফাস্টফুড বা অস্বাস্থ্যকর খাবার নিয়মিত খান তাদের লিভার দ্রুত দূষিত হয়। কেশরদাম পাতা সেই ক্ষতি কমাতে সহ ভূমিকা রাখে। আর সেই সাথে কাজ করে ফ্যাট জমা কমায়, লিভারের টক্সিন বের করে, লিভারের ব্যথা কমায় এবং জন্ডিসহ লিভারের রোগ সহায়ক।
- দাঁত ও মুক্ত সমস্যা দূর করেঃ প্রাচীনকাল থেকে কেশরদাম পাতা দাঁত ও মুহুর্তের পরিচর্যা ব্যবহার হয়ে। আসছে এতে রয়েছে প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক এবং এন্টিফাঙ্গাল উপাদান যা মুখগব্বরের ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করে। যদি নিয়মিত এই পাতা চিবানো হয় বাসিদ্য পানি দিয়ে কুলকুচি করা হয় তাহলে দাঁতের ব্যথা কমে, মাড়ের প্রদাহ ও রক্তপাত বন্ধ হয়, মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় এবং দাঁত মজবুত করে। যারা পায়োরিয়া, দাঁত নড়া, মুখের দুর্গন্ধ বা সংক্রমণে ভোগেন। তারা এই পাতা নিয়মিত ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাবেন।
- ত্বকের সমস্যার কার্যকরঃ কেশরদাম পাতা ত্বকের জন্য একটি প্রাকৃতিক হিলিং থেরাপি। এতে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিইনফ্লমেটরি উপাদান রয়েছে। যা ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। পাতা পিসে পেস্ট তৈরি করে ব্রণ, ফুসকুড়ি , এলার্জি বা পুরানো ক্ষত লাগলে দ্রুত সেরে উঠে। এছাড়াও বিশেষভাবে উপকার করে যেমন ব্রণ, ইনফেকশন, ফোড়া,র্যাশ, কাটাছেঁড়া বা পুরানো ক্ষত। তবে আপনি যদি প্রতিদিন ব্যবহারের ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং বয়সের ছাপ কম।
- ওজন কমাতে সহায়কঃ কেশরদাম পাতায় রয়েছে এবং সব উপাদান যার শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে। পাতায় থাকা ফাইবার হজম ধীর করে। যার ফলে খুব দ্রুত ক্ষুধা লাগে না। আবার এটি শরীরে ফ্যাট কল ব্যাকডাউন বাড়ায় অর্থাৎ জমে থাকা চর্বির ভাঙতে সাহায্য করে।
কেশরদাম পাতা খাওয়ার সতর্কতা
কেশরদাম গাছের পাতা খাওয়ার ৭টি উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম। এখন জানবো সতর্কতা
সম্পর্কে।কেশরদাম পাতা অনেক উপকারী উদ্ভিদ। এই পাতা দিয়ে বিভিন্ন রোগের ওষুধ
তৈরি হয়। তবে অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক না। উপকারী বলে আপনি অতিরিক্ত খাবেন এমনও না।
অতিরিক্ত খেলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। তাই পাতা খাওয়ার সময় অবশ্যই আপনাকে
সতর্ক থাকতে হবে। যাতে করে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি না হয়।
কেশরদাম পাতা খাওয়ার সতর্কতা গুলো নিচে দেওয়া হল।
- অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়
- যারা গর্ব অবস্থায় থাকবে তাদের কেশরদাম পাতা খাওয়া উচিত না।
- ডায়াবেটিস রোগীরা ওষুধের সাথে খেলে রক্তের চিনির মাত্রা কমে যেতে পারে। তাই ওষুধ খেলে এই পাতা খাওয়া উচিত হবে না।
- অতিরিক্ত এলার্জি দেখা দিলে খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। এবং ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
- দীর্ঘ মিয়াদে ব্যবহারের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরী।
- কেশর দাম পাতা খেতে গিয়ে যদি সমস্যা হয় সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিবে।
কেশরদাম গাছের পরিচয়
কেশরদাম গাছের সম্পর্কে জানব। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের নদী নালা পুকুরে
সাধারণ একটা আগাছা নিয়ে। যার নাম হচ্ছে কেশর দাম। ইংরেজিতে যাকে বলা হয় water
primorse। এটি একটি জলজ ও সু পুষ্পক উদ্ভিদ। প্রধানত এটি আদ্র ও শুক্ত
পরিবেশে জন্মায়। কেশরদাম গাছ সহজে বংশবৃদ্ধির করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে
ক্রমবদ্ধমান জায়গায় ও পানির উপরে ভেসে থাকে। এর কান্ড নরম ও প্রকৃতি হয়। এটা
এত তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায় যে অল্প দিনে নদী বা পুকুর ভরে যায় গাছের ডালপালায়।
তবে এটি শহরের থেকে গ্রামে বেশি দেখা যায়।
আরো পড়ুনঃ
নিমপাতা খাওয়ার ৩টি উপকারিতা ও নিয়ম এবং অপকারিতা
কেশর দাম বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে, বাড়ির পাশে, ঝোপঝাপর, নদীর ধারের জমি এবং
বনাঞ্চলের সহজে জন্মায়। এটা মাঝারি আকার একটি রাজার পাতা ডিম্বাকৃত এবং ফল
ছোট ডুমুরের মতো। অনেক এলাকায় এটাকে বলা হয় যঙ্গ ডুমুর, দেশী ডুমুর, উদুম্বর
আয়ুর্বেদিক নাম। এই গাছটি শুধু ভেষজ নয়, ভারতীয় ধর্মগ্রন্থে উপনিষদ
আয়ুর্বেদিক এটি একটি পবিত্র বৃক্ষ হিসেবে উল্লেখ আছে।
কেশরদাম গাছের পাতার পুষ্টিগুণ
কেশর দাম পাতা খেতে তেতো হলো পুষ্টিতে ভরপুর। পাতায় পাওয়া যায় ভিটামিন
সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন, আন্টি অক্সিডেন্ট,
ফাইটো কেমিক্যাল, এন্টিব্যাকটেরিয়াল যৌগ, ট্যানিন এবং ম্যাগনেসিয়াম। এ
উপাদান গুলো চলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে রক্ত পরিষ্কার করা,
ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ এবং শরীরের প্রদাহ কমাতে ভূমিকা রাখে। কেশরদাম গাছের
পাতার যে পুষ্টিগুণগুলো রয়েছে তা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তাই আমরা
যদি নিয়ম করে প্রতিদিন খায় তাহলে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ থেকে রক্ষা করবে।
কোথায় পাওয়া যায় কেশর দাম গাছের পাতা
আপনি এখন ভাবছেন এ পাতা কোথায় পাবো। কারণ যে পাতায় এত পুষ্টিগুণ রয়েছে অবশ্যই
সেই পাতার খোঁজ রাখাও প্রয়োজন। তবে শহরের মানুষ এটাকে খুব একটা শহরের মধ্যে পাবে
না। তবে গ্রামের এটা সচরাচর পাওয়া যায়। এ গাছের পাতা সবাই চিনলো এখন পর্যন্ত
অনেক মানুষ এ গাছ সম্পর্কে জানিনা। আপনি কেশরদাম পাতা পাবেন গ্রামের রাস্তার
পাশে, মাঠও ঝোপ ঝাড়ে, নদী, বিল বা পুকুরের ধারায়, ভেষজ নাসারি এবং
আয়ুর্বেদিক দোকানে। তবে গ্রামের মানুষ এ গাছটা সহজেই পেয়ে যাবে। কারণ
গ্রামের গ্রামের জমিতে বা ঝোপঝা পড়ে জঙ্গলে আগাছার মতন হয়ে থাকে।
কেশরদাম পাতা কতটা কার্যকর
গ্রামবাংলায় কেশর দাম গাছের নাম শুনলে অনেকের ছোটবেলার কথা মনে পড়ে। কারন আগে যখন মানুষ ওষুধ কিনতে পারতো না বা এত সহজে ডাক্তার পাওয়া যেত না তখন এ গাছ ছিল ঘরের পাশের ছোট্ট প্রাকৃতিক ওষুধ। যা খেলে মানুষ দ্রুত সেরে উঠতো। কেশরদাম পাতা এতটা কার্যকর হওয়ার কারণ হলো এ পাতার ভিতরে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান আছে।
যা দেহের ভেতরের রোগের সঙ্গে লড়াই করে তেমন দেহের বাহিরে লাগালে ক্ষত, ফোলা, ব্যথা এগুলো দ্রুত কমাতে সাহায্য করে।মানুষ কেশর দাম পাতা কে কার্যকর মনে করে কারণ এটা দ্রুত রেজাল্ট দেয়। যেমন পেটের সমস্যা, জ্বর, ক্ষত, ত্বকের চুলকানি এবং কাশি ও সর্দি। এসব ক্ষেত্রে নিয়ম করে ব্যবহার করলে অনেকের উপকার পেয়েছে। কারণ যেটা কাজ করে সেটাকে মানুষ মূল্য বেশি দেয়। দাম পাতার ক্ষেত্রে সেরকম। বর্তমানে গবেষণায় দেখা গেছে এটি ওষুধের বিকল্প নয় বরং এটি সহায়ক থেরাপি।
কেশরদাম পাতা খাওয়ার ঘরোয়া উপায়
কেশরদাম পাতা বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায়। আপনি চাইলে কেশর দাম পাতা চা,
পাতা রস, শুকন গুড়া, পেস্ট, সালাদ বা ভর্তা করে খেতে পারেন। কারণ এর
খাওয়ার কোন বিকল্প নাই আপনি যেভাবে খাবেন সেভাবে উপকার পাবেন। আপনার স্বাস্থ্য
ভালো রাখতে চাইলে আপনি প্রতিদিন এ পাতাকে নিয়ম করে খেতে পারেন। আপনি কিভাবে
ঘরোয়া উপায়ে কেশর দাম পাতা খাবেন তা নিচে দেওয়া হল।
- ২-৩ টি পাতার এক কাপ পানি দিয়ে সিদ্ধ করে পান করুন।
- ৪টি পাতা ভিজিয়ে ব্লেন্ড করে থেকে খান।
- রোদে শুকিয়ে গুড়ো করে মধুর সঙ্গে মিশে খেতে পারেন।
- ব্রণ বা ক্ষত স্থানে বেটে পেস্ট করে লাগালে ফলাফল দ্রুত পাবেন।
- কাঁচা বা সেদ্ধ করে খাবারে ব্যবহার করে খান।
কেশরদাম গাছ নিয়ে গবেষণা ও সত্যতা
কেশরদাম গাছ যাকে অনেক এলাকায় গন্ধবেদী, কেশরডাম বা জ্বর পাতা বলা হয়। সাধারণত হোমিওপ্যাথিও রোগ চিকিৎসা ব্যবহৃত হল এ এর গবেষণা ভিত্তি স্বাস্থ্য উপকারিতা ও প্রমাণিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা এই পাতার উপাদান পরীক্ষা করে দেখেছে যেতে রয়েছে ফ্ল্যাভনয়েডস,অ্যালকালয়েড, পেনোনলিস কমপাউন্ড, এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রাকৃতিক প্রদাহ নাশক উপাদান। এসব উপাদান দেহের জ্বর কমায় জীবাণুন, পেট পরিষ্কার রাখা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর সাহায্যে কাজ করে।
আরো পড়ুনঃ কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
গবেষণা আরো দেখা গেছে এ গাছের পাতা ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক ধ্বংস করতে সক্ষম। যখন
শরীর ফুলে যায় ব্যথা হয় বা ইনফেকশন হয় তখন প্রদাহ তৈরি হয়। আর এসব
ব্যথা কমাতে এ পাতা দ্রুত কাজ করে। কিন্তু আধুনিক গবেষণা অনুযায়ী কেশর
দাম পাতা লিভারের ওপর ইতিবাচক কাজ করে এবং রক্ত পরিষ্কার রাখে। এটি খাদ্য বা
পানীয় আকারে গ্রহণ করলে উপকার পাওয়া যায়।
FAQ: প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্নঃকেশরদাম গাছের বৈজ্ঞানিক নাম কি?
উত্তরঃ কেশরদাম গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হল ক্রোমোলিনা ওডোরটা। বাংলাদেশ,ভারত ও
নেপালে এটি স্থায়ীভাবে পরিচিত হয় জ্বর ঝাড়, বন্য তুলসী বা চিকন
ঝড় পাতা। বাংলায় এটাকে অনেকে জ্বরপাতা বা ভেষজ চিকিৎসার আগাছা নামে চিনে।
প্রশ্নঃ কেশরদাম গাছ কোথায় বেশি জন্মে?
উত্তরঃ কেশরও দাম গাছ সাধারণত উষ্ণ ও আদ্র আবহায় বেশি জন্ম। এটি
বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মিয়ানমার এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশে বেশি দেখা যায়।
এছাড়া রাস্তার ধারে, নদী বা পুকুরে, পরিতক্ত মাঠে, পাহাড়ে এলাকা এবং জঙ্গলে
স্বাভাবিকভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
প্রশ্নঃ কেশরের দাম গাছের পাতা খেতে কিরকম স্বাদ?
উত্তরঃ কেশর দাম গাছের পাতা ছাদ সাধারণত তিক্ত ও হালকা ঝাঁঝালো ধরনের। চিবাতে
গেলে শেষে একটু কস ভাব ও ভেষজ গন্ধ পাওয়া যায় যা ওষুধি পাতার মত।
উপসংহার কেশরদাম গাছের পাতা খাওয়ার ৭টি উপকারিতা ও সতর্কতা
কেশর দাম নামটা কেমন মনে হলো আসলে এটি একটি উপকারী গাছ। অনেকে মনে
করবে এটাতো একটা আগাছা কিভাবে এতগুলা উপকার হবে। আসলে কিছু প্রাকৃতিক উপাদান
আছে যেগুলো আল্লাহ মানুষের উপকারের জন্যই তৈরি করেছে। যেগুলো সম্পর্কে আমাদের কোন
জ্ঞান নেই। গ্রাম বাংলার মানুষ এই কেশরের দাম গাছের প্রত্যেকটা অঙ্গ
পতঙ্গ কাজে লাগিয়ে অসুখের সময়। এবং গবেষণা করেও দেখা গেছে অঙ্গ পতঙ্গ
প্রত্যেকটি ওষুধের জন্য ব্যবহার করা হয়।
এ আর্টিকেলে আলোচনা করেছি কেশরদাম গাছের পাতা খাওয়ার ৭টি উপকারিতা ও সর্তকতা
সম্পর্কে। তবে এটি প্রাকৃতিক উপাদান এটা খেলে উপকারী হবে। তাই আসুন আমরা সকলে
ওষুধের উপর নির্ভরশীল না থেকে যেগুলো প্রাকৃতিক উপাদান এর সাহায্যে নিরাময় করা
যায় সেগুলো করার চেষ্টা করি। এবং সুস্থ ও সুন্দর জীবন গড়ি। কারণ স্বাস্থ্য
ভালো থাকলে মন ভালো থাকে। এর আর্টিকেলটা পড়ে আপনার যদি উপকার হয় তাহলে মতামতটি
কমেন্ট বক্সে জানান ধন্যবাদ।

সামিজা৪২ কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url