কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন-কমলার খোসা গুড়া করার উপায়
কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন এ কথাটা অনেকের কাছে কেমন মনে হবে। যে কমলা খাওয়া যায় কিন্তু কমলার খোসা দিয়ে কিভাবে ত্বকের যত্ন নেব। এরকম ভাবলে এ আর্টিকেলটি আপনার জন্য। গরম কাল শেষ হয়ে আসছে সামনে আসছে শীতকাল।
শীতকালে আমাদের ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হারিয়ে যায়। এ সময় আমাদের ত্বকের বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত। চলুন তাহলে নিজে জেনে নেয়া যাক কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন ও কমলার খোসা গুড়া করার উপায় গুলো নিচে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পেজ সূচিপত্রঃ কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন-কমলার খোসা গুড়া করার উপায়
- কমলার খোসার দিয়ে ত্বকের যত্ন
- কমলার খোসা গুড়া করার উপায়
- মুখে কতক্ষণ রাখবো কমলার খোসা
- কমলা খোসার বাটা
- কমলার খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক
- টোনার বানান কমলা খোসা দিয়ে
- ত্বকের যত্নে সিরাম তৈরি করুন কমলার খোসা দিয়ে
- কমলার খোসা দিয়ে চুলের যত্ন
- কমলার খোসার উপকারিতা ও অপকারিতা
- শেষ কথা কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন-কমলার খোসা গুড়া করার উপায়
কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন
আমরা সকলে সুন্দর ও মসৃণ ত্বক চাই। এজন্য আমরা বাজার থেকে বিভিন্ন
ধরনের প্রোডাক্ট কিনে নিয়ে আসি ত্বকে মসৃণ ও সুন্দর করতে। বর্তমানে বাজারে
এখন সব সময় কমলা লেবু পাওয়া যায়। সামনে আছে শীতকাল আরও বেশি কমলালেবু পাওয়া
যাবে। শীতকালে আমাদের ত্বক অনেক খসখসে ও শুষ্ক হয়ে যায়। এক কথায়
আমরা বলতে পারি শীতকালে আমাদের ত্বক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলে।
কমলালেবু হচ্ছে প্রাকৃতিক উপাদান। আমরা কমলালেবু খেয়ে খোসাটা ফেলে দে। মজার
ব্যাপার কি জানেন কমলার খোসা দিয়েই আপনি আপনার ত্বকের যত্ন নিতে পারবেন এবং
ত্বক সুন্দরও মসৃণ হবে। চলুন তাহলে আমরা জেনে নিন, কিভাবে কমলার খোসা
আমাদের ত্বকের যত্ন নেই।
কমলার খোসায় অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল,অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং
অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান রয়েছে। এসব উপাদান ব্রণের নিরাময়ে কাজ করে।
একটি কমলার খোসা এক কাপ পানিতে ভালোভাবে সিদ্ধ করে সেই পানিটা ত্বকের যত্নে টোনার
হিসেবে ব্যবহার করুন। এতে আপনার ত্বক ব্রণ মুক্ত থাকবে।
কমলার খোসাতে রয়েছে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এক চামচ কমলার খোসার
গুঁড়ো সঙ্গে দুই চা চামচ টকদই মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। তারপর
পেস্ট ত্বকে লাগিয়ে নিন।১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে
ধুয়ে নিন। এতে করে আমাদের তো প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল হবে। প্রতিদিন ব্যবহার করলে
ত্বক হবে কোমল ও প্রাণবন্ত।
আমাদের কমবেশি সকলের ত্বক তৈলাক্ত। এই তৈলাক্ত কাটাতে ব্যবহার করুন কমলার
খোসা। তাজা কমলার খোসার সঙ্গে মসুরের ডাল বেটে নিন। মিশ্রণটি ত্বকে ভালোভাবে
লাগিয়ে নিন।এবং শুকনো পর্যত্ন রাখুন।শুকনো হয়ে আসলে পরিষ্কার পানি দিয়ে
ধুয়ে ফেলুন। এতে করে আপনার ত্বকের তেলর ভারসাম্য বজায় রাখবে মসৃণ ও নরম হবে
ত্বক।
আরো পড়ুনঃ শীতকালে কিভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হয়
আমরা বাইরে গেলে রোদে আমাদের ত্বক পুড়ে যায়। আপনার যদি ত্বক রোদে পুড়ে
কালচে হয়ে গেলে ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।১ চা চামচ কমলার খোসা সঙ্গে
সামান্য কাঁচা হলুদ এবং ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এ মিশ্রণটি মুখে
ভালোভাবে লাগিয়ে নিন ৫- ১০ মিনিট রাখবেন তারপর গোলাপ জল দিয়ে মুখটা ধুয়ে
নিবেন।
আমরা সকলে তো মুলতান মাটির কথা জানি এটা ত্বকের যত্নে অনেক উপকারী।১ চা চামচ
কমলার খোসা গুড়া সঙ্গে ১ চা চামচ মুলতানি মাটি এবং পরিমান মত গোলাপজল দিয়ে একটি
মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি মুখে ও গলাতে ভালোভাবে লাগে নিন। তারপর শুকিয়ে গেলে
ধুয়ে ফেলুন। এটি ব্যবহার করলে আমাদের ত্বকে বা ঘাড়ের যে কালচে দাগ থাকে তা দূর
হয়ে যায়।
২ ভাগ কমলার খোসার গুঁড়ো তার সঙ্গে ১ভাগ ওটমিল গুঁড়ো মিশান তার সাথে ১ চিমটি
বেকিং সোডা মিশিয়ে সামান্য পানি দিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। ত্বকে কিছুক্ষণ
ম্যাসাজ করুন।১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন তারপর ধুয়ে ফেলুন। এতে করে আপনার ত্বকের
যে ছোট ছোট কালচে যে ভাব থাকে তা দূর হয়ে যাবে এবং উজ্জ্বল ও সতেজ হবে।
কমলার খোসা গুড়ো সঙ্গে চন্দনের গুড়ো ও গোলাপজল এবং সামান্য দুধ মিশিয়ে
একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। তারপর ফেসপ্যাকটি মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। ত্বক
ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার
ত্বকের রুক্ষতা দূর হবে এবং নরম হবে ত্বক।
কমলার খোসা সরাসরি ত্বকে লাগাবেন না। এসিডের প্রভাবে ত্বকের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই তাজা কমলার খোসা সঙ্গে সমপরিমাণ মুসুরির ডাল বেটে নিন। মিশ্রণটি নিয়মিত ত্বকে লাগান এতে ত্বক মসৃণ হবে ও মুখের দাগও দূর হবে।
আপনার ত্বকের জন্য কমলার রস কে ক্লিনজার হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। কমলা রসের সঙ্গে সমপরিমাণ গোলাপজল আর মধু মিশিয়ে নিন। এবং সেটা তুলতে ভিজিয়ে চেপে চেপে আপনার মুখে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। পরিষ্কার হয়ে গেল আপনার ত্বক।
কমলার খোসা গুড়া করার উপায়
আমরা উপরে কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন সম্পর্কের জানলাম। এখন আমরা জানবো কমলার
খোসা গুড়ো করার উপায়। প্রথমে কমলার খোসা গুলো এক জায়গায় জড়ো করুন। তারপর একটা
পাত্রে নিয়ে ভালোভাবে পানিতে পরিষ্কার করে নিন। এমন ভাবে পরিষ্কার করবেন
যাতে ময়লা না থাকে। পরিষ্কার করা হয়ে গেলে খোসা গুলোকে রৌদ্রে শুকাতে দিন।
জায়গাটা যেন পরিষ্কার থাকে। খোসা গেল যেন ভালোভাবে শুকিয়ে যায় সেই পর্যন্ত
অপেক্ষা করুন।
শুকনো হয়ে গেলে সেগুলোকে একটি ব্লেন্ডারে নিয়ে মিহি গুড়ো করে নিন। গুঁড়ো করা
হয়ে গেলে ঝাঁকুনি দিয়ে ছেঁকে নিন। তারপরে একটি পরিষ্কার পাত্রে রেখে দিন। আপনি
কমলার খোসা গুড়ো দিয়ে ত্বকের ও চুলের যত্ন নিতে পারবেন।এটা আপনি অনেক দিন
সারাক্ষণ করে রাখতে পারবেন।
মুখে কতক্ষন রাখবো কমলার খোসা
কমলার খোসা মুখে কতক্ষণ রাখবেন তা নির্ভর করছে আপনি কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন। আপনি যদি টক পরিষ্কার করার জন্য রাখেন তাহলে৫-১০ মিনিট এর বেশি রাখা যাবে না। আর ফেসপ্যাক এর জন্য ব্যবহার করলে ১৫-২০ মিনিট। এর বেশি ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি হবে। কমলালেবুর খোসার রসে অ্যাসিড থাকে তাই বেশিক্ষণ মুখে থাকলে ত্বকের ক্ষতি গ্রস্ত হতে পারে।
কমলার খোসা বাটা
আমরা সকলে কমলালেবু খেয়ে কমলার খোসাটা ফেলে দিই। কমলালেবুর খোসা না ফেলে সেই
খোসা দিয়েই আপনি আপনার ত্বকের রূপচর্চা করতে পারবেন। এখন তাহলে আমরা জানবো
কিভাবে কমলার খোসা বাটা আমাদের ত্বকের কি কাজ করে। এটির প্রাকৃতিক স্ক্রাব হিসাবে
কাজ করে।
আরো পড়ুনঃ কমলালেবু প্রক্রিয়াজাতকরণ দাম ও আকার সম্পর্কে
কমলার খোসা কে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবেন। সেই সাথে সিল পাটাকেও
পরিষ্কার করে নিবেন। তারপরে সেটাকে সিল পাঠাতে রেখে বেটে নিবেন। একটু সময় লাগবে
কিন্তু আস্তে আস্তে করলে হয়ে যাবে। আপনারা চাইলে ব্লেন্ডারে সাহায্য করতে
পারবেন। তারপর কমলার খোসার বাটার সাথে১ চামচ দুধ, মধু মিশন।
ত্বকের যত্নে কমলার খোসা বাটা অনেক উপকারী। এটি ত্বকে দিলে ত্বকের মৃত কোষ,
ব্রণের সমস্যা দূর করবে এবং ত্বককে উজ্জ্বল ও সতেজ করবে।
কমলার খোসা দিয়ে ফেসপ্যাক
ত্বকের যত্নে আপনি কমলার খোসা দিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করতে পারবেন। কমলার তৈরির
ফেসপ্যাক দিয়ে ত্বকের যত্ন নিলে ত্বক উজ্জ্বল, দাগহীন হবে। চলুন তাহলে নিচে জেনে
নিই কিভাবে ফেসপ্যাক তৈরি করতে হয় কমলার খোসা দিয়ে।
- প্রথমে একটা পরিষ্কার পাত্রে কমলার খোসার গুড়া বা বাটা নিন।
- তারপর এতে মুলতান মাটি মধু বা দুধ মেশান। (আপনার পছন্দ অনুযায়ী উপকরণ দিতে পারেন) আপনি চাইলে সাথে দই যোগ করতে পারেন।
- আপনি চাইলে এতে টক দই মিশাতে পারেন
- সবগুলোকে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন।
- এই প্যাকটি মুখে ও গলায় লাগে ২০-২৫ মিনিট রাখুন।
- আপনি গোসলের আগে গলায় ও পায়ে ব্যবহার করতে পারেন।
- কমলার খোসা গুঁড়ো ও বেসন দিয়েও ফেসপ্যাক তৈরি করতে পারেন।
- শুকিয়ে গেলে হালকা গরম জল বা গোলাপজল বা পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
- প্রতিদিন আপনি দিনে একবার করে ফেশপ্যাকটা আপনার ত্বকে লাগান।
টোনার বানান কমলার খোসা দিয়ে
কমলার খোসা দিয়ে টোনার তৈরি করা খুবই সহজ এবং প্রাকৃতিক উপায় ত্বকের যত্ন
নেওয়ার একটি কার্যকরী। ভিটামিন সি এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট কমলার খোসায় আছে যা
আমাদের ত্বকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। এখন আমরা নিচে জানবো টোনার বানানো উপায়
কমলার খোসা দিয়ে।
- প্রথমে কয়েকটি কমলালেবুর খোসা নিন এবং ভিতরের সাদা অংশটা ফেলে দিন।
- তারপর ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন যাতে করে ময়লা না থাকে।
- তারপরখোসা গুলোকে ছোট ছোট বা টুকরো করে নিন।
- একটি পাত্রে খোসাগুলো নিয়ে তাতে পরিমাণ মতো পানি যোগ করুন।
- পানি ও খোসা একসাথে ফুটিয়ে নিন।যতক্ষণ না পানি কিছুটা গাঢ় হয়ে আসে।
- চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন।
- ঠান্ডা হয়ে গেলে একটা পাত্রে ছেকে নিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে মিশ্রণ দিতে ৩-৪ চামচ গোলাপজল মিশিয়ে নিন।
- তারপর এটিকে একটি স্প্রে বোতলে ভরে নিন
- এই টোনার টি প্রতিদিন মুখে ধোয়ার পরে ব্যবহার করুন।
ত্বকের যত্নে সিরাম তৈরি করুন কমলার খোসা দিয়ে
আপনি কি ত্বকে ঝকঝকে করতে চান। প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে চান।
তাহলে কমলার খোসা ব্যবহার করে নিজেই ভিটামিন সি সিরাম তৈরি করতে পারবেন
বাড়িতে। আসুন তাহলে আমরা এখন কমলার খোসার দিয়ে ত্বকের যত্নের একটি সিরাম
তৈরি করি।
- প্রথমে কমলার খোজা ভালোভাবে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিন।
- সুকনো খোসা ব্লেন্ডারে গুঁড়ো করে নিন।
- একটা পাত্রে কমলার খোঁচা গুড়ো নীল এবং তাতে অ্যালোভেরা জেল ও গোলাপজল মিশন।
- আপনি যদি চান তাহলে মধু যোগ করে পেস্ট করতে পারেন।
- তৈরি করা পেস্টটা ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন।২০-২৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
- এই সিরাম ব্যবহার কারণে কমলার খোসার যে ভিটামিন সি আছে তা আপনার ত্বকে উজ্জ্বল করবে। কমলার খোসায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা ত্বককে ফ্রি র্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকে ময়েশ্চারাইজার করে।
কমলার খোসা দিয়ে চুলের যত্ন
আমরা এতক্ষণ কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন সম্পর্কে জানলাম। মজার বিষয় কি জানেন
ত্বকের সাথে সাথে চুলের ও যত্ন নেয়া যায় কমলার খোসা দিয়ে। আশ্চর্য মনে হচ্ছে
না, জি তাই। চলুন তাহলে আমরা জেনে নিন কিভাবে চুলের যত্ন নেয়া যাবে কমলার খোসা
দিয়ে।
- উপরের নিশ্চয়ই জেনেছেন কিভাবে কমলার খোসা গুড়ো করে নিতে হয়। তাই এখানে আর গুড়ো করার নিয়ম কথা বললাম না।
- কমলার খোসা গুঁড়ো সাথে দই এবং নারকেল তেল মিশেয়ে একটি প্যাক তৈরি করে চুলে লাগান।২৫- ৩৫ মিনিট রাখুন তারপর ধুয়ে ফেলুন। এতে করে আপনার চুলের খুশকি দূর হবে।
- কমলার খোসা সিদ্ধ করে সেটাকে ভালোভাবে পিসে নিন। এই মিশ্রণটা সরাসরি চুলে ব্যবহার করুন।২০-৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। কমলার খোসাতে থাকা ভিটামিন সি এবং অন্য পুষ্টি উপাদান নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
- আপনি চাইলে কমলার রস ও সরাসরি চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এটি সরাসরি ব্যবহার করার পরে কিছুক্ষণ পরে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার চুল ময়েশ্চারাইজার এবংশুষ্কতা দূর করে এবং মাথার ত্বক পরিষ্কার করে।
কমলার খোসার উপকারিতা ও অপকারিতা
আমরা এতক্ষণ ধরে কমলার খোসার দিয়ে ত্বকের যত্ন বা কমলার খোসা গুড়া করার উপায় গুলো নিয়ে আলোচনা করলাম। এবং কমলার খোসা দিয়ে কিভাবে ত্বকের যত্ন নেব এসব নিয়ে এতক্ষণ ধরে আলোচনা করেছি। আমরা সকলে জানি সব কিছুর একটা ভালো দিক বা খারাপ দিক আছে। চলুন তাহলে আমরা এখন কমলার খোসার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানব।
আরো পড়ুনঃ কমলালেবু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কমলার খোসার উপকারিতাঃ কমলার খোসা বিভিন্ন ভাবে আমাদের শরীরের
জন্য উপকারে আসতে পারে। যেমন ত্বক পরিষ্কার করে,রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ানো
এবং হজমে সাহায্য করে। কমলার খোসায় ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং
অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার।
যেমন
- কমলার খোসায় থাকা এন্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- যাদের শ্বাস নেয়ার সমস্যা আছে এটি অনেক উপকারী।
- কমলার খোসা দিয়ে তৈরি চা খেলে হ্যাংওভার কমাতে সাহায্য করে।
- যাদের দাঁত হলুদ হয়ে গেছে কমলার খোসা ব্যবহার করলে হলদে ভাব দূর হবে।
- কমলার খোসা মাটির উর্বরতা বাড়াতে কাজ করে।
- এটি প্রাকৃতিক এয়ার ফ্রেশনার হিসাব ও কাজ করে
- আপনার রান্নাঘর দুর্গন্ধ হয়ে আছে সেটা দূর করতে আপনি কমলার খোসাও ব্যবহার করতে পারেন।
কমলার খোসার অপকারিতাঃ কমলার খোসার অপকারিতা বলতে সেরকম কিছু জানা যায়নি। তবে অতিরক্ত কোন কিছু ভালো না।আগে বলে রাখছি কমলার খোসা ব্যবহার করলে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যাদের ত্বকে সংবেদনশীল তারা কমলার খোসা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। চলুন এখন নিচে জেনে নিই কমলা খোসার অপকারিতা গুলো সম্পর্কে।
- যেকোনো জিনিসের অতিরক্ত খাওয়া বা ব্যবহার করা উচিত নয়। তেমনি অতিরক্ত পরিমাণে কমলার রস বা খোসা পেটে গেলে পেট খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আপনি যতটুকু সহ্য করতে পারবেন ততটুকুন খাবে।
- যাদের ত্বকে এলার্জি আছে। কমলার খোসা ত্বকে ব্যবহার করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিবেন। কারণ যাদের ত্বক সংবেদনশীল তাদের জন্য কমলার খোসা এলার্জির কারণ হতে পারে।
- অতিরক্ত কমলা খেলে দাঁত টক হয়ে যায় এবং পরে অন্য খাবার খাওয়া যায় না।
- বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে কমলার খোসা কিছু কীটনাশক বা অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হতে পারে যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এজন্য বাজার থেকে নিয়ে আসার পরে কমলাগুলোকে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেবেন যাতে করে কোন কীটনাশক বা রাসায়নিক পদার্থ না থাকে।
শেষ কথা কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের যত্ন- কমলার খোসা গুড়া করার উপায়
কমলার খোসা একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এতে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা আমাদের
ত্বক ও চুলের জন্য অনেক উপকার। আমরা উপরে এতক্ষণ ধরে কমলার খোসা দিয়ে ত্বকের
যত্ন কমলা খোসা গুঁড়ো করার উপায় এবং চুলের কিভাবে যত্ন নিতে হবে আলোচনা
করেছি। এই আর্টিকেলের মধ্যে জানানোর চেষ্টা করেছি আমাদের দৈনিন্দন কাজে
কমলার খোসা কি কি উপকারে আসতে পারে।
আর্টিকেল টি পড়ে আশা করি বুঝতে পেরেছেন। এটা পড়ে যদি আপনার উপকৃত হয়
তাহলে আপনার মতামতটি কমেন্ট বক্সে এসে জানান এবং আপনার বন্ধুবান্ধব
আত্মীয়-স্বজনের সাথে শেয়ার করুন ধন্যবাদ।
সামিজা৪২ কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url